আওয়ামী ভীতি
![]() |
প্রতীকী ছবি |
এনসিপি(পি) সহ আগে-পিছে, ছোট-বড় যতো
রাজনৈতিক দল আছে সবার একটাই আতঙ্ক; "আল্লাহ, এই বুঝি আওয়ামীলীগ আইসা পড়লো!"
সেজন্য কেউ চায় তাড়াতাড়ি নির্বাচন, কেউ ভাবে জীবনে তো ক্ষমতার স্বাদ পাবো না, যেমন
আছে তেমনই কিছুদিন মাতব্বরি করে নেই। তারা চায় দেরিতে নির্বাচন।
এরমধ্যে এনসিপি ও সরকারের কয়েকজন ‘উপদেশদাতার’ মধ্যে একটু বেশি ভয়। একেবারে জলাতংকের মতো। তারা ভাবে; "হে আল্লাহ, যে পাপ করেছি, আওয়ামীলীগ জেগে উঠলে ঠ্যাং-এর নলা, পিঠের চামড়া, ঘাড়ের রগ কিছুই আস্ত থাকবে না। তারা চায়, আওয়ামীলীগ যেনো আর রাস্তা দিয়ে হাঁটতে না পারে।”
আরে ভাই, আওওামীলীগ তো কোনো বস্তু না যে ‘৩২ নম্বরের’ মতো আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া যাবে? আওয়ামীলীগ যুদ্ধাপরাধী দলও না যে ব্যান করলেই চুপসে যাবে। আওয়ামীলীগ এই দেশের স্বাধীনতার বীজ বপন থেকে শুরু করে পরিচর্যা ও চূড়ান্ত রূপদানকারী দল। যে দলের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে মূল কান্ডারীর আসনে অভিসিক্ত হয়েছিলন এ দেশের প্রতিষ্টাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যাঁর জন্যে মুক্তিযুদ্ধের সময় নয়মাস রোজা রেখেছিলেন বাংলার মাতৃকূলের অনেকে। কেউ নয়মাস ভাতের পরিবর্তে অন্যকিছু খেয়ে জীবনধারণ করেছেন, কেউ নয়মাস জুতা পায়ে না দিয়ে কাটিয়েছেন।
এমন একটি দলকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা যারা করেন তারা “ছেঁড়া কাঁথা মুরী দিয়ে লাখ টাকার (এখন বিলিয়ন পড়তে পারেন) স্বপ্ন দেখেন”। যদি ভেবে থাকেন, ভারতের কংগ্রেস দুর্বল হয়ে গেছে, সেরূপ আওয়ামীলীগও দুর্বল হয়ে যাবে। তাদের ধারণা ভুল। কংগ্রেস আর আওয়ামীলীগ এক না। কংগ্রেস মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেনি। কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা কেউ জেল-জুলুমের শিকার হননি।
ভারত স্বাধীন হয়েছিলো নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে। কংগ্রেস দুর্বল হয়েছে জনপ্রিয়তা হারিয়ে। নেতৃত্বের অভাবে।
আওয়ামীলীগ এখনো স্বাধীনতা পরবর্তী যতো সরকার গেছে তাদের মধ্যে অন্যতম। আওয়ামীলীগ গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের দল। এখনো যার ৩২-৩৫ শতাংশ ভোটার আছে। তাদের কি দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবেন?
যারা ক্ষমতা ও এর আশেপাশে আছে তারা আবার একাত্তর মানে না। তারা ‘চব্বিশের স্বাধীনতা’র কথা বলে। একটা স্বাধীন দেশ, সেটা নাকি আবার নতুন করে স্বাধীন করেছে তারা।
তারা গনহত্যার কথা বলে। গনহত্যার সংজ্ঞা
কি তারা জানে? এর সাথে আবার জামাতের নেতারাও সুর মেলায়, বাঃ! সত্যি সত্যিই তারা একাত্তরকে
ছাইচাপা দিতে চায়। গ্রামাঞ্চলে একটা কথা প্রচলিত আছে, “ঝাঁঝর বলে খইচালাকে তোর পাছায়
বড় ছেঁদা”!
আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তা কমে গেলেও বা
কেউ আওয়ামীলীগের বিরোধিতা করলেও বাংলাদেশকে যারা ভালোবাসে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে
যারা বিশ্বাস করে- একাত্তরের প্রশ্নে তারা একবিন্দুও ছাড়া দেবে না।
রাজনৈতিক কারণে একে অপরের সাথে ঠোকাঠুকি করলেও এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, বিএনপিও একজন মুক্তিযোদ্ধার গঠিত দল। যে সে মুক্তিযোদ্ধা না। জীবিত সর্বোচ্চ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। যার বেতার ঘোষণায় এদেশের মানুষ উজ্জীবিত হয়েছিলো। রাজনৈতিক কারণে এ দলের নেতারা অনেক কথা প্রকাশ্যে না বললেও এটা বিশ্বাস করি, এ দলের অধিকাংশ নেতার অবস্থন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে।
অতএব, যতোই চেষ্টা করেন, মানুষের অন্তরে লালিত সুপ্ত সত্য দমিয়ে রাখা কঠিন। সেজন্যেই মাঝে মাঝে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে যারা সুযোগ সন্ধনী কিংবা নিরপদে থাকতে দল বদল করেছে তারা বিএনপির মঞ্চে উঠেও আনমনে “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে ফেলে।
কথায়ই আছে ‘আল্লাহ মাইর, দুনিয়ার বাইর’। যারা অসৎ নীতি নিয়ে চলবে, প্রতারণা করবে, পঞ্চাশ বছর পরে হলেও তার প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করতে হবে, যার উদাহরণ আমাদের নিকট অতীতে অনেকেই প্রত্যক্ষ করেছন। তাছাড়া আজীবন তার গ্লানি বয়ে বেড়াতে হবে। আজীবন মনে অশান্তি নিয়ে জীবনযাপন করতে হবে। অতএব, ‘টাইম থাকতে পিওর হন’।
আল্লাহ আমাদের সত্য ও সঠিক
বোঝার প্রজ্ঞা দান করুন। আমীন।।