টিউলিপ আতংক!

 
টিউলিপ রিজয়ানা সিদ্দিক

টিউলিপ আতংক নতুন নয়। বহু আগের ঘটনা। নেদারল্যান্ডের একটি ফুলের নাম টিউলিপ। তাদের একটি কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানের নামও টিউলিপ নামে। সেই কোম্পানি থেকে ১০ হাজার কম্পিউটার কেনার চুক্তি ক্টিছিলো আগের সরকার। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর কে যেন তাঁকে বোঝায় যে, শেখ রেহেনার মেয়ের নাম টিউলিপ। এই নামের কম্পিউটার কেনা যাবে না। নেদারল্যান্ড থেকে কম্পিউটার ক্রয়ের আদেশটি বাতিল করে দেন তদানিন্তন প্রধানম্নত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ফলে নেদারল্যান্ডের সেই কোম্পানি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা করে। সে মামলা পরিচালনা করতে আইনজীবীর পেছনে অনেক খরচ হয়। উপরন্তু রায় বাংলাদেশের বিপক্ষে যাওয়ায় শাস্তি স্বরুপ প্রায় ৬০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয় বাংলাদেশকে।


বর্তমান আন্তর্বর্তী সরকারেও টিউলিপ আতংক!

'স্যারের' গদিতে বসতে না পারার যাতনা থেকে কিংবা সজ্ঞ্যানে বা ভুলে যেভাবেই হোক বিশিষ্ট আইনজ্ঞ সাহেব বিরাট এক লঙ্কাকান্ড করে বসেছেন টিউলিপ সিদ্দিকির নামে মামলা ঠুকে।

পলিটিক্যাল থ্রিলার মুভি ‘সরকার’ এর সেই আধ্যাত্মিক গুরুর থিওরি এই মামলায় ফলো করা হয়েছে। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শকে হ’ত্যা করার চেষ্টাটাই এই গংয়ের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

নিঃসন্দেহে এই মামলা ব্রিটেনের পলেটিক্যাল রাইজিং স্টার টিউলিপের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে ফেলেছে। কিন্তু ১৪ এপ্রিল ‘দ্যা গার্ডিয়ান’এ টিউলিপ এবং তার আইনজীবীর বক্তব্য টিউলিপের রিভেঞ্জস্টেপের ইঙ্গিত দিচ্ছে। একজন একুইজড হয়ে গার্ডিয়ানকে দেওয়া টিউলিপের বক্তব্যের সারাংশ হচ্ছে, 'দুদুক মামলার নথির বিস্তারিত না জানিয়ে কালক্ষেপণ করছে এবং মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত’। আইনানুগভাবে মামলাটি মোকাবেলার ইঙ্গিত এসেছে টিউলিপের দিক থেকে।

এদিকে প্রথম দিকে বাবরি চুলওয়ালা এই বিষয়ে ইন্টারেস্ট দেখালেও এখন পিছিয়ে গেছে। জামায়াতের থিংকট্যাংকারদের কয়েকজন, বিশিষ্ট কুবুদ্ধিদাতা বুইডা, কয়েকজন সাবেক আমলা এই মামলা নিয়ে খাটছে। আইনজ্ঞ সাহেবের অবস্থান “ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাচি”। শোনা কথা, হাসনাত আর সার্জিস এই বিষয় নিয়েই নাকি দুদুকে গিয়ে কোঅর্ডিনেট করছে। যদিও বিশ্বাস হয় না, তারা এটা সাহস করবে। আবার হতেও পারে। এরা উল্টা পথের সারথী।

আরেকটা মজার খবর হচ্ছে, বিএনপিরও এই মামলা নিয়ে ভয় আছে। তাদের কয়েকজনের কাছে প্রস্তাব গিয়েছিল সার্জিসের শশুরের মাধ্যমে। কোনভাবেই এর এভিডেন্স মিলছে না।

টিউলিপ যদি এই মামলা মোকাবেলা করতে দেশে আসে, এয়ারপোর্ট থেকে আদালত পর্যন্ত নিরাপত্তা বলয় তৈরী করতে বাধ্য হবে ইউনুস গং। ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে সেদেশের সলিসিটর সাপোর্ট তো আছেই। সেই সাথে ‘ল’ মেকার হিসেবে ব্রিটিশ গভর্ণমেন্টের সাপোর্ট। দৃশ্যপট কল্পনা করে এভেন্জার থ্রিল পাচ্ছি। রায় হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মামলার পিয়ন থেকে শুরু করে আইজীবী, বিচারক, আমলা প্রত্যেকেই সাক্ষাৎ আগ্নিকুন্ডের ছ্যাঁকা পশ্চাতে হজম করতে হবে।

এই এক মামলার উপর পশ্চিমা কুটনৈতিক সম্পর্ক, কমনয়েলথ মেম্বারশীপ, ফাইভ আইস রিসোর্স ইনফরমেশন প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দৌদুল্যমান। সবচেয়ে বড় ফ্যাক্ট হচ্ছে, বাংলদেশ এবং বৃটেনের রাজনীতিতে টিউলিপের পুনরুত্থান।

বঙ্গবন্ধুর এক নাতনীকে ট্র্যাপ করতে ইউনুস গংয়ের হুঁশ হারা হারা অবস্থা; বঙ্গবন্ধুর কন্যার কথা নাই বা বললাম…..

 

মূল লেখাঃ Antique Rahman 

(সযোজিত ও সম্পাদিত)

 

 

 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url