অকাল প্রয়াত আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েলের ৬ বছর আগে করা ভবিষ্যৎ বাণী আজ অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাচ্ছে

 
আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল (প্রয়াত)

“আজ একটা ভবিষ্যদ্বানী করছি, আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় এসেছিল মাদ্রাসার ছাত্রদের ওপর ভর করে; বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী একই চেষ্টা চালাবে নারীদের ব্যবহার করে।

 

রোকেয়া হলের প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে যে অযৌক্তিক আন্দোলন চলছে, তার মূল কারণ বিনা বাধায় ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রম চালানো এবং পরবর্তি প্রভোস্ট যেন তাদের অপকর্ম সম্পর্কে নীরব থাকে।

 

জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গ সংগঠন ছাত্রী সংস্থা কতটা ভয়ংকর তা বোধহয় এখনো আমরা বোঝার চেষ্টা করিনি। ছাত্রী সংস্থার অন্যতম ঘাঁটি হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। রোকেয়া হলে আমরা যে বোরখাওয়ালীদের দেখছি তাদেরকে ইসলাম প্রেমী মনে করার কোনো কারণ নেই। বিসমিল্লাহ বলে যেমন মদ জায়েজ হয় না, তেমনি বোরখা পরে আন্দোলন করলে তাকে ইসলামমুখী বলা যায় না। ইসলামের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে গুনাহর ভাগিদার হওয়ার আশঙ্কায় কোনো কর্মসূচিতেই মেয়েদের আসার কথা নয়। এরা ইসলামের লেবাস পরেছে শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।

 

মতাদর্শ ভিত্তিক যেকোনো কার্যক্রম শক্তিশালী হয়ে থাকে। আর সেই মতাদর্শ যদি বিকৃত ধর্মীয় মতাদর্শ হয় তখন তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়।

জামায়াতে ইসলামীতে জীবন দিতে প্রস্তুত থাকার মানসিকতা তৈরি করা হয়। জামায়াতের নারী শাখাকে বাংলা ভাষায় বলা যায়, দেহব্যবসা কেন্দ্রিক সংগঠন। তাদের মতবাদ অনুসারে ক্ষমতা দখল হচ্ছে প্রকৃত ইবাদত। রাজনীতির জন্য প্রতিপক্ষের কুৎসা রটনা করলে নফল নামাজের সওয়াব পাওয়া যায় বলে শিক্ষা দেয়া হয়।

 

লক্ষ্য অর্জনে জামায়াত শিবিরের মনোরঞ্জন করাকে নারী সদস্যরা ইবাদতের মাধ্যম হিসেবে গণ্য করে। যেহেতু জেনাকে আল্লাহ স্বয়ং শাস্তিযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। তাই মওদুদী এই শাস্তিকে জুলুম বলে মন্তব্য করে মুতআ বিবাহ ও দাসী ভোগের থিওরি দিয়েছে। জামাত শিবিরের নারী সদস্যদের দাসী মর্যাদা দেয়া হয় পতিতাবৃত্তি হালাল করতে। এছাড়া জেনা করার জন্য দুই চার ঘণ্টা বা এক রাতের জন্য কবুল পড়ে বিয়ে করে ও কাজ শেষে তালাক দেয়া হয়। মধ্যপ্রাচ্যে ও আইএস-এ এই প্রথাই রয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে নারীরা জেনেশুনেই যৌন জেহাদে যোগ দেয়। কোনো নারী যখন এ জাতীয় চিন্তাধারায় পরিচালিত হয় তখন কতটা ভয়ংকর হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

জামাতের মহিলা শাখা পরিকল্পনা মাফিক কাজ করে। যেমন: জামাতি মহিলাদের একটি গ্রুপের কাজ হচ্ছে, বিভিন্ন স্কুলে অভিভাবক সেজে দলীয় প্রচার ও সরকার বিরোধী জনমত তৈরি করা। কোনো ছাত্রী যদি জামাতের এমন ভয়ংকর আদর্শ ধারণ করে, তখন তা জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু হয়।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজ সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রী সংস্থা অত্যন্ত সক্রিয়। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্র সংগঠনে অনুপ্রবেশ করেও তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে। কোটা আন্দোলন থেকে সর্বশেষ ডাকসু পর্যন্ত সবই ছিল নারী হল কেন্দ্রিক এবং রাশেদ নুরাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডও মেয়েদের হল কেন্দ্রিক। বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে তা একটি ঝড়ের পূর্বাভাস।

 

পরিশেষে বলতে চাই, জামাত শিবিরে জড়িতদের বেশিরভাগের কুল পরিচয় নেই, নেই কোনো পিছুটান। সৌজন্যকে তারা দুর্বলতা হিসেবে গণ্য করে। সরকার আলোচনার উদ্যোগ নিবে, সমঝোতার চেষ্টা করবে - এসবের অর্থ হচ্ছে লাই দিয়ে মাথায় তোলা। ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধানের জন্য ছাত্রলীগ ও পুলিশই যথেষ্ট। অন্য কোনো ভাষা তারা বুঝে না, বুঝবে না।“

 

Abdullah Harun Jewel

14 March 2019

(গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ মুহূর্তে তিনি হার্ট ফেলিউরে মৃত্যুবরণ করেন)


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url