বাংলাদেশ কোনদিন আফগানিস্তান বা পাকিস্তান হবেনা
সাথিরা জাকির জেসি |
বাংলাদেশ
যে কোনদিন আফগানিস্তান ও পাকিস্তান হবেনা এটা হচ্ছে তার নমুনা মাত্র। ছবিতে যাকে
দেখছেন তার বাড়ি বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলায়। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট
দলের ডানহাতি অফব্রেক বোলার ও ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ও আয়ারল্যান্ডের
বিরুদ্ধে।
খেলোয়াড়
হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে
নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশের নামটা বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার
দায়িত্ব পেয়েছেন এইবার। ১৯ জুলাই অনুষ্ঠিত শ্রীলঙ্কার নারী এশিয়া কাপে
বাংলাদেশের প্রথম নারী আম্পায়ার হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন সাথিরা জাকির
জেসি।
যে
দেশে মেয়েরা পঞ্চম শ্রেণীর বেশী পড়তে পারবেনা বলে আন্দোলন হয়েছে, সেই দেশের
নারীরা এখন ব্যাট উঁচিয়ে শতক হাকাচ্ছেন। যে দেশে নারীদের কর্ম করতে ঘরে ও বাইরে
সব জায়গায় ভয় দেখানো হয় সেই দেশের মাটিতে এখন বাংলার নারীরা ছক্কা হাঁকিয়ে বল
(উট) মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। যে দেশের মেয়েদের পোশাকে সমস্যা সেই দেশের
নারীরা এখন বাউন্ডারি হাঁকিয়েও উটদের মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
এতদিন
যারা নারীদের নারী বলে অবহেলা করতো আজ বাংলার নারীরা দেখিয়ে দিচ্ছেন খেলার মাঠ
সামলানো শুধু পুরুষের কাজ নয়, নারীরাও পারে। আজ থেকে এক যুগ আগেও যে দেশে নারীদের
ক্রিকেট খেলা কল্পনাই করা যেতোনা, এখন দেশের আনাচে কানাচে নারীদের পায়ে ফুটবল ও
হাতে বল ব্যাট উঠেছে। ঘর সামলানো ও বাচ্চা সামলানোর দেশে নারী এখন খেলার মাঠ থেকে
শুরু করে রান্নাঘর সব সামলাচ্ছে। ঘরে ঘরে নারীরা এখন উটদের ক্লিন বোল্ড করতে শুরু
করে দিয়েছে।
নারীরা
বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছে, নারীরা কারো ব্যাক্তিগত সম্পত্তি নয়। মানুষ হয়ে জন্ম
নিয়ে সেও মানুষ। পুরুষদের যদি স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার থাকে তবে মানুষ হয়ে
জন্ম নিয়ে সেই অধিকার নারীদেরও আছে। নারীদের এই অগ্রগতি তথাকথিত উটদের মুখে
চপেটাঘাত ছাড়া আর কিছুই নয়।
অভিনন্দন
জেসী।
ভবিষ্যৎ
প্রজন্মের নারীদের জন্য আলোর মশাল হয়ে জ্বলতে থাকুন।।
লুসিড ড্রিম (শুভ)