আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিকথা নিয়ে বই

 
ছবিঃ রকমারি থেকে

“আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে তাঁর স্মৃতিকথা প্রকাশ করেছেন। এটি একটি জরুরি কাজ হয়েছে। আমাদের বড় বড় আন্দোলনগুলোর তাৎক্ষনিক স্মৃতিকথা খুব একটা বেশি প্রকাশিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের নায়ক ছাত্রনেতারা সেই সময় কোন স্মৃতিকথা লিখেছেন বলে মনে পড়ে না।

তাৎক্ষনিক স্মৃতিকথা প্রকাশের সুবিধা হলো তখন সবার মনে স্মৃতিগুলো টাটকা থাকে, ভুলত্রুটি শুধরে নেয়া যায়।

 

লেখক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বইটি প্রকাশ করেছেন প্রথম আলো থেকে। প্রথম আলো থেকে কোন ঐতিহাসিক বই প্রকাশিত হলে সেটির মাঝে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি থাকবে, এটি ধরেই নেয়া যায়। বাংলাদেশের ইতিহাস দুটি, একটি যা গণমানুষ নির্মান করে, আরেকটি হচ্ছে যা প্রথম আলো নির্মান করে। এর ভুরিভুরি উদাহরন আছে। বইটি এখনও পড়ার সুযোগ হয়নি, কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় দেখলাম যে বইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সম্মেলনের যে ছবিটি প্রকাশিত হয়েছে সেখানে ঢাবি শিবিরের সভাপতি সাদিক কাইয়ুমের ছবি নেই। একই ঘটনার অনেকগুলো ছবি আছে এবং সেখান থেকে যে ছবিটিতে বেশি লোক দেখা যায় এরকম ছবিই বইয়ে দিলে ভালো হয়। কারন বই ইতিহাসের প্রামান্য দলিল হিসেবে রয়ে যায়।

 

বইয়ে ছবি না থাকলেও সাদিক কাইয়ুম এই আন্দোলনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তাদের ঘটনা থ্রিলার বইকেও হার মানাবে। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের মধ্যে থেকে শিবিরের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া, ঠিক সময়ে একের পর এক সঠিক স্টেপ নেয়া, পালিয়ে থাকা ছাত্রনেতাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া, তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া- এ বিষয়গুলো আমরা সকলেই এখন কমবেশি জানি। সালমান নামের আড়ালে থেকে এমনকি আন্দোলনকারী নেতৃত্বের থেকেও নিজেকে সফলভাবে আড়াল করে রেখে আন্দোলনের গতিধারায় গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রেখেছেন।

 

ঢাবি শিবির সভাপতি সাদিক কাইয়ুম একটি স্মৃতিকথা লিখলে খুবই ইন্টারেস্টিং হবে। তিনি সেটা ভেবে দেখতে পারেন। দলিল রাখা গুরুত্বপূর্ণ, নয়তো আজকে যেভাবে তিনি ইতিহাসের এক বই থেকে ক্রপ খেয়েছেন, ভবিষ্যতে তিনি ইতিহাস থেকেই হয়তো ক্রপ খেয়ে যাবেন।

 

আমি মনে করি ছাত্রলীগের কোন দায়িত্বশীল নেতারও উচিত সততার সাথে একটি স্মৃতিকথা লেখা। তাঁদের ভার্সনটিও ইতিহাসে থাকা দরকার।

আগামী প্রজন্ম তাহলে এই সব গণআন্দোলনের অভিজ্ঞতাকে পড়ে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করতে পারবে।

 

যে কোন গণআন্দোলনের পরপরই জড়িত সবারই উচিত স্মৃতিকথা লিখে রাখা, ভবিষ্যতে তাহলে ইতিহাস বিকৃতির সম্ভাবনা কমে যায়।“


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url