গহীন সুন্দরবনের গাছ থেকে নারী উদ্ধার অতঃপর ছেলের সাথে বাড়ি ফিরলেন
সুন্দরবনের গাছ থেকে উদ্ধার হওয়া নারী |
সাতক্ষীরার
পশ্চিম সুন্দরবনের বাদুজুলি খালের একটি গাছের ডাল থেকে এক বৃদ্ধা নারীকে উদ্ধার
করেছেন স্থানীয় কাঁকড়া শিকারী জেলেরা। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় গাবুরা
ইউনিয়নের সোরা গ্রামের আলমগীর খাঁ ও রহমান গাজী নামের দুই জেলে সুন্দরবন থেকে
ফেরার পথে ওই নারীকে দেখতে পান এবং উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধার বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। নিজের নাম শুকুরুননেছা।
স্বামীর নাম গফফার বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া তার একটি ছেলে রয়েছে, যার নাম
রফিকুল। তবে তিনি ঠিকানা বা বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাতে পারেননি। এলাকাবাসীর
ধারণা, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।
উদ্ধারকারী জেলে আলমগীর ও রহমান জানান, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে ফেরার সময়
বাদুজুলি খালের পাশে একটি গাছের ডালে বৃদ্ধাকে শুয়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে তাকে
উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানান।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম মাছুদুল আলম জানান, উদ্ধার
হওয়া নারী বর্তমানে অসুস্থ। স্থানীয়ভাবে তার দেখভালের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং তার
পরিবারের সন্ধান করার চেষ্টা চলছে।
বৃদ্ধা কীভাবে সুন্দরবনের গভীরে গেলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। স্থানীয়
প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করছে এবং তার পরিবারের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ছেলের সাথে বাড়ি ফিরলেন সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধা
শুকুরুননেছা
সুন্দরবন
থেকে উদ্ধার হওয়া ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা শুকুরুননেছা অবশেষে খুঁজে পেলেন আপন ঠিকানা।
শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বাড়ি ফিরলেন তিনি। সুন্দরবনে
গাছের ডালে শুয়ে থাকা এক বৃদ্ধা উদ্ধার হওয়ার খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি
নজরে আসে ওই বৃদ্ধার ছেলে রফিকুল ইসলামের। এরপরই যশোর জেলার মনিরামপুর থেকে
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ছুটে আসেন রফিকুল। পরে মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি।
রফিকুল
ইসলাম জানান, তাঁর মা কিছুটা মানুসিক ভারসাম্যহীন। এর আগেও কয়েকবার মাকে
হারিয়েছেন। একবার এক বছর পরে মাকে খুঁজে পেয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আমার
মায়ের একমাত্র সন্তান। আমরা একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সদস্য। আমাদের
গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদায়। আমার মামা সরকারি চাকরি করেন। বাবাও সরকারি চাকরি
করতেন। আমার মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়াতে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ফলে বাবার চাকরি
চলে যায়। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে মা আমার সাথে যশোরের মনিরামপুরে থাকতেন।
রফিকুল
ইসলাম আরো বলেন, এক মাস দশ দিন আগে আমি যশোরের মনিরামপুর থেকে গ্রামের বাড়ি খুলনার
তেরখাদায় পারিবারিক একটি কাজে যাই। আমি যাওয়ার পর থেকে মা গ্রামের বাড়ি যাওয়ার
ইচ্ছা পোষণ করে। তার একদিন পর আমার স্ত্রী খবর দেয় মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এরপরে আমি সেখানে ছুটে যাই এবং আশপাশে খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু কোথাও মাকে খুঁজে
পায়নি। এরপর বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে দিয়েও মাকে
খুঁজে পায়নি। হঠাৎ শুক্রবার গণমাধ্যমে সংবাদ দেখে মায়ের খোঁজ পেয়েছি। তবে, বড় বড়
নদী পার হয়ে কিভাবে গহীন সুন্দরবনে পৌঁছালেন, সেখানে কতদিন ছিলেন, কি খেলেন এসব
বিষয়ে মা কিছুই বলতে পারছে না।
শ্যামনগর
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, সুন্দরবন থেকে উদ্ধার
হওয়া ওই নারীকে তাঁর ছেলে রফিকুল ইসলাম বাড়িতে নিয়ে গেছে।
সূত্রঃ ঢাকা
প্রকাশ ও খুলনা গেজেট