অতিথির ক্যান গুদের কামড় চোর দাবড়ানো
প্রতীকী ছবি |
গ্রামে আগে অনেক প্রবাদ চালু ছিল। প্রবাদগুলো অশ্রাব্য হলেও কথাগুলো
খুব মূল্যবান। যেমন আমার বাড়ি থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে এক এলাকার মানুষের মুখে
শুনেছিলাম, "অতিথির ক্যান গুদের কামড় চোর দাবড়ানো"!
কথার মোজেজা হলো:
আগে গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষকে পায়ে হেঁটে দূরদূরন্তে চলাচল করতে
হতো। দূরের পদযাত্রীরা দিনে দিনে গন্তব্যে পৌঁছতে না পারলে কোন এক বাড়িতে মুসাফির
বা অতিথি হিসাবে আশ্রয় নিতো। কারণ সে সময়ে রাতে পথচলাও নিরাপদ ছিলো না। গ্রামের ভালো
অবস্থা সম্পন্ন লোকেরা প্রায় প্রতিদিন এরকম দুই-একজন অতিথিকে তার বাড়িতে খাওয়া সহ
রাত্রিযাপনের জন্য আশ্রয় দিতো। বলাবাহুল্য কিছু চোরও এর সুযোগ নিতে ভুল করতো না।
তো একবার এক বাড়িতে দুই মুসাফির আশ্রয় নিয়েছে। তাদের আসল উদ্দেশ্য
চুরি করা। রাতে যখন গৃহস্বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, মুসাফির দুইজন উঠে চুরি করা আরম্ভ
করেছে। এমন সময় গৃহকর্তা টের পেয়ে গেলে দে দৌড়। চোরদ্বয় আগে, গৃহকর্তা পিছে পিছে
দৌড়াচ্ছে। ই্তোমধ্যে প্রতিবেশীরাও জড়ো হয়ে গেছে। অবস্থা বেগতিক দেখে মুসাফির নাম্মি
চোরদ্বয় অভিনব কায়দায় নিজেরাও চোর চোর বলে চিল্লাচ্ছে আর আগে আগে দৌড়াচ্ছে।
গ্রামবাসী ঘেরাও করে ধরে ফেললে গৃহকর্তা দেখতে পায়, তার বাড়িতে আশ্রয়
নেয়া মুসাফির দুজনই চোর চোর বলে দৌড়াচ্ছে। গৃহস্থের সন্দেহ হলো। কারণ ওই দু’জন ছাড়া
তার আগে আর কেউ দৌড়ায়নি। অতঃপর ধরে উত্তম-মধ্যম আর চোরদ্বয়কে উদ্দেশ্য করে বিষয়োক্ত
বাক্য উচ্চারণ; "অতিথির ক্যা গুদের কামড় চোর দাবড়ানো"! অর্থাৎ তুমি আমার
অতিথি হয়ে আমার আগে আগে চোর চোর বলে দৌড়ানোর অর্থ কি?
প্রবাদটি মনে পড়লো এই কারণে যে, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গাজীপুরের ঘটনার
সাথে প্রবাদটির মিল আছে।
ঘোষণা দিয়ে লাগাতার আওয়ামীলীগ নেতাদের বাড়িঘর লুটপাট, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ
করছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা নামধারী সন্ত্রাসীচক্র। এলাকাবাসী ধাওয়া দিয়ে উত্তম-মধ্যম
দেয়ার পর জানা গেলো, তারা আসল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা। আওয়ামীলীগের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল
হকের বাড়ি লুটপাট হচ্ছে শুনে তারা প্রতিরোধ করতে এসেছিলো।
কেনো বাবা? তোমাদের এ দায়িত্ব কে দিয়েছে? মানুষের জান-মাল নিরাপত্তা
দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। সেজন্যে সরকারী আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থা আছে। সরকারকে
বাইপাস করে উপযাচক হয়ে এ দায়িত্ব পালন করা কি আইন বা যুক্তিসংগত?
সেজন্যেই লেখার শুরুতে বলেছি, গ্রামের পুরনো প্রবাদ অশ্রাব্য, অস্লীল
শোনালেও অনেক গুরুত্ববহ।