রম্য রচনা - What's in your mind?

চায়ের দোকানে একজন পরিচিত বয়স্ক ভদ্রলোকের পাল্লায় পড়েছিলাম। ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করার পর হঠাৎ বললেন, "নাতিটা বলছিল তুমি নাকি কম্পিউটারের পত্রিকাতে কী সব লেখালেখি কর।" আমি বললাম, "ওটা পত্রিকা না, ফেসবুক।" 


"তা সে যাতেই হোক... কী লেখ?"


"ওই যা মনে আসে, তাই লিখি।"


"সে আবার কেমন লেখা?"


"আসলে ওই পত্রিকার নিয়মই হল, যা মনে আসে তাই লিখতে হবে। ইংরেজিতে বলে, হোয়াটস ইন ইওর মাইন্ড।"


"আজকালকার ব্যাপারস্যাপার কিছু বুঝিনা বাপু। তা দেশের সমস্যা টমস্যা নিয়ে কিছু লেখ?"


"কোন সমস্যা?"


"কেন? দেশের সমস্যা চোখে পড়েনা?"


"আসলে, ছোটবেলা থেকে এত রকমের সমস্যা দেখেছি... আর সেগুলো তো প্রতিনিয়ত পালটায়। ছোটবেলায় খুব শুনতাম... এমন কি স্কুলের রচনাতেও লিখতাম সেসব নিয়ে। যেমন, জনবিস্ফোরণ, লোডশেডিং,  ব্রেন-ড্রেন কত কী সমস্যা... এইভাবে পালটাতে পালটাতে এখন তো দেশে একটাই সমস্যা... ধর্মীয় আর রাজনৈতিক সমস্যা। টিভি, ইন্টারনেট, খবরের কাগজ... যাই দেখি, সব সমস্যাই দেখি ঘুরে ফিরে ওখানেই গিয়ে মেশে।"


"তা সেটা নিয়েই লেখো কিছু?"


"আজ্ঞে না। আমি জ্যামিতির এক উপপাদ্যের জাঁতাকলে এমনই জর্জরিত যে অন্যকিছু নিয়ে ভাবার অবকাশ পাইনা।"


"সেটা আবার কোন উপপাদ্য?"


"ওই যে, ত্রিভুজের দুই বাহুর সমষ্টি তৃতীয় বাহু অপেক্ষা বৃহত্তর... এই সূত্রের চক্করে পড়ে আমার আর আমার বৌয়ের মোট সমস্যার পরিমাণ আমার দেশের সমস্যার তুলনায় অনেক বেশি। নিজেদের সমস্যা মেটাবো না দেশের সমস্যা?"


"আজকালকার ছেলেদের সাথে কথা বলাই উচিত না" এই বলে ভদ্রলোক হনহন করে হাঁটা লাগালেন।


লেখক: বিপ্লব কুমার দে


বিপ্লব কুমার দে


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url