রামদিয়ার রামের মটকা

 

এক সময় মটকা বা কটকটি বেশ চালু ছিলো। আশাকরি অনেকেই খেয়েছেন। আগে দোকানে পাওয়া গেলেও পরবর্তিতে ফেরিওয়ালার কাছে চলে যায়। ভাংগারী লোহার টুকরা বা এটা সেটার বিনিময়ে এলাকার ছেলে-মেয়েরা কিনে খেতো। কিন্তু আস্তে আস্তে তার মান কমে যাওয়ায় এবং যুগের চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী বাজার দখল তার আকর্ষণ কমতে থাকে। আজকাল আর নেই বললেই চলে।

 

অঞ্চল ভেদে একেক এলাকায় একেক সামগ্রীর জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। ছোটবেলায় আমাদের এলাকায় দেখতাম ট্রেনে একেকজন তাদের নিজস্ব তৈরি সামগ্রী ফেরি করে বিক্রী করতো। সেটা একটা ব্র্যাণ্ডে হিসেবে পরিচিত হয়ে যেতো। আমাদের রাজবাড়ি জেলার কালুখালিতে এমনি একজনকে দেখতাম তার নিজস্ব তৈরি এক প্রকার চানাচুর বিক্রি করতে। তার নাম দিয়েছিলো এন জি রায়ের সাড়ে চার ভাজা। এন জি রায় ছিলো প্রস্তুতকারকের নাম। বাজারের অন্য চানাচুর থেকে তার স্বাদে ছিলো আলাদা এবং সুস্বাদু।

 

রাজবাড়ী জেলার কালুখালি উপজেলার আরেক বিখ্যাত সামগ্রী রামদিয়ার রামের মটকা।   যারা খেয়েছেন তারা জানবেন অন্যান্য মটকা থেকে তার স্বাদ একটু ভিন্ন। এখনও ছোটবড় অনেকের কাছে এর চাহিদা আছে।

 

এই মটকা বা কটকটির খাদ্যমান যাইই হোক, স্থানীয়ভাবে এর চাহিদা থাকায় এটা এখন রাজবাড়ী জেলার একটি ঐতিহ্যের অংশ। তিল, মশলাপাতি দিয়ে একটু পরিষ্কার ও ভিন্নভাবে প্রস্তুতকৃত এই মটকা গ্রামে গেলেই খোঁজ করি। এর মূল কারিগররা এখন আছে কিনা জানিনা। কারণ, এলাকায় দুয়েক জায়গায় পাওয়া গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় তার স্বাদ আগের মতো নাই।

 

এ তো গেলো ছোটো মানের মিষ্টান্ন। রাজবাড়ীর চমচমের কথা না বললেই নয়। রাজবাড়ীতে একপ্রকার ক্ষীর সংযোগে বানানো চমচমের সুনাম দেশব্যাপী। বিশেষ করে রাজবাড়ীর ভাদু সাহার চমচম। ৬০ বছর যাবৎ ঢাকায় আসা-যাওয়া ও বসবাস করছি। আজ পর্যন্ত ঢাকার কোনো মিষ্টির দোকানে অমন সুস্বাদু চমচম পাইনি। রজবাড়ির মতো জিলাপীও ঢাকায় পাওয়া যায় না। এখনো গ্রামে গেলে রাজবাড়ীর চমচম না নিয়ে ঢাকায় ফিরি না।

চমচমের ব্যাপারে আরেকদিন লিখবো।

ছবিঃ রাজবাড়ীর ভাদু সাহার চমচম



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url