সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা
২০১৫ সালের পে স্কেল |
দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্ধগতির কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা পদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের
খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের বেতনের গ্রেড অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা দেয়া হবে। বর্তমানে
বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীদের বেতনের ২০টি গ্রেড চালু আছে। এবার মহার্ঘ ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে এই গ্রেডগুলিকে ৩ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। বর্তমানে আহরিত মূল বেতনের শতাংশ হারে মহার্ঘ
ভাতা দেয়া হবে। তবে সর্বনিম্ন ৪ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত বেতন বাড়তে
পারে। অর্থাৎ কারো মহার্ঘ ভাতা ৪ হাজার টাকার কম হবে না।
প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী নিম্নে উল্লেখিত গ্রেডের পাশে
দেখানো হার অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা পাবেন সরকারি কর্মচারীরাঃ
(১) ১ম থেকে ৩য় গ্রেড - ১০ শতাংশ
(২) ৪র্থ থেকে ১০ম - ২০ শতাংশ
(৩) ১১ থেকে ২০তম গ্রেড - ২৫ শতাংশ
মহার্ঘ
ভাতা কার্যকর হওয়ার পর বর্তমান প্রচলি ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা সুবিধাটি আর বহাল থাকবে
না। ফলে সর্বনিম্ন ৪ হাজার টাকা যারা পাবন তাদের বেতন কমে যাবে ১ হাজার টাকার মতো। প্রস্তাব অনুযায়ী সবকিছু
ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গেই মহার্ঘ ভাতা দেয়া হতে পারে।
এদিকে
দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্ধগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার উদাসীন থাকলেও শ’খানেক
দ্রব্যের উপর কর (ভ্যাট) বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে সরকার। গ্যাসের দামও বাড়ানোর ঘোষনা দিয়েছে।
পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, তেল, গ্যাস যাই বলুন- শুধু একটি পণ্যের দামের সাথে
সব পণ্যের দামের সম্পর্ক আছে, তা হলো চাল। ৬ মাস আগে্র চেয়ে বর্তমানে চালের দাম ২৫
শতাংশের উপরে বেড়েছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ১৫০%। সেটা কার্যকর
হলে দ্রব্যমূল্য কোথায় পৌঁছবে কে জানে!
সাধারণত পাঁচ-সাত বছর অন্তর একটি নতুন বেতন স্কেল দেয়া
হতো আগে। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন স্কেলে স্বয়ংক্রিয়
বেতন বৃদ্ধির পদ্ধতি চালু করায় ২০১৫ সালের পর আর কোনো নতুন পে-স্কেল দেওয়া হয়নি। কিন্তু
বাজার মূল্যের সাথে স্বয়ংক্রিয় বেতন বৃদ্ধির হিসেব মিলছে বর্তমানে। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী
সরকার মহার্ঘ ভাতা দিয়ে সাময়িক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে, যা ইতিবাচক। তবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের উচিৎ হবে
একটি নতুন বেতন কমিশন গঠন করে সরকারি কর্মচারীদের গ্রাহনযোগ্য একটি বেতন স্কেল নির্ধারণ করা।
এ প্রসংগে
আরো একটি কথা যোগ করতে চাই। সর্বোচ্চ বেতন এবং সর্বনিম্ন বেতনের পার্থক্য কমিয়ে
আনা উচিৎ। তাতে নিম্ন পদবীর কর্মচারীদের প্রতি সুবিবেচনা করা হবে বলে মনে করি। কারণ, উচ্চপদের
কর্মকর্তারা বেতন ছাড়াও অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন, যা নিম্নপদবীর কর্মচারীরা পান না।