একটি রম্য রচনা-কেউ হাইসেন না

 

প্রতীকী ছবি


একটা গল্প কই, সবাই হুঁ কইয়েন। তয় কেউ হাইসেন না ক'লাম!

ছোটকালে শুনতাম ফরিদপুর আর নোয়াখালী জেলার লোক নাকি চাঁদে গেলেও দুয়েকজন পাওয়া যাবে।

আবার কেউ গোস্বা খাইয়েন না ক'লাম। যে সময়ের গল্প বলবো তখন আমিও ফরিদপুরের একজন গর্বিত পোলা আছিলাম।

তয় হুনেন কই:

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কোলকাতায় এক নেতার সাথে দেখা করতে গেছি। ট্রেন থেকে নেমে শিয়ালদহ ষ্টেশন থেকে বেড়িয়ে একটা ফুটপাত ধরে হাঁটছি। হঠাৎ দেখি এক লোক বসে ছাতা সেলাই করছে, মুখে দাড়ি। ভাবলাম কোলকাতার ফুটপাতেও ছাতা মেরামতকারী পাওয়া যায়, তাও আবার দাড়িওয়ালা!

আমার পূর্বোল্লেখিত চাঁদের দেশের কথা মনে করে উৎসাহটা বেড়ে গেলো। পাশে অল্পক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে লোকটার একেবারে কাছে গিয়ে বসে পড়লাম। মোলায়েম সুরে জিজ্ঞেস কোরলাম, 'চাচা আপনার বাড়ি ক'নে'?

চাচা আমার হাবভাবে ততক্ষণে বুঝে গেছে আমি ‘জয় বাংলার লোক’। রুষ্ট দৃষ্টিতে এক মুহূর্ত আমার দিকে তাকিয়ে থেকে দৃষ্টি নামিয়ে রাগত:কণ্ঠে শুধু বললো, 'ভাঙ্গা'। জেলার নাম আর বলার প্রয়োজন মনে করলো না।

রাতে নেতার কাছে (নেতার বাড়িও ফরিদপুর) গল্পটা করতেই হাসতে হাসতে বললো, 'ফরিদপুর জেলায় আড়াই লাখ ইঞ্জিনিয়ার আছে জানিসনে?

নেতা নিজেও কিন্তু বুয়েট থেকে পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন এবং পরবর্তীতে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংস্কৃতিক সম্পাদক।

ও... কেউ হুঁ কন না দেহি? হুঁ না কইলে গল্প হয়ক! থাক, আর কমুনা!

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url