নবীজি(সাঃ)-এর পেশা নিয়ে মৌলানা মিজানুর রহমান আজহারির কটুবাক্য


মিজানুর রহমান আজহারী। ছবিঃ প্রতীকী।


ইসলাম ধর্মে যতোজন নবীর নাম পাওয়া যায় তারা প্যরা সবারই কোনো না কোনো পেশা ছিলো। কেউ কার্পেন্টারি করতেন, কেউ কবলার, কেউ কামারের কজ করতেন। তাইবলে কোনো মুসলমান 'গাঁজাখোর' মিজানের মতো  নবী মোহাম্মদ (সাঃ)কে হেয় করে  জঘন্য শব্দ ব্যবহার করতে পারেন না। 

আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)'এর জন্ম হয়েছে রাজবংশের রাজপ্রসাদের দ্বিতল অট্টালিকার দোতালায়। তিনি কখনও মাতৃদুগ্ধ পান করেননি। তিনি জন্মের পর আবু লাহাবের আজাদকৃত দাসী শোয়াইবার স্তন্যদুগ্ধ পান করেছেন। পরবর্তীতে তিনি দুধমাতা হালিমার দুগ্ধ পান করেছেন। নবীজীর দুধ মাতা হালিমার পুত্ররা যখন মেষ চড়াতে যেতেন, নবীজী তাদের সাথে যেতেন। সেখানে নবিজীর বক্ষ বিদীর্ণ করার ইতিহাসও রয়েছে, যা হালিমাপুত্র তার মায়ের কাছে বর্ণনা করেছেন মর্মে ইতিহাসে বর্ণিত আছে।

সত্যবাদীতার জন্য তৎকালীন মক্কাবাসীগণ তাঁকে 'আল আমিন' উপাধি দিয়েছিলেন। নবিজীর পিতা আবদুল্লাহ ছিলেন ব্যবসায়ী। পিতা আবদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর তাঁর ব্যবসার উত্তরসূরী হন নবিজীর মাতা মক্কার ধনাঢ্য রমনী মা আমিনা। নবীজী তাঁর মাতার ব্যবসার তত্ত্বাবধায়ক (ম্যানেজার) হিসেবে নিয়োজিত হয়ে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। 

নবিজীর সততায় মুগ্ধ হয়ে বিবি খাদিজা তাঁকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে পারিবারিক সম্মতির ভিত্তিতে তাঁদের বিবাহ হয়। বৈবাহিক সূত্রে নবীজী বিপুল সম্পদের মালিক হন। নবুয়তীর পূর্বপর্যন্ত নবীজী ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। 

আরব দেশে পশুপালন ছিলো একটি সম্মাজনক পেশা। নিম্নে কয়েকজন নবীর পেশার বর্ণনা দেয়া হলো:

(১)  হযরত আদম (আঃ) - কৃষক

(২)  শিশ ( আঃ) - তাঁতী

(৩)  ইদ্রিস (আঃ) - দর্জি

(৪)  নূহ (আঃ) - কাঠমিস্ত্রি

(৫)  ইয়াকুব (আঃ) - ভেড়ার রাখাল

(৬)  ইউসুফ (আঃ) - দাস, সেনাপতি, মন্ত্রী

(৭)  হুদ( আঃ) - ব্যবসায়ী

(৮)  সালেহ (আঃ) - উটের রাখাল

(৯)  ইব্রাহিম( আঃ) - আলেপ্পোতে দুগ্ধজাত সামগ্রী বিক্রি 

(১০)  ইসমাইল (আঃ) - শিকারী 

(১১)  শোয়াইব( আঃ) - ছাগলের খামারি ও দুগ্ধজাত দ্রব্য বিক্রয়কারী

(১২)  মুসা (আঃ) - ছাগলের রাখাল

(১৩)  ইলিয়াস (আঃ) - তাঁতী

(১৪)  দাউদ (আঃ ) - লোহার বর্ম ও হাতিয়ার নির্মাতা

(১৫)  সোলায়মান (আঃ) - সম্রাট হয়েও খেজুর পাতার বাক্স তৈরি

(১৬)  যাকারিয়া (আঃ) - করাতি

(১৭)  ইসা (আঃ) - মেষপালক

(১৮)  হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) - ব্যবসায়ী ছিলেন, এব্যাপারে বহু প্রমাণ আছে

কোনো নবী রাসুল (সাঃ)'কে হেয় করার উদ্দেশ্যে তাঁর পেশা নিয়ে কটাক্ষ করা সুস্পষ্টভাবে কুফরী। দুষ্টবক্তা মিজান এর আগেও রাসুল (সাঃ)'কে 'সিক্স প্যাক' এবং বিবি খাদিজাকে "ইনট্যাক্ট নয়, ভারজিন নয়, প্রৌঢ়া" ইত্যাদি বলে যে নিকৃষ্ট মন্তব্য করেছিলেন, তখনই সুন্নী আলেম সমাজ তাকে কাফের ও মুরতাদ ফতুয়া দিয়েছিলেন। "ফীন্নারি জাহান্নামি খালিদীনা ফীহা আবাদা"। 

ইসলামের নবীগন অনেকে বাদশাহ থাকা সত্বেও নিজের জীবিকার জন্য তাঁরা কাজ করেছেন। অথচ বর্তমানে এক শ্রেণীর আলেম, মাওলানা, মুফতি টাইটেলধারী মানুষ ধর্মকে ব্যবসার পুঁজি করে মানুষের ধর্মীয় চেতনাকে কাজে লাগিয়ে ধোকাবাজীর ব্যবসা করে চলেছেন।

আল্লাহ আমাদের সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমীন।।

(সংগ্রীহীত)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url