মসজিদও আল্লাহর আমিও আল্লাহর-খাইয়া ফালাইছি!

 
প্রতীকী ছবি


একটা খবর চাউর হয়েছে, পাকিস্তানের এক মসজিদের দান বাক্স থেকে ৫০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। লোকেরা যখন একজনকে সন্দেহ করে কানাঘুষা করছিলো- চোর জানতে পেরে মসজিদ কমিটির কাছে এক চিঠি লেখে। চিঠিতে জানায়, “মসজিদ আল্লাহর ঘর। টকাটা যেহেতু মসজিদের দান বাক্সের- সেহেতু, টাকাটাও আল্লাহর। অতএব, চুরি করেছি আল্লাহর টাকা। ‘এটা আমার আর আল্লাহর বিষয়’। এ বিষয়ে অন্য কারো নাক গলানোর প্রয়োজন নাই”!

 

ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের উত্তর পাঞ্জাবের খানেওয়াল জেলার জামিয়া মসজিদে।

পাকিস্তানের মসজিদ থেকে টাকা চুরি সংক্রান্ত খবরের শিরোনাম



কি সুন্দর যুক্তি! কথায় কোনো ভেজাল আছে?

এটাই বাস্তবতা! আমরা আল্লাহর ঘরে দান করলেও খায় তো মানুষেই। যেমন মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজ করতে মানুষ লাগে, সরঞ্জামাদি কিনতে হয় মানুষের কাছ থেকেই- তাদেরকে টাকা দিতে হয় এবং সেই টাকা তাদের রুটি-রুজি। ইমামতি করতে মানুষ লাগে- বেতন দিতে হয়, কমিটি মানুষ দ্বারাই গঠিত। যে যেভাবেই খরচ করুক অবশেষে মানুষের পেটেই তো যায় টাকা! ওইটা নাহয় চোরের পেটে গিয়েছে- সেও তো মানুষ!

 

 

এ প্রসংগে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুড়ি থেকে একটা ঘটনার উল্লেখ করছি। আমি যখন নারায়নগঞ্জ ‘ভুলাইল’ এলাকায় থাকতাম, সেখানে ছোট একটি বাজার আছে, গেদ্দের বাজার। আসলে হবে ‘গেদু মিয়ার বাজার’। কিন্তু স্থানীয় লোকেরা বিকৃত করে গেদ্দের বাজার বলে। বাজারের নামকরণেরও একটা কাহিনী আছে। ওই মহল্লার ভিতরে প্রথম একটিমাত্র দোকান করে গেদু মিয়া। গেদু মিয়ার দোকানের পাশেই মসজিদ। মহল্লার লোকেরা মসজিদের পাশে ফাঁকা জায়গায় একটা একটা নিত্যপন্যের বাজার বসায়। তারপর আস্তে আস্তে আরো দোকানপাট গড়ে ওঠে। গেদু মিয়ার দোকান সবার আগে স্থাপিত হওয়ায় বাজারটি ‘গেদু মিয়ার’ বাজার হিসেবেই পরিচিতি পায়, যার বিকৃত নাম ‘গেদ্দের বাজার।

 

তো ওই মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যেতাম। মসজিদে অন্যান্য লোকের সাথে গেদু মিয়াও মুসল্লিদের কাছ থেকে টাকা কালেকশন করতো। একবার এক সপ্তাহের টাকা মসজিদ কমিটির কাছে জমা দেয় নাই গেদু মিয়া। পরের জুমার দিন কমিটির লোকেরা জিজ্ঞেস করলে বলে, দিমুনে। এভাবে ওক সপ্তাহ, দুই সপ্তাহ যায়, মাস যায়। টাকা আর দেয় না। মসজিদে সবার মাঝে কথাটা না বলে একদিন কমিটির এক সদস্যকে জানিয়ে দেয়:

 

"মসজিদও আল্লাহর, আমিও আল্লাহর, খাইয়া ফালাইছি"।

 

তবে পাকিস্তানের ওই চোরটির জবাব আরো চমৎকার! “এটা আমার আর আল্লাহর বিষয়। অন্য কারো নাক গলানোর দরকার নাই”! কি ধুর্ত-রে বাবা!

পাকিস্তানের মসজিদ থেকে টাকা চুরি সংক্রান্ত খবরের আংশিক বর্ণনা


অর্থাৎ - 'আজরাইল না ধরা পর্যন্ত কেউ বিশ্বাস বা ভয় করে না, 'একদিন না একদিন আমিও "পেঁয়াজের খ্যাপে" যাবো!!






Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url