ভারত উপমহাদেশে জামাতে ইসলামীর রাজনীতি

 

জামাতে ইসলামীর মনোগ্রাম



বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জামায়াতে ইসলাম হচ্ছে একটি বহুরূপী রাজনৈতিক দল। এই দলটির জন্ম হচ্ছে পাকিস্তানে এবং সেখানেই এদের পরিচয় অনেকটা অবৈধ সন্তানের মতো। নিজেকে কখনো প্রশ্ন করেছেন, ৯৯ ভাগ মুসলিমের দেশ পাকিস্তানে জামায়াতে ইসলামকে কেউ পছন্দ করেনা কেন? কেন পাকিস্তানে বারবার জামায়াতে ইসলাম নিষিদ্ধ হয়েছে?

 

জামায়াতে ইসলামীর যখন জন্ম হয় তখন তার নাম ছিল জামায়াতে ইসলামী হিন্দ। জামায়াত ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিল। জামায়াত ১৯৪৬ সালের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় দল মুসলিম লীগকে সমর্থন করেনি। এর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর ফাঁসির আদেশ হয়েছিল পাকিস্তানে। পাকিস্তানে সফল না হলেও বাংলাদেশের হাঁটু মগজ মোসলমানদের মগজ ধোলাই করে কিছুটা হলেও সফল হয়েছে জামায়াতে ইসলাম।।

 

বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক ভিত্তি এত মজবুত কোনকালেই ছিলোনা। নব্বইয়ের দশকের এক উগ্রবাদী মাওলানার আবির্ভাবের মধ্যে দিয়ে একটি প্রশিক্ষিত জ-ঙ্গী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামী। ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর প্রধান গোলাম আজম রাজাকার বাহিনী গঠন করেছিলেন এই দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করার জন্য। এদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন নাম ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘ। এই ইসলামি ছাত্র সংঘ আলবদর বাহিনী গঠন করে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মা ও বোনকে পাকিস্তানীদের হাতে তুলে দিয়েছিলো।

 

জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর ছেলে সৈয়দ হায়দার ফারুক মওদুদী তাঁর 'জিহাদ উইদাউট বর্ডার' বইতে জামায়াতে ইসলামীর নানা ভন্ডামির চিত্র মানুষের কাছে খুব সহজভাবে উপস্থাপন করেছেন। মওদুদী তার সন্তানদের সবাইকে জামায়াতে ইসলাম নামক ভন্ড দলটি করতে নিষেধ করেছেন। মুলত সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়িয়ে বারবার গিরগিটির মত রং পরিবর্তন করা জামায়াতে ইসলাম ভারত ও পাকিস্তানে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও মাথামোটা বাঙালি মুসলমানের গোবর মগজকে পুঁজি করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে যা জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্য ভয়ানক বিপজ্জনক।।

 

একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন, বাংলাদেশে জ-ঙ্গী উত্থানের পেছনে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসা বর্ণচোরা দল জামায়াতে ইসলামী দায়ী। পাকিস্তানে ২০ টা জ-ঙ্গী সংগঠন হলেও বাংলাদেশের ভেতরে জ-ঙ্গী সংগঠন হচ্ছে ৪০ টা। এসব জ-ঙ্গী সংগঠনের ফাদার সংগঠন হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি, হরকাতুল জেহাদ ও হিজবুত তাহরীরের জঙ্গীদের সবার পূর্ব পরিচয় ছিল জামায়াতে ইসলাম।

 

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উস্কানির জন্য ১৯৫৯ সালে পাকিস্তান সরকার জামায়াতে ইসলামীকে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করে। ১৯৬৪ সালে আবার জামায়াতে ইসলামীকে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করেন। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান পাকিস্তানে স্বেচ্ছা নির্বাসিত দলটির তৎকালিন আমীর গোলাম আযমকে দেশে এনে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন।

২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পর জামায়াতে ইসলামীকে বাংলাদেশে আবার নিষিদ্ধ করা হয়।।

 

বর্তমানে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ভারতে জামায়াতে ইসলাম একটা পরগাছা ছাড়া আর কিছুই নয়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এই পরগাছাগুলোই কোটা না মেধার টেবলেট খাইয়ে এই দেশের তরুণ প্রজন্মের একটা বিশাল অংশকে ভোদাই বানিয়ে জোর করে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে সমগ্র বাংলাদেশে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। নিজের বিগত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, জামায়াতে ইসলামীর এসব রাজনৈতিক ভন্ডামি মানুষ আর খুব বেশিদিন সহ্য করবেনা। এ আঁধার থাকবেনা।

আলো আসবেই

লুসিড ড্রিম (শুভ)

 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url