মানুষ হিসেবে সৎ চিন্তা অপরিহার্য


 

সৎ চিন্তা থেকে বিচ্যুত হলে মানুষ হিসেবে প্রকৃতির বিচারে আপনি অবশ্যই আস্তাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে গ্লানি। যতোদিন বাঁচেন, যে হালেই বাঁচেন মানসিক যন্ত্রণা সয়েই বেঁচে থাকতে হবে।


ধরুন আপনি একজন সংবেদনশীল মানুষ ছিলেন।

তারপর কিছু ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিদ্বেষপন্থীদের স্তরে নেমে গেলেন। ওদের মতো খারাপ কথা বলা শুরু করলেন। ওই স্তরের আচরণ শুরু করলেন। নিজেকে তাদের মতো নিম্ন পর্যায়ে নিয়ে গেলেন। মানসিকতায়, রুচিতে, চেতনায়, কর্মকাণ্ডে। মানবিকতা, সহনশীলতা, এতদিনের অর্জন সবকিছু বিসর্জন দিলেন।

আপনি বিদ্বেষ শিখলেন, সাম্প্রদায়িক হওয়ার তুমুল প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। সেইমতো কাজও শুরু হলো। সব মিলিয়ে জাস্ট ওই শ্রেণির উল্টোদিক হয়ে উঠলেন।

কি ভাবছেন, আপনি জিতে গেলেন? আপনার 'মহান' দিকটি গৌরবান্বিত হলো?

না, আপনিও ওদের জায়গায় চলে গেলেন। তফাৎ রই্লো না। বরং তারাই সফল হলো। হয়ত তাদের ধূর্ত অংশ মনে মনে খুশিও হলো এই ভেবে, "খুব শিক্ষা, সহনশীলতা নিয়ে গর্ব করতো। দ্যাখো আমাদের লেভেলে এসে গেছে।"

আপনি উন্নত মানসিকতার হলে সেটা বজায় রাখা খুব বড় দায়িত্ব। ভালোটাকে বাঁচিয়ে রাখতেই হবে। এই কঠিন সময়ে নিজেকে নষ্ট হতে না দেওয়া, সংযত রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আগামীর জন্য একটা সুস্থ পরিসর দিয়ে যেতে হবে আমাদের। তারা যেন ঘৃণার উত্তরে ভালোবাসা শেখে, ভালো কিছুকে রক্ষা করতে শেখে। বৈচিত্র্য, ভিন্নমত, ভিন্ন বিশ্বাসকে আগলে রাখে।

এই ভালোটা একদিনে গড়ে ওঠেনি। অনেক আত্মত্যাগ, চর্চা, উত্তরাধিকার নিহিত আছে। সেই ইতিহাস, পূর্বপুরুষদের সুস্থচিন্তার ধারা ইত্যাদিতে এতো সহজে হারিয়ে ফেলা বোকামির নামান্তর হবে। কুচক্রীরা এদিকে যেমন আছে, ওদিকেও আছে। উপমহাদেশের রাজনীতি আসলে 'লড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে' নিয়ন্ত্রিত হয়।

শুনতে খারাপ লাগবে, মনে হবে খুব হাস্যকর কিছু লিখছি। তবু আমাদের নিচুস্তরে নামা থেকে বিরত থাকতে হবে। সামলে রাখতে হবে, যা কিছু আমাদের অনন্য করেছে এতকাল।

লেখকঃ বিপ্লব কুমার দে

বিপ্লব কুমার দে




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url