বৈচিত্র্যে ভরা ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপূঞ্জ
আরো মজার ব্যাপার হলো এর অধিবাসীদের মধ্যে ৯-১০টি ভাষার
প্রচলন থাকলেও সংখ্যাধিক্য অধিবাসীদের ভাষা বাংলা। উল্লেখ্য বাংলাদেশ থেকে দেশত্যাগী
প্রচুর হিন্দু পরিবার এ দ্বীপে গিয়ে বসতি স্থাপন করেছে।
আর
বিশেষ শিক্ষনীয় হলো, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী (কংগ্রেস দলীয়) ইন্দিরা গান্ধীর নামে নামকরণ করা হয় নিকোবরের শেষপ্রান্তের বিন্দুকে। কংগ্রেস সরকার বদল হয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি কয়েকবার ক্ষমতায় এসেছে। বিজেপির বর্তমান সরকার পরপর ৩ মেয়াদে ক্ষমতায় আছে।অথচ আজ পর্যন্ত এই নামটি কেউ বদল করেনি, যা আমাদের দেশে অহরহ হয়।
বলছিলাম ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কথা। ৫৭২ টি দ্বীপের
সমন্বয়ে গঠিত এই দ্বীপপুঞ্জ, যেগুলির মধ্যে মাত্র ৩৮টি জনবসতিপূর্ণ। ১৯৪৭ সালের
১৫ই আগষ্ট এটি ভারতের অধীনে আসে। এর আগে ব্রিটিশ সরকারের শাসনাধীনে ছিলো। দ্বীপপুঞ্জের
প্রধান দুটি দ্বীপ আন্দামান ও নিকোবর ৩টি জেলায় বিভক্ত যার ২টি আন্দামানে এবং ১টি নিকোবরে।
তবে এর একটি কেন্দ্রীয় রাজধানী আছে, যার নাম ‘শ্রী বিজয় পুরম’। রাজধানীর আগে নাম ছিলো
‘পোর্ট ব্লেয়ার’। একজন লেঃ গভর্নর এর কেন্দ্রীয় শাসনকর্তা।
এই দ্বীপপুঞ্জেরই একটি বিশেষ দ্বীপের নাম ‘সেন্টিনাল’ যার অধিবাসী মাত্র তিনশত।
কিন্তু এখানকার অধিবাসী কারো শাসনাধীন নয়। তারা কারো শাসন মানে না। তারা বন্যপ্রাণির
মতো হিংস্র জংলী টাইপের। সাধারণ মানুষকে তারা সহ্য করতে পারে না, দেখলেই তেড়ে আসে,
সেকারণে সাধারণ মানুষের সেই দ্বীপে যাওয়া নিষেধ। গেলেই তারা আক্রমণ করে, এমনকি মেরে
খেয়ে ফেলে।
চিত্রে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপূঞ্জের কিছু বৈচিত্র তুলে ধরা
হলো। ছবিগুলি গুগল থেকে সংগৃহীত যার বেশিরভাগ কৃতিত্ব আনন্দবাজার পত্রিকাঃ
আন্দামান-নিকোবরঃ
দুটি নামই এসেছে মালয় ভাষা থেকে
ভারতের প্রথম বাণিজ্যিক জলবিমান, ‘জল হংস’ প্রথম আন্দামানেই চালানো হয়।
জল বিমান |
আন্দামানের ব্যারেন দ্বীপে ভারতের
একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরিটি রয়েছে।
আগ্নেয়গিরি |
পৃথিবীর বৃহত্তম সামুদ্রিক কচ্ছপের
‘বাড়ি’ এখানেই।
পৃথিবীর বৃহত্তম সামুদ্রিক কচ্ছপ |
নিকোবরের একটি ছোট্ট দ্বীপ কাটচাল।
এই দ্বীপ শতাব্দীর প্রথম সূর্যদয় দেখেছিল।
সূর্যোদয়ের দৃশ্য |
আন্দামানিজ বা নিকোবরিজ ভাষা নয়,
শুনতে অবাক লাগলেও এখানকার বহুল প্রচলিত ভাষা কিন্তু বাংলা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হিন্দি।
এখানকার উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে বিশ্বের বিচ্ছিন্নতম প্যালিওলিথিক উপজাতিরা থাকেন। বর্তমানে এঁদের সংখ্যা তিনশোর মতো।
সেন্টিনেল দ্বীপের প্যালিওলিথিক উপজাতি |
এখানকার রাজ্যপশু ‘ডুগঙ্গ’। এদের
‘সামুদ্রিক গরু’ও বলা হয়। এরা খুবই শান্ত ও নিরামিষাশী। ‘ডুগঙ্গ’কে ‘সমুদ্রের পরী’ও
বলা হয়।
ভূগঙ্গ বা সামুদ্রিক গরু বা সমুদ্রের পরী |
পান্ডুনাস’ নামে বিরলতম একটি ফল পাওয়া যায় নিকোবরে। স্থানীয় মানুষদের কাছে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খাদ্য।
পান্ডুনাস ফল |
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সন্ধিপদ প্রাণীটিও
পাওয়া যায় এখানেই। বির্গাস লাটরো বা রবার ক্রাবের দেখা পেতে পারেন এখানে বেড়াতে গেলে।
সন্দিপদ প্রাণী |
আন্দামানের বারাটাঙ্গ ভারতের একমাত্র
এলাকা যেখানে কাদার আগ্নেয়গিরি রয়েছে।
কাদার আগ্নেয়গিরি |
ভারতের কুড়ি টাকার নোটে আন্দামানের ছবি ব্যবহার করা হয়।
২০ টাকার নোটে আন্দামান |
আন্দামানের পরিবেশ |
আন্দামানে অবস্থিত মহাত্মা গান্ধী পার্ক |
মানচিত্রে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশ ও নিকোবরের ইন্দিরা পয়েন্ট |