ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গীত শিল্পীবৃন্দ: কুমার শানু

 


সপরিবারে কুমার শানু


কুমার শানু ১৯৫৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। 

কুমার শানুর বাবা পশুপতি ভট্টাচার্য্য ছিলেন একজন গায়ক ও সুরকার। তাঁর পৈতৃক নিবাস ও জন্মস্থান ছিল ঢাকার অদূরে বিক্রমপুরের হাসাড়া গ্রামে। পশুপতি ভট্টাচার্য্য জীবিকার তাগিদে কলকাতায় আসেন। তিনি শানুকে গান ও তবলা শেখান।


কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হওয়ার পর কুমার শানু ১৯৭৯ সালে প্রকাশ্যে কার্যক্রম শুরু করেন এক প্রোগ্রামে তখন স্টেজ খালি যাচ্ছিল। সেই সময় কেউ একজন জানান যে, তবলা বাজানোর পাশাপাশি শানু কিশোর কুমারের গানও ভালো গাইতে পারেন। ব্যাস শোনামাত্রই তাকে উদ্যোক্তারা স্টেজে একপ্রকার জোর করে তুলে দেন গান করতে।


কুমার শানু  ভয়ে ভয়ে কিশোর কুমারের গাওয়া "ওয়াদা তেরা ওয়াদা" গানটি করেন। 

এ কথা কুমার শানুর বাবার কানে যায়। তিনি শোনেন যে, ছেলে নাচতে নাচতে মঞ্চে গান করে এসেছেন। তিনি শানুকে বকেন। কারণ শানু ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে মঞ্চে গানটি করছিলেন।

 

এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও হোটেলে গান গাওয়া শুরু করেন শানু। 

একসময় তিনি মুম্বাইতে যান এবং জনপ্রিয় গজল গায়ক জগজিৎ সিং এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। জগজিৎ সিং তাকে মুম্বাইতে সুযোগ করে দিতে যথেষ্ট সাহায্য করেন। তিনিই প্রথম কল্যাণজী - আনন্দজী'র কাছে শানুকে নিয়ে যান। এ কথা তিনি একটি টিভি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন। 


কলকাতায় কিশোর কুমারের পর কুমার শানুকেই বলিউড শৈলীর গানের অনুপ্রেরণা বলে ধরা হয়। অজানা অনেকে তাকে কিশোর কুমরের ছেলে ভেবে নিতেন, বিশেষ করে বাংলাদেশের শ্রোতারা। পরবর্তিকালে তিনি নিজের শৈলিতে গান গাওয়া শুরু করেন। উল্লেখ্য কিশোর কুমারের ছেলে অমিত কুমারও ওই সময়ের একজন জনপ্রিয় শিল্পী।


১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যেকার সেরা পুরুষ গায়ক ছিলেন কুমাস শানু।


কুমার সানু ২১ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন। তিনি একজন প্লেব্যাক গায়ক যিনি ১৯৯০ এর দশকে তার সুরেলা পরিবেশনার জন্য পরিচিত। তার গাওয়া সিনেমার গানের মধ্যে রয়েছে:  

 

"জনম মেরি জনম" -"মিঃ বেচারা (১৯৯৬)" 

"ও দিল তোড় কে হস্তি হো মেরা" -"বেওয়াফা সনম (১৯৯৫)"

"ইশ তারাহ আশিকি কা" -"ইমতিহান (১৯৯৪)"

"দিল মেরা চুরায়া কিউ" -"আকেলে হাম আকেলে তুম (১৯৯৫)"।


কুমার শানুর বেশ কয়েকটি পুরস্কার এবং কৃতিত্ব রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:   


*১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সেরা পুরুষ প্লেব্যাক গায়কের জন্য টানা পাঁচটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।

*১৯৯৩ সালে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক গান (২৮ টি গান) রেকর্ড করার জন্য গিনেস  বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এ নাম ওঠে।


কুমার সানুর আসল নাম কেদারনাথ ভট্টাচার্য। তিনি ১৯৯০ সালে আশিকিতে গান গাওয়ার জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন।কুমার শানুর গানে সবথেকে ভালো লিপ দিতে পারতেন ঋষি কাপুর, শাহরুখ খান।


৩১ মার্চ - কুমার শানু দিবস: আমেরিকায় এমন সম্মান অর্জনকারী প্রথম ভারতীয় গায়ক ।


৯৯% মানুষ এটা জানেন না যে, কুমার শানু মুহাম্মদ রফি, মুকেশ-দেরকেও  প্রবল ভাবে অনুসরণ করতেন। এক সাক্ষাৎকারে সে কথা বলছেন শানু।


এই শিল্পীর অনেক কৃতকর্ম আছে যা অল্প পরিসরে বলে শেষ করা যায় না। বর্তমান সময়ে তিনি কলকাতা ও মুম্বাইয়ে সংগীতের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের বিচারক হিসেবে পারফর্ম করে যাচ্ছেন। এর কোনো কোনোটায় আবার সম্মানিত অতিথি হিসেবেও অনুষ্ঠান অলংকৃত করেন।


তার গাওয়া "যাব কোয়ি বাত বিগাঢ় যায়ে" গানটি অসাধারণ।


সবাইকে ধন্যবাদ

সংগৃহীত ও সম্পাদিত

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url