চোর!
প্রতীকী ছবি |
“চৌর্যবৃত্তি
একটি আদিম পেশা। একে প্রাকৃতিকও বলা যায়। কেননা, প্রাণীজগতে মানুষ ছাড়াও উন্নত
প্রাণীদের মাঝে চুরির প্রবণতা দেখা যায়। পক্ষীসমাজ এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। কাক পাখি তো
চুরি বিদ্যায় বেশ ওস্তাদই বলা চলে। তার ওস্তাদিকে স্বীকৃতি দিয়ে মানুষ প্রজাতি
পাখি তাড়ানোর জন্য যে সুন্দর মূর্তি বানায়, সেই মূর্তির নাম দিয়েছে- কাকতাড়ুয়া।
এছাড়া
মানব প্রজাতির প্রিয় দুই প্রাণী- কুকুর ও বিড়াল, এদের মাঝেও চুরির প্রতিভা আমরা
দেখতে পাই। মাছ, মাংস সহ বিভিন্ন মজার খাবার চুরি করায় এরা ট্রেনিংপ্রাপ্ত। পিছিয়ে
নেই কীটপতঙ্গ সমাজ। মৌমাছি তো ফুলে ফুলে ঘটকালি করার অজুহাত দেখিয়ে মধু চুরিতে
জগৎবিখ্যাত।
মানব
সমাজেও চুরি খুব জনপ্রিয় একটা পেশা ও নেশা। সমাজের প্রায় সবস্তরেই চুরিবিদ্যার
চর্চা চলে। তবে চুরিবিদ্যার মহৎ ও চোখ ধাঁধানো চুরির নিদর্শনগুলো আমরা নেতা, আমলা
ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। তারা খুব শৈল্পিক ও দাম্ভিক উপায়ে চুরি
করতে ওস্তাদ। তাদের এই চুরির প্রতিভা দেখে এক কবি মুগ্ধ হয়ে বলেছেন- ‘চুরি বিদ্যা
মহাবিদ্যা যদি না পড়ে ধরা’। আরেক কবি তাদের দাম্ভিকতা দেখে বলেছেন- ‘চোরের মায়ের
বড় গলা’!
সময় ও
যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে চুরিবিদ্যাও পেয়েছে ডিজিটাল রূপ। ফেসবুকেও আমরা অনেক
লেখাচোর দেখি। এসব লেখাচোরেরা আচরণ ও প্রকৃতি অনুসারে চার প্রকার, যথা –
(১) আত্মবিশ্বাসী চোর
(২)
আত্মঅবিশ্বাসী চোর
(৩)
স্মার্ট চোর - এবং
(৪)
লিজেন্ড চোর
(১)
আত্মবিশ্বাসী চোর: এই শ্রেণীর চোরেরা সরাসরি যেকোন লেখকের লেখা নিজের নামে
চালিয়ে পোস্ট দেয়। সেই পোস্টে প্রশংসাসূচক মন্তব্যের প্রতিমন্তব্যে এরা ধন্যবাদও
জানায়।
(২)
আত্মঅবিশ্বাসী চোর: এরা এদের পছন্দের লেখা নিজের নামে চালানোর মতন সাহস রাখেনা,
আবার লেখকের নাম সহ প্রকাশ করার মতন সততাও রাখেনা। তাই এরা লেখার শেষে লিখে দেয়-
কালেক্টেড। এরা চোর জগতের কলঙ্ক।
(৩)
স্মার্ট চোর: এই শ্রেণীর চোরেরা অজনপ্রিয় বা তেমন পাত্তা না পাওয়া লেখকদের
একনিষ্ঠ লাইকার হিসাবে থাকে। লেখকদের যেই লেখা ভাল লাগে, সেই লেখার নিচে কমেন্ট
দিবে 'কপি করলাম বস'। এরপর সত্যি সত্যিই নিজের টাইমলাইনে পেস্ট করে দিবে কোন
কার্টেসি ছাড়াই।
(৪)
লিজেন্ড চোর: অনলাইনে লেখা চুরি জগতের গুরু বলে ভাবা যায় এদের। এরা
রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে লুলু আম্মানসূরা পর্যন্ত যে কারো লেখা ভাল
লাগলেই তা নিজের ভেবে সংগ্রহ করে এবং সব চুরি একত্র করে নিজের নামে বই ছাপিয়ে দেয়।
এই চোরদের আমার লাল সালাম।
জগতের
সকল চোরেরা চুরি করুক, আরো বড় চোর হোক। তাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়ুক সারা দুনিয়ায়।
"সাব্বে সত্তা সুখিতা ভবন্ত"।"
লিখেছেন:
Lulu Ammansura
লুলু আম্মানসূরা |