চিন্তা-চেতনা-বিবেক

 

ছবিঃ প্রতীকী


মহান আল্লাহ মানুষকে চিন্তা করার ক্ষমতা দিয়েছেন। চিন্তা ভাবনা বিবেক দিয়ে চলার শক্তি দিয়েছেন, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন। আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে চাইলেও বিবেক আপনাকে চিন্তা করার জন্য তাড়িয়ে বেড়াবে।

 

ইদানিং মাথার মধ্যে শুধু একই চিন্তা "নতুন স্বাধীন দেশ"- নিত্যনতুন ফরমান জারি হচ্ছে, কখন কি ফরমান এলো জানার জন্য সারাদিন শুধু সংবাদ খুঁজে বেড়াই। সংবাদ অন্বেষণে সারা পৃথিবীর সংবাদ মাধ্যমের খবর দেখতে দেখতে ভোররাতে ঘুমাই। হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে আবার খুঁজি। চমকপ্রদ বা গুরুত্বপূর্ণ খবর পেয়ে গেলে সেদিনের ঘুম হারাম। জীবনের অন্য কাজগুলো জরুরী হলেও তা পেন্ডিং থাকতে থাকতে তামাদি হয়ে যাচ্ছে!

এরপর আছে আজ এ কেলেঙ্কারী তো কাল ও কেলেঙ্কারী।
আজ এখানে তো কাল সেখানে প্রতিনিয়ত লেগেই আছে সহিংসতা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম। এটা যেন
মানুষের নিত্যকর্মে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ বিগ্রহ তো লেগে আছেই। কবে যে সত্যিকারের
স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে মানুষ!


আল্লাহ মানুষ বানিয়ে দুনিয়ায় পাঠিয়েছিলো, কিন্তু
আমরা কেউ হয়েছি কালো, কেউ সাদা। কেউ হিন্দু, কেউ মুসলিম, ইহুদী, খৃষ্টান, জৈন, বৌদ্ধ,
শিখ, হাজং, মার্মা, মগ, ত্রিপুরা ইত্যাদি নানা জাতি, ধর্ম, গোত্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছি।
আবার একই ধর্মে হাজারো মতপথ। কি যে একটা দ্বন্দ্ব বিধন্দ্ব পৃথিবীতে - কোনো নিয়ন্ত্রণ
নাই। আল্লাহ আইন জারি করে রেখে দিয়েছে, না মানলে শেষ বিচারে ফয়সালা। একদিনেই সব বিচার।

 

পৃথিবীতে পুলিশ মিলিটারী দিয়েই আইন নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, সেখানে আল্লাহর আইনের বিচার- সে তো কেয়ামতের দিন! সবার মাঝে এমন ভাব, যা করে আল্লাহ, এখন যা করার করে নেই। লাষ্টে একটা তওবা করে আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নেবো। আল্লাহ তো আর বন্দুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে না!


           ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষের একটি নমুনা

          (শুক্রবার ০৮ আগষ্ট ২৪, চট্টগ্রাম)

 

বললেই তো বলবেন বলছে; পৃথিবীর প্রায় সব মানুষ এমনই। ধর্ম ধর্ম করে চিল্লালেও একে অন্যের ক্ষতি করার সময় ধর্মের কথা স্মরণ রাখে কয়জন? কেউ আবার আল্লাহর আইন কায়েম করতে জান কোরবান করতেও রাজি। অন্য ধর্ম তো নস্যি, নিজেদের মতের সাথে না মিললে স্বধর্মের লোকেরাও ‘কাফের’। অথচ আল্লাহ পার্মানেন্ট আইন জারি করে রেখেছেনঃ


“তোমরা আল্লাহর পথে সেই লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, কিন্তু সীমা অতিক্রম করো না। আল্লাহ নিশ্চয়ই সীমা অতিক্রমকারীকে ভালবাসেন না।“ - (সুরা বাকারাঃ আয়াত-১৯০)

 

রাত পোহালেই আমরা একে অন্যের দোষ ত্রুটি অন্বেষণেই অধিক সময় ব্যয় করি– নিজের মধ্যে সে দোষ বিরাজমান থাকলেও। এক মতের লোক ভিন্নমতের লোকের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করি, যাচ্ছেতাইভাবে গালিগালাজ করি। কখনো ভেবে দেখি না আমার মধ্যে সে দোষত্রুটি আছে কিনা। আবার রাষ্ট্রক্ষমতা পেলে প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে নিত্য নতুন মনগড়া ফরমান জারি করি- যদিও আমরা উভয়েই নিজেদেরকে ধার্মিক মনে করি। অথচ আল্লাহ এ ব্যাপারেও পার্মানেন্ট আইন জারি করে রেখেছেনঃ

 

“হে মু’মিনগণ! কোন সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে উপহাস না করে, হতে পারে তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম। আর নারীরা যেন অন্য নারীদেরক উপহাস না করে, হতে পারে তারা উপহাসকারিণীর চেয়ে উত্তম। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করনা এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকনা; ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরণের আচরণ হতে নিবৃত্ত না হয় তারাই যালিম।“ – (সুরা আল-হুজুরাত- আয়াত-১১)

 

আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুক। আমীন।

 






Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url