মানবিক বকপাখি

 
ছবিঃ প্রথম আলো

পশুপাখি পেয়ে যাচ্ছে মানুষ চরিত্র আর মানুষ হয়ে যাচ্ছে পশু!

 

**বিক্রির জন্য সাদা বকের ছানা নিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর বাজারে বসেছিলেন এক বিক্রেতা। ছানাটি দেখে মায়া হয় ওই বাজারের ফল বিক্রেতা আতাউর রহমানের। কেউ কিনে খেয়ে ফেলতে পারে—এ আশঙ্কায় আগেভাগে গিয়ে ছানাটি কিনে নেন আতাউর। উড়তে পারতো না ছানাটি।

 

**আতাউরের ইচ্ছে ছিলো, বাড়ি গিয়ে কিছুটা শুশ্রূষা করে উড়তে পারলেই ছেড়ে দেবেন। কিন্তু ধীরে ধীরে বকের ছানাটি তাঁর পরিবারের স্থায়ী সদস্য বনে গেছে। সারাদিন উঠোনে ঘুরে বেড়ায়।

 

**আতাউর মাঝেমধ্যে তাঁর ফলের দোকানে নিয়ে যান ছানাটিকে। সেটিকে ঘিরে আশপাশের দোকানি এবং ক্রেতাদের কৌতূহল চোখে পড়ার মতো।

 

**আতাউর বলেন, ‘প্রায় পাঁচ মাস আগের ঘটনা। বাজারে গিয়ে ফলের দোকান কেবল খুলেছি। হুট করে দেখি একজন বকের ছানাটি নিয়ে বসে আছে ক্রেতার আশায়। মায়া হলো। সেটি কিনে নিলাম। বাড়ি ফেরার সময় ১০০ টাকার মাছ কিনে নিলাম ছানাটিকে খাওয়াবো বলে। বাড়ি ফেরার পর ছানাটি দেখে আমার সন্তানদের সেকি উল্লাস!’ তিনি বলেন, ‘ছানাটি এখন তাঁর পরিবারের সদস্য। বাড়ি ছেড়ে যায় না পাখিটি। বাড়িতে থাকা প্রত্যেক সদস্যকে পাখিটি চেনে। তাই গাছে থাকলেও ইচ্ছা হলেই এটি তাঁর ঘরের বারান্দায় উড়ে আসে’।

 

সবচেয়ে বেশি সখ্য তাঁর (আতাউর) সঙ্গে। একদম ছোট বয়সে কিনে এনে মাছ খাইয়ে ছানাটিকে বড় করছেন তিনি। দোকানে আসার সময় প্রায়ই আতাউরের সঙ্গে পাখিটি দোকানে যাত্রা করে। দোকানের আশপাশে ঘুরে বেড়ায়। বকটি রাতে তাদের ঘরের ভেতরেই থাকে।

 

**বকটিকে দোকানে রেখে আতাউর একবার বাইরে গিয়েছিলেন। এরমধ্যে এক ব্যক্তি কৌতূহলবশতঃ দোকানের ফল ধরতে গেলেই বকটি তেড়ে আসে। আতাউর ফিরে এলে বক ছানাটি উড়ে গিয়ে তাঁর কোলে বসে পড়ে।

 

**এতে কোনো অপরাধ হচ্ছে কিনা- এ ব্যাপারে জেলা বন্য প্রাণী অপরাধ দমন কর্মকর্তাদের অভিমত, ‘পাখিটি যেহেতু উন্মুক্ত থাকছে, তাই এখানে কোনো আপত্তি নেই। আবদ্ধ অবস্থায় রাখা ঠিক হবে না’।

 

প্রথম আলো থেকে সংগৃহীত

(আংশিক পরিমার্জিত)


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url