জেন-জি (Gen-Z) প্রজন্ম
গুগল থেকে সংগৃহীত |
জেন-জি বা Gen-Z কারা এবং কি এদের বৈশিষ্ট
জেনারেশন জেড (Generation Z) হলো সেই প্রজন্ম যারা ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের
মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে। এরা "ডিজিটাল নেটিভ" নামে পরিচিত, কারণ জন্ম
থেকে তারা প্রযুক্তির সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। স্মার্টফোন, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া
এবং ভার্চুয়াল বাস্তবতার মতো প্রযুক্তি এদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
জেনারেশন জেড-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তাদের প্রযুক্তি-নির্ভরতা। তারা
ইন্টারনেটকে শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং শিক্ষার, কাজের এবং সামাজিক যোগাযোগের
অন্যতম প্রধান প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে। পাশাপাশি এ প্রজন্ম উদ্ভাবনী
মানসিকতা এবং দ্রুত পরিবর্তিত বিশ্বে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতায় দক্ষ।
তারা বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে অত্যন্ত সচেতন, যেমন জলবায়ু পরিবর্তন,
সাম্যতা, মানবাধিকার ইত্যাদি। সামাজিক ন্যায়বিচার এবং পরিবেশগত দায়িত্ব সম্পর্কে
তারা স্পষ্ট অবস্থান নেয়।
জেনারেশন জেড প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে বিকল্প শিক্ষার দিকে বেশি
আগ্রহী। অনলাইন শিক্ষা, কোডিং, এবং নতুন দক্ষতা অর্জন তাদের পছন্দ। কর্মক্ষেত্রে এ
প্রজন্মের কর্মীরা সাধারণত নমনীয়তা, কাজের ভারসাম্য এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে
অগ্রাধিকার দেয়। তারা উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি-নির্ভর সমাধানের জন্য পরিচিত।
যদিও জেনারেশন জেড প্রযুক্তি-নির্ভর এবং উদ্ভাবনী চিন্তাসম্পন্ন, তবে তাদের
সামনে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে তারা মানসিক
স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়তে পারে, যেমন হতাশা এবং একাকীত্ব। তবে এ প্রজন্ম
প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও খুঁজে নিচ্ছে, যা ভবিষ্যৎকে নতুন
দিশা দিতে পারে।
জেনারেশন জেড এমন একটি প্রজন্ম যারা প্রযুক্তির সঙ্গে হাত ধরে ভবিষ্যৎকে
নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গি, সামাজিক সচেতনতা এবং প্রযুক্তিগত
দক্ষতা বিশ্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এ প্রজন্মের সঠিক দিকনির্দেশনা ও সমর্থন
ভবিষ্যৎ সমাজকে আরও উন্নত ও মানবিক করে তুলতে পারে।
যা দেখতে পাচ্ছি
সংগৃহীত |
চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি একটা অস্থির প্রজন্ম
তৈরি হচ্ছে আমাদের সামনে।
এই প্রজন্মের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য
নাই। এদের আদর্শিক কোনো উচ্চাকাঙ্খা নাই। পরিস্কার কোনো মিশন নাই।
এরা বই পড়ে না, খবরের কাগজ পড়ে না। আউটডোর খেলাধুলায় অনীহা।এরা রোদে হাঁটতে চায় না, বৃষ্টিতে ভিজতে চায় না, কাঁদামাটি, ঘাস, লতাপাতায় এদের এলার্জি। এরা ৫ মিনিটের গন্তব্যে যেতে আধঘন্টা রিকশার জন্য অপেক্ষা করে।
এরা অস্থির, প্রচণ্ড রকম অস্থির এক প্রজন্ম। এরা সিনিয়রদের সালাম দেবে না। পাশ কাটিয়ে হনহন করে চলে যাবে। অথবা গা ঘেষে পা পাড়া দিয়ে চলে যাবে। সরি বলার প্রবনতা এদের মধ্যে নেই। এরা অনর্থক তর্ক জুড়ে দেবে। না পাবেন বিনয়ী ভঙ্গি, না পাবেন কৃতজ্ঞতাবোধ। নিজে দোষ করলেও উল্টো ক্ষতিগ্রস্থ বা ব্যথিত ব্যক্তিকে দু’কথা শুনিয়ে দিয়ে চলে যাবে।
এদের অবিনয়ী আচরণ, সদম্ভ চলাফেরায় আপনি ভয়ে কুকড়ে থাকবেন। সংযত হওয়ার উপদেশ দিতে চাইলেই বিপদ। নাজেহাল হওয়ার সম্ভাবনা অধিক। আপনি বাসে চড়েছেন, দেখবেন খালি সিটটার দখল পেতে সবচেয়ে জুনিয়র ছেলেটা বেশি প্রতিযোগিতা করবে। আপনাকে ধাক্কাটাক্কা দিয়ে সটান বসে পড়বে।
বলছিলাম এই জেনারেশনের কথা। সবচেয়ে ভয়াবহ মানহানিকর কথা, যে বৈঠকে এই প্রজন্মের ছেলেদের দাঁড়িয়ে থেকে মুরব্বীদের জায়গা করে দেয়ার কথা, সেই বৈঠকে তারা নিজের জন্য চেয়ার খুঁজে নিতে মরিয়া। যেখানে চুপ থাকার কথা, সেখানে জ্ঞান দিতে চেষ্টা করে।
এরা সারারাত অনলাইনে থাকে, সারা সকাল ঘুমায়। এরা সূর্যোদয় দেখে না, সূর্যাস্ত দেখে না। সূর্যোদয়ে বিছানায় থাকে, সূর্যাস্তে মোবাইলে। এরা ফার্স্টফুডে আসক্ত। আউটডোর এদের পছন্দ না, এরা ইনডোরে স্বস্তি পায়। নিদৃষ্ট করে বললে মূলত অনলাইন গেম এদের কাছে অগ্রগন্য।
এ প্রজন্ম ইতিহাস পড়ে না। সাহিত্যের ধারেকাছেও যায় না। এরা নজরুল চেনে না, রবীন্দ্রনাথ চেনে না। শেখসাদী, রুমি, হাফিজ তো বহু অচেনা প্রসঙ্গ।এরা মানুষের প্রাকৃতিক অভ্যেস- হাঁটা, দৌড়ানো পছন্দ করে না। গাছে চড়তে জানে না, সাঁতার জানে না, সাঁতার শেখার প্রতি আগ্রহ নেই বললেই চলে। এদের নাটক-থিয়েটার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রতি আগ্রহ নাই। এদের একটাই যোগ্যতা, স্মার্ট ফোন দ্রুত ব্রাউজ করতে পারা৷
এদের না আছে মূল্যবোধ, না আছে শ্রদ্ধাবোধ, না আছে শৃঙ্খলাবোধ। কখন চলতে হবে, কখন থামতে হবে, কখন বলতে হবে, কখন শুনতে হবে এরা জানে না।
(আংশিক সংগৃহীত)