গণহত্যা ১৯৭১- রাজবাড়ীর গনহত্যা (দ্বিতীয় পর্ব)

 

শহীদ জিতেন্দ্র কর

১৯৭১- মে মাসের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে সাদা শাড়ি পরা এক অচেনা মহিলা বাসায় ঢুকলেন। পর মূহুর্তেই চিনতে পারলাম আমাদের পাড়ার জিতেন্দ্র কাকুর স্ত্রী। আমি কাকিমা বলেই ডাকি। কাকিমা ১১ সন্তানের জননী, কোনো ছেলে সন্তান নাই। আমাদের রাইস মিলে ধান গম ভাংগানোর জন্য আসতেন, সাথে কখনো কোনো মেয়েকে নিয়ে আসতেন। 


জিতেন্দ্র কাকু রাজবাড়ী শহর থেকে ৩/৪ মাইল পশ্চিমে বানিয়াবহ গ্রামে নিজের জমিজমা দেখাশোনা করতেন। বছরের বেশির ভাগ সময়েই জিতেন্দ্র কাকু গ্রামের বাড়িতে থাকতেন । অনেক জমি ছিল গ্রামের বাড়িতে। যুদ্ধের একবছর আগে রাজবাড়ী শহরে আমাদের পারায় বড়পুল এলাকায় নুতন বাড়ি করেছেন। আমাদের বাড়ির থেকে ১০০ গজ হবে উনাদের বাড়ি (বসুন্ধরা সিনেমা হলের ঠিক পিছনের বাড়িটা)।


আজ হঠাৎ করে কাকীমাকে  বিধবাদের মতো সাদা শাড়ি পরা এবং সেই সাথে সিঁদুর ও শাঁখা বিহীন দেখে একটু অবাকই হয়েছি। আব্বা-মা দুজনেই তাদের ঘরের বারান্দায় বসা ছিলেন, রোজী ঘরের ভিতরে ছিল, মনিদা অন্য ঘরে, আর আমি বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমার আরও ৫ ভাই গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। 


কাকীমা আব্বাকে আদাব জানিয়ে কেঁদে ফেললেন। আব্বা-মা ঘরের বারান্দায় চেয়ারে বসে ছিলেন। মা তারাতাড়ি কাকিমাকে হাত ধরে আরেকটি চেয়ারে বসতে দিলেন। কাকীমা কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে থাকলেন। বুঝতে পারছিলাম কিছু একটা অঘটনের কথা শুনবো। এরপর আব্বার দিকে তাকিয়ে বললেন, "আপনার ভাই (জিতেন্দ্র কর) আর বেঁচে নাই"। 


কিছুক্ষণ সবার মুখে কোনো কথা নাই। আব্বা ঘটনা শুনতে চাইলে কাকীমা বললেন, "২১শে এপ্রিল রাজবাড়ী শহরে পাকসেনারা আসার আগ মূহুর্তে আমাদের গ্রামের বাড়িতে চলে যাই। বাড়িতে কয়েক পুরুষ ধরে বসবাস। অথচ মিলিটারি আসার পর থেকেই কিছু স্বাধীনতা বিরোধীরা আপনার ভাইকে (জিতেন্দ্র কর) "মুসলমান" হওয়ার জন্য বারবার চাপ দিতে থাকে। তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। কয়েক পুরুষ ধরে যে ধর্মের সাথে সম্পৃক্ততা, কি করে আজ তিনি অন্য ধর্ম গ্রহন করবেন! 


গৃহস্থ বাড়ি, অনেক গুলো গরু ছিল, চোখের সামনে সব গরু নিয়ে গেল, কিছুই বলতে পারলামনা। তিন মেয়ে বড় হয়েছে, সব মিলে ভিটেমাটিতে থাকাটা বিপদজনক হয়ে পড়লো। আত্মীয়স্বজনের পরমর্শে আপনার ভাই (জিতেন্দ্র কর) আমার বাবার বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। সাথে নিয়ে গেলেন আমাদের বড় তিন মেয়েকে। সব চেয়ে ছোট মেয়ে যুদ্ধের প্রথম দিকে জন্ম নিয়েছে, তাই আমার পক্ষে বাবার বাড়ি যাওয়া সম্ভব হলোনা"। 


আব্বা বললেন," আপনার বাবার বাড়ি কোথায়"? কাকীমা বললেন, "রাজবাড়ী শহর থেকে ১২/১৩ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে মুলঘর ইউনিয়নের এরান্দা গ্রামে"।


কাকীমার বড় মেয়ে গীতাদি'কে আমি চিনি। স্বাধীনতা পরে গীতাদি'র মুখেই শুনছিলাম তার বাবার হত্যার বর্ননা। গীতাদি তার বাবার হত্যা কান্ড সম্পর্কে যেভাবে বলেছিলেন তাই তুলে ধরলাম।


"আমাদের বানিয়াবহ বাড়িতে থাকাটা খুবই বিপদজনক হয়ে পড়লো। এপ্রিলের শেষের দিকে বাবা আমাকে, মেজো বোন ইরা কর ও সেজো বোন  ভক্তি কর'কে নিয়ে পালিয়ে দাদু (নানা) বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন। আমার বয়স তখন ১৯ আর ছোট দুই বোনের বয়স যথাক্রমে দেড় বছরের ছোট বড়। যাওয়ার সময় মার যাতে কষ্ট না হয় তার জন্য ছোট বোনের বড়টাকে সঙ্গে নিলাম। নাম তার বেবি কর, বয়স তখন দেড় বছর। 


রাতের অন্ধকারে একটি ছইযুক্ত নৌকায় উঠলাম। কেউ দেখে ফেলে কিনা সেই ভয় ছিল সবসময়। পিছনে রেখে আসলাম মা আর ছোট ছোট বোনদের। বানিয়াবহ থেকে দক্ষিণে ১২/১৩ মাইল হবে আমার দাদু বাড়ি। অনেক ভয়ে ভয়ে এরান্দা গ্রামে এসে পৌঁছালাম। দাদু বাড়ি যেয়ে দেখি অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন, প্রায় দুইশত হবে। গোয়ালন্দ, খানখানাপুর, বসন্তপুর, শিবরামপুর বিভিন্ন জায়গা থেকে কাছের ও দূরের আত্মীয় স্বজনরা এসেছেন প্রানের ভয়ে। 


দাদু বেঁচে আছেন তবে বৃদ্ধ। দুই মামা মাঝ বয়সী এবং সুস্থ আছেন। একান্নবর্তী পরিবার, সচ্ছলতার সাথেই সবাই মিলে ভালোই ছিলেন। দাদু একসময় জমিদারের নায়েব ছিলেন। অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল ও মানুষের প্রতি আন্তরিক ছিলেন। তাই এই দুঃসময়ে কাউকে না বলতে পারেন নাই, সবাইকে আশ্রয় দিয়েছেন। দাদুর বাড়িটা ছিল অনেক বড়। নিজস্ব পুজা মন্ডপে দুর্গা পূজা, কালী পূজা হতো। এক কথায় অভিজাত পরিবার। 


যে ভয়ে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে দাদু বাড়ি গেলাম, কিন্তু সেখানেও দেখি একই অবস্থা। প্রায় প্রতিদিনই শুনি রাজাকার ও পাকিস্তান পন্থী কিছু বাংগালী মুসলমান আমাদের বাড়ি ও গ্রামের হিন্দু বাড়ি আক্রমণ করবে। যেই শুনি আক্রমণ করার জন্য আসছে দৌড়ে পাশের গ্রাম মল্লিক পাড়ায় অথবা কোনো জংগলের ভিতর আশ্রয় নিতাম। যখন শুনি চলে গেছে আবার ফিরে আসতাম। মল্লিক পাড়ার মানুষজন ভালো ছিল। আমাদের নিরাপত্তার জন্য সহযোগিতা করেছেন সবসময়। এই ভাবে দাদু বাড়িতে ভয়ংকর ভয়ের মধ্যে দিন কাটাতে লাগলাম। 


৫ ই মে দুপুরে কয়েকশত স্বাধীনতা বিরোধী মুসলিম লীগ, জামাত ও রাজাকারা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাদু বাড়িতে আক্রমণ করলো। কেউ স্নান করছিল, কেউ ভাত খাচ্ছিলো, কারও  খাওয়া শেষ হয়েছে মাত্র, ভয়ে সবাই দিকবিদিক ছুটতে লাগলো। দেড় বছরের ছোট বোনকে বুকে চেপে আমি ছুটতে লাগলাম। কোথায় যাচ্ছি জানিনা, শুধু দৌড়াচ্ছি। 


মামীর চিৎকার শুনে পিছনে ফিরে দেখি মামীর শাড়ী খুলে ফেলেছে, ব্লাউজ ও পেটিকোট পড়া অবস্থায় মামী দৌড়াচ্ছে। ওই দৃশ্য দেখার পর আমি আরও জোরে ছুটতে লাগলাম। কিন্তু আমি জানিনা আমি কোথায় যাচ্ছি। 


আমার ছোট দুই বোন ও বাবা কোথায় আছে জানিনা। ছোট বোনকে বুকে চেপে উর্ধশ্বাসে দৌড়াতে লাগলাম। দেড় বছরের ছোট বোনটা ভয়ে কাঁদতে লাগলো। এইভাবে কতক্ষণ ছুটেছি জানি না, দৌড়াতে দৌড়াতে পাশের গ্রাম মল্লিক পাড়ায় একটি বাড়ির ছাপড়া ঘরে লুকিয়ে পড়লাম। 


কিছু পরেই দেখলাম আমার মাসীও হাঁপাতে হাঁপাতে ঘরে ঢুকলো। মাসী যে কোনদিক দিয়ে আসলো বুঝতে পারি নাই। হাঁপিয়ে গেছি, জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে লাগলাম আর ছোট বোনকে শান্ত করলাম। মামীর সাথে কথা নাই চুপ করে আছি, প্রচন্ড জলপিপাসা লেগেছে। হঠাৎ উঠানে বেশ কিছু মানুষের পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলাম। এরপর চিৎকার করে বলতে লাগলো, কে ঢুকেছে এই বাড়িতে, বের হয়ে আয়। 


আমি ভয়ে কাঁপছি, ভাবলাম ঘরে যদি ওরা ঢুকে পড়ে তাহলে আরও বড় বিপদ হতে পারে। আমি দ্রুত বেরিয়ে উঠানে এসে দাঁড়ালাম, সাথে মাসী। ওরা আমার ও মাসীর গলায় ছুরি ধরলো। ভয়ে থরথর করে কাঁপছি। আমার শরীরে যাতে হাত না দিতে পারে তাই শাড়ির আঁচল ছুড়ে দিলাম একটু দূরে। আঁচলে বাধা ছিল এক ভরি স্বর্নের বোতাম। বাবা পাঞ্জাবিতে সোনার বোতাম ব্যাবহার করতেন। ভয়ে ছোট বোনকে বুকে চেপে ধরে অন্য দিকে তাকিয়ে আছি। বোতাম গুলো খুব শক্ত করে আঁচলে বাঁধা ছিল। ওরা আমার আঁচলের স্বর্নের অংশ টুকু ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে নিয়ে যায়।


আধা ঘণ্টার মধ্যে আমার দুই বোন ও কিছু আত্মীয় স্বজন এই বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে বাবা সহ অন্যদের খোঁজ খবর নিতে লাগলাম। ততক্ষণে মল্লিক পাড়ার এই বাড়িতে গ্রামের মানুষ ও আত্মীয়স্বজন অনেকেই এসেছেন। দাদু বাড়ি সহ আশেপাশের সব হিন্দু বাড়ি ঘরে ঢুকে রাজাকার ও পাকিস্তানের সমর্থকরা সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। ঘরে কোনো কাপড়চোপড় হাঁড়ি বাসনপত্র কিছুই রেখে যায় নাই। 


সবাই সব কিছু খোয়ানোর পর এখন আত্মীয়স্বজনদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। আমিও পরিচিত মানুষদের কাছে বাবার খোঁজ করতে লাগলাম। কেউ তেমন কোনো কথা বলতে চাইছে না। অবশেষে একজন বললো, বাড়িতে আক্রমণ হওয়ার সময় তোমার বাবা খরের পালার নিচে পালিয়ে ছিল। রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীরা তোমার বাবাকে টেনে ছেঁচড়ে বের করে গলায় ও পেটে কোপ দিয়েছে। একথা শুনে চিৎকার দিয়ে আমি সহ আমার ছোট দুই বোন কাঁদতে লাগলাম। আমি তখনও বুঝি নাই বাবা মারা গেছে। কিন্তু আমার মেজ বোন কাঁদতে কাঁদতে বললো দিদিরে আমার মনে হচ্ছে বাবা বেঁচে নেই। পরে সত্যিই জানতে পারলাম বাবা নেই, সেই সাথে দাদু বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া কালিপদ নামে এক ব্যক্তিকেও হত্যা করেছে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার ও জামাত, মুসলিম লীগের নেতাকর্মীরা। মারাত্মক ভাবে জখম করেছে ওই বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া আরেকজনকে, সে চিকিৎসাধীন আছে। 


বাবার লাশ পড়ে ছিল বাড়ির উঠানে। আমার ছোট দুই বোন বাবাকে দেখার জন্য যেতে চাইছিল। কিন্তু কেউ যেতে দিতে চাচ্ছিলেন না। সবাই বলাবলি করছে ওরা আবারও আসবে আগুন দিতে। সেই ভয়ে আমরা কেউ বাবাকে দেখতে যেতে পারিনাই। 


রাত হয়ে আসলো সারাদিন না খাওয়া। ছোট বোনটিকে কিছুই খেতে দিতে পারি নাই। যে বাড়িতে দৌড়ে উঠেছিলাম গরীব হতে পারে কিন্তু খুব সহযোগিতা করেছে। শুধু এই বাড়ির মানুষেরাই নয় ওই মল্লিক পাড়ার সব মানুষই আমাদের সাথে ভালো ব্যবহার ও সহযোগিতা করেছেন। রাতে আমাদের খাবারের জন্য ফেনা ভাত রান্না করেছিল। কিন্তু কিভাবে খাই, বাবার লাশটা পড়ে আছে বাড়ির উঠানে, দেখার কেউ নেই।


পরের দিন ৬ই মে সকালে মল্লিক পাড়া থেকে দাদু, মামা, মামী সহ আমরা সবাই গ্রামের মায়া ত্যাগ করে বাবার লাশ ফেলে এক কাপড়ে ভারতের পথে রওয়ানা দিলাম। আমাদের তিন বোনের কাছে কোনো টাকাপয়সা ছিলনা। কোথায় যাচ্ছি কিভাবে যাব কিছুই বুঝতে পারছি না, শুধু দলের সঙ্গী হয়ে হাঁটছি পশ্চিম দিক বরাবর। এভাবেই হাঁটতে হাঁটতে লক্ষ্মণদিয়া নামক এক ভর গ্রামে দুদিন থাকলাম। ওখানেও রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীরা হিন্দু বাড়ি-ঘরে আগুন দিল। 


এখানে নিরাপদ নয় মনে করে দ্রুত আবার রওয়ানা দিলাম ভারতের পথে। আরও কিছু মানুষ আমাদের সঙ্গী হলো। হাঁটতে হাঁটতে নলিয়া জামালপুরের কাছাকাছি যেয়ে দেখি অনেক বাড়ি ঘরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। আগুনে জ্বলছে তার পাশ দিয়েই আমরা অতিক্রম করছি। 


শতশত মানুষ বলা যায় একরকম নিঃশেষ হয়ে ভারতের পথে হাঁটতে লাগলেন। আমরাও ওই বিশাল শরনার্থী দলে শামিল হলাম। ক্লান্ত শরীরে হাঁটছি আর হাঁটছি। বয়স্ক ও শিশুদের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। রাত হলেই আমরা স্কুল ঘরে আশ্রয় নিতাম। 


খাওয়া-দাওয়ার অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। কখনো খিচুড়ি বা ফেনা ভাত রান্না করে খেতাম। অনেক সময় এটাও জুটতো না, মুড়ি আর পানি খেয়ে সারাদিন কাটাতাম। এইভাবে হাঁটতে হাঁটতে যশোর এলাকায় প্রবেশ করলাম। 


যশোর এলাকায় মানুষজন আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে।  গ্রামবাসীরা গুড়ের শরবত বানিয়ে খেতে দিত। এইভাবে ১২/১৩ দিন হাঁটতে হাঁটতে সম্ভবত কুষ্টিয়ার শিকারপুর বর্ডার দিয়ে ভারতের মাটিতে প্রবেশ করলাম। পিছনে ফেলে আসলাম মৃত  বাবার লাশ, আর মা সহ ছোট ছোট সাতটা বোনকে। 


ভারতের শরনার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়ার ১৫ দিন পরে মা সহ ছোট ছোট সাতটা বোনের সাথে ওই ক্যাম্পে দেখা হলো। সে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। 


বাবার লাশ তিনদিন পড়ে ছিল বাড়ির উঠানে। তিনদিন পর বাবার লাশ গ্রামের কিছু মানুষ যেনতেন ভাবে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। দুঃখ একটাই বাবার মৃতদেহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষকৃত্য করতে পারলামনা"।

লেখা: বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির আহমেদ (রাজবাড়ী)

নাসির আহমেদ

লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url