ছাত্র জনতার আন্দোলন পরিকল্পিত ড্রাগ এ্যাটাক : ভয়াবহ ঝুঁকিতে আমাদের সন্তান ও দেশ!
"বাংলাদেশকে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের মতো 'নারকো-স্টেটে' পরিণত করার আয়োজনের কাজ শুরু হয়েছে। এই কারণেই আসছে নানা হুংকার। কারণ 'নারকো-স্টেটে' ক্যাপ্টাগন নামের ভয়ঙ্কর মাদক ব্যবহার করা হয়। কয়েক বছর ধরে চোরাচালানের মাধ্যমে আমদানি শেষে ২০২৪ সালের জুলাই আগস্ট মাসে বাংলাদেশের মাদ্রাসা ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি স্কুলের ইয়াং ছেলে মেয়েদের মাঝে এই ক্যাপ্টাগন ড্রাগের/ওষুধের ব্যাপক ব্যবহার হয়। বিশেষ করে তথাকথিত আগস্ট বিপ্লবের সময়। যে কারণে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হতো ‘একটা গুলি করলেও অন্যরা সরে না। মনে হয় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত’। আসলে তারা ধর্ম রক্ষার জন্য এটা করে না। কেন এমন করে? কারণ ক্যাপ্টাগন ট্যাবলেট খেলে তার আর নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না, ক্লান্তি, অবসাদ কিছুই থাকে না একটা লম্বা সময়ের জন্য।
আপনারা হয়তো খবরে দেখেছেন যে, বাংলাদেশের মেয়েরাও জুলাই আগস্ট মাসে অস্ত্র হাতে মানুষ হত্যায় লিপ্ত ছিল। বেপরোয়া জীবন যাপন করেছে, অনেকটা আইএস সেবাদাসীদের মতো। আসলে তারা ক্যাপ্টাগন খেয়ে এটা করেছে। এই ওষুধ মানে "ক্যাপ্টাগন" খেলে শুধু মাঠে যুদ্ধই না, তারা একনাগাড়ে অনেকের সাথে ব্যাপক যৌন-ক্রিয়ায় মিলিত হতে পারে, কোন ক্লান্তি আসে না, তাই তথাকথিত জেন-জি #Gen_Z যুবক যুবতিদের মাঝে এটি অনেক জনপ্রিয়।
এই ক্যাপ্টাগন বড়ি খেয়ে ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধারা একসময় রাতদিন যুদ্ধ করতো। এই ভয়ংকর মাদকের ব্যবসা এখন শুধু সিরিয়ায় নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে দেয় ভয়াবহ দুর্ভোগ। চোরাচালানের মাধ্যেমে এই ক্যাপ্টাগন এখন বাংলাদেশে আছে। বিশেষ ব্যবস্থায় এটার বড় চালান আবার বাংলাদেশ আনার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
সিরিয়া ও লেবাননে অত্যন্ত সস্তায় উৎপাদিত হয় এই ক্যাপ্টাগন। বলা হয় '#গরিবের_কোকেন'। চিকিৎসকরা বলেন, মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার মতো মারাত্মক কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে এই মাদকের।
বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় যে, এই বড়িটি লেবানন ও সিরিয়াতে উৎপাদিত হয়। আর পাওয়া যায় পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়েই।
প্রচণ্ড নেশা সৃষ্টিকারী হিতাহিত জ্ঞান লোপ করা এই বড়িটি বিক্রি করে পাওয়া কোটি কোটি ডলার চলে যায় যুদ্ধ কবলিত সিরিয়ার কালো বাজারে।
এসব অর্থ দিয়ে #জিহাদি যোদ্ধারা নতুন নতুন অস্ত্র কিনতে পারছে, আর জিইয়ে রাখতে পারছে যুদ্ধকেও।
২০১৫ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় এই খবরটি প্রকাশিত হয় বলে বিবিসি দাবি করেছিলো।
খবরে বলা হয়, ক্যাপ্টাগন নামের শক্তিশালী এই ড্রাগ খুব দ্রুত কাজ করে এবং এটি খেয়েই সিরিয়ার যোদ্ধারা ঘুম বিশ্রাম ফেলে দিনে রাতে সর্বক্ষণ যুদ্ধ করতে পারছে।
উল্লেখ্য, আপনারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, তথাকথিত ছাত্র জনতার বিতর্কিত আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ও আমাদের দেশের Gen-Z নামক কিশোর তরুণ প্রজন্ম আন্দোলন শেষে অনেক রাতে বাসায় ফিরে আবার ভোর বেলাতেই বেরিয়ে পড়ত আন্দোলনে শরিক হবার জন্য।
বলা হচ্ছে, নেশা সৃষ্টিকারী এই বড়ি খাওয়ার কারণেই জিহাদিরা কোনো ধরনের বিচার বিবেচনা ছাড়াই নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালাতে পারছে। শুধু একটা নির্দেশ পেলেই তারা সহিংস হয়ে উঠছে।
“এই ড্রাগটি নিলে আপনি ঘুমাতে তো দূরের কথা, চোখও বন্ধ করতে পারবেন না”। বিবিসির একটি তথ্যচিত্রে আরেকজন গ্রহণকারী বলেছেন, এই ট্যাবলেট একবার খেলে আপনি আর কিছুতেই এটা খাওয়া বন্ধ করতে পারবেন না।
“মনে হবে আমি পৃথিবীর শীর্ষে অবস্থান করছি। আমার যে ক্ষমতা তা আর কারো নেই।” বলেন তিনি।
আরেকজন বলেছেন, “ওই বড়ি খাওয়ার পর মনে হয়েছে এই পৃথিবীর আর কেউ আমাকে আক্রমণ করতে পারবে না।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধের কারণে সিরিয়া ড্রাগের সবচে বড়ো উৎপাদনকারী ও ভোক্তা দেশে পরিণত হয়েছে।
ষাটের দশক থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোতে ক্যাপ্টাগন পাওয়া যায়। বিষণ্ণতা কাটাতে তারা এই ওষুধ গ্রহণ করতো। তবে পরে এটি নেশা সৃষ্টিকারী ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করলে বেশিরভাগ দেশেই এটা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এখনও এই ড্রাগ পুরোপুরি উধাও হয়ে যায়নি।
পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধারা এই ড্রাগ প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করছে। সৌদি আরবেও এর ব্যাপক ব্যবহার আছে। ধারণা করা হয় যে সৌদি আরবে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ এই নেশার জন্যে চিকিৎসা নিয়ে থাকে।
বিতর্কিত ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, ছাত্র জনতাকে হিংস্র করার লক্ষ্যে আন্দোলনের সামনে নেতৃত্বদানকারী গোষ্ঠী পানি, শরবত, বিস্কিট বা জুস সরবরাহ করত। যেহেতু শুধু পানি জুস বা শরবত দিলে যে কোন ধরনের সন্দেহ তৈরি হতে পারে, তাই সঙ্গে বিস্কুট বা অন্যান্য খাবার ও সরবরাহ করতো। সরবরাহকৃত সেইসব পানীয়ের সাথে কৌশলে সবার অগোচরে ক্যাপ্টাগন বড়ি মিশিয়ে দিতো। ফলে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী উত্তেজিত পিপাসার্ত ছাত্র জনতা সেই পানীয় গ্রহণে টের পেতোনা তাদের আসলে কি খাওয়ানো হচ্ছে। তারা সহজ ভাবে অন্ধ বিশ্বাসে পিপাসা মেটাতে ক্যাপ্টাগন বড়ি মিশ্রিত পানি গ্রহণ করত। ফলাফল, নিজেদের অজান্তেই তাদের বুদ্ধি বিবেচনা লোপ পেতে শুরু করলে তারা সমন্বয়কের নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে হিংস্রতা প্রদর্শনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতো। ফলাফল সবার জানা।
এই কথাটি বিশ্বাস না হলে, আপনার আশেপাশে পরিচিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কেউ থাকলে, তার কাছ হতে জেনে নিতে পারেন। আশা করি তিনি আপনাকে উত্তরটি দিয়ে দিবেন। তারা সবই জানলেও, ওই পরিস্থিতিতে তাদের কিছুই করার ছিল না। যদি ব্যবস্থা নিতে যেতো তবে অবশ্যই অনেক মায়ের বুক খালি হতো, যেটা তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও চান নি।
বাংলাদেশের ভিতর ঘটে যাওয়া বিতর্কিত ছাত্র জনতার আন্দোলনে শুধু একটা দেশের স্বাধীনতাই ভূলুণ্ঠিত হয়নি, দেশ কে গৃহযুদ্ধের পথে নিয়ে যেতে প্রাথমিক কাজগুলোর একটা হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ভয়ংকর নেশার ব্যবহার। ইতোমধ্যে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের প্রাথমিক পরিকল্পনায় সফল হয়েছে। সরকার পতন করেছে আপনার সন্তানকে দিয়ে, আপনার সন্তানকে নেশাসক্ত বানিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বড় ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা নিয়ে নিশ্চয়ই আপনার ঘরের দরজায় এসে দাঁড়াবে। আপনার সন্তানকে দিয়ে আপনাকে ও আপনার পুরো পরিবারকে ধ্বংস করবে নিশ্চয়ই। যার যথার্থ উদাহরণ ঘটে গেছে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায়। পরিবারের ছোট ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র সাদ তার আপন মা কে হাত পা বেঁধে জবাই করে হত্যা করে ডিপ ফ্রিজের ভিতর ঢুকিয়ে রেখে ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে। ছেলেটি নিজেও বিতর্কিত ছাত্র জনতার আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। আজ ১২ নভেম্বর ২০২৪ আরেক মাদ্রাসা ছাত্র মোবাইল ফোন কিনে না দেয়ায় আত্মহত্যা করে বলে জানা গেছে। এবার আপনার ও আপনাদের সন্তান নিশ্চয়ই একই পথ অনুসরণ করবে।
বৈশোনিবিরোধী আন্দোলনের সাদ বিন আব্দুল আজিজ |
বাংলাদেশে যেভাবে ক্যাপ্টাগন আসছে তাতে আমি, আপনি বা আমাদের সন্তানেরা কেউ নিরাপদ না, নিরাপদ নয় আমাদের দেশও।
সংকলন ও পরিমার্জন
বিশাল মাহমুদ প্রান্ত