তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার
মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'কোটা' আন্দোলনকারীরা |
“রাজাকার” একটি আরবি শব্দ, যার
অর্থ সেচ্ছাসেবী। এটি একটি ধার করা শব্দ হিসেবে উর্দু ভাষায় এসেছে। বাংলাদেশে ১৯৭১
সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানি আধাসামরিক বাহিনী "রাজাকার" থেকে
শব্দটি এ দেশে চালু হয়। স্বাধীনতার পর শন্দটি একটি গালি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পর্যায়ক্রমে
এটি একটি অপমানজনক শব্দে রুপান্তরিত হয়। শব্দটি সাধারণত বিশ্বাসঘাতক বা প্রতারক এবং দেশদ্রোহীদের
উপর প্রয়োগ করা হয়ে আসছে।
গতরাতে রাত বারোটার সময় দেখলাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র- যারা কোটা বিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত, তারা গর্বভরে
বিষয়োল্লেখিত শ্লোগানটি দিচ্ছে!
একটু বুঝতে শেখার পর থেকে অর্থাৎ
ষাট বছর আগে থেকে দেখে আসছি, এই ভূখন্ডের উপর সব সময় নেকড়ের দৃষ্টি। স্বাধীনতার পর
স্বাধীনতার বিরোধিতকারী বিশ্ব পরাশক্তি তার পরাজয়ের গ্লানি সইতে না পেরে যে কোনো উপায়ে
প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ধর্মাশ্রয়ী ও পরাজিত রাজনৈতিক দল এবং পছন্দের সেনা কর্তাদের
মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্র সফল করতে সক্ষম হয়। তাদের মনোনীত সেনা কর্তারা শাসন ক্ষমতায়
গিয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্থহীন করে তোলে। দেশকে একটি কলোনী বানিয়ে ফেলে। দেশ উল্টাপথে
যাত্রা করে।
স্বাধীনতার স্থপতির নাম ও মুক্তিযুদ্ধের
শ্লোগান (মূলতঃ শ্লোগানটি মুক্তিযুদ্ধের আগেই স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনে ব্যবহৃত হয়ে
আসছে) স্বাধীনতাকামীদের কন্ঠনালীতে আটকা পড়ে। উচ্চারণ করলেই প্রাণনাশের আশংকা!
স্বাধীনতার স্থপতির কন্যা ও মুক্তিযুদ্ধের
স্বপক্ষের রাজনীতিবিদরা অনেক ত্যাগের বিনিময়ে দেশকে রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করে ধীরে
ধীরে সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদনের সুযোগ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে
এবং খানিকটা সফলও হয়েছে। এসব দেখে বেনিয়াদের লোলুপ দৃষ্টি পূনরায় শানিত। আবার ষড়যন্ত্রে
মেতে উঠেছে। বিভিন্ন ইস্যু ও বিভিন্ন মাধ্যমকে ব্যবহার করে তারা সে ষড়যন্ত্র সফল করতে
উঠেপড়ে লেগেছে। গত নির্বাচনের সময় থেকে তা জলের মতো পরিস্কার।
পরাজিত শক্তির পরাজয়ের গ্লানিও
মুছবে না। ধারণা করি “কেয়ামত সে কেয়ামত তক” তাদের ষড়যন্ত্র চলতে রহেগা।
আমাদের একশ্রেণীর ছাত্ররা কি
শেষ পর্যন্ত পাক-মার্কিন ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়েছে বা দিতে যাচ্ছে! নইলে এই শ্লোগান
মুখে আসে কিভাবে!