কোরআন অনুযায়ী বিশ্বাস ও সৎকর্ম বেহেশতের আসল চাবি
ছবিঃ প্রতীকী |
আমরা সবাই বেহেশতে যেতে চাই,
কিন্তু কেউ মরতে চাই না। না চাইলেও মরতে হবে। তবে বেহেশতে যেতে চাইলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের
গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে। প্রতিদিন আমরা কায়মনবাক্যে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি;
“চালাও সে পথে যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি”-(সুরা ফাতিহা’র ভাবানুবাদ)। সে সরল
সঠিক পথ আল্লাহ পবিত্র কোরআনে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন। অথচ আমরা কতো দরগা, মাজার, তরিকা,
কতো গোলকধায় পথ ভুলে শত পন্ডশ্রমে ডুবে থাকি। কিন্তু কোরআন পড়ে দেখি না যে স্বয়ং
জান্নাতের মালিক জান্নাতের কি পাথেয় বলে দিয়েছেন।
“দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু দেখা
হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই’পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপরে একটি শিশিরবিন্দু।”
আল্লাহর প্রিয়জনদের তিনি জান্নাতের
চিরস্থায়ী আবাসের সুসংবাদ দিয়েছেন এবং যারা সেই সৌভাগ্যবান তাদের বৈশিষ্ট্যও স্পষ্ট
করে বারবার বলে দিয়েছেন। কিন্তু যারা ঘুমানোর আগে এই দোয়া, গোসলের পর ওই দোয়া পড়ে
ইতিমধ্যেই বেহেশত কনফার্ম করে ফেলেছেন এবং আল্লাহ তার বান্দার কাছে যা চান তা পূরণ
না করে প্রতিদিন বেহেশতের চাবিতে শান দিচ্ছেন আর ভাবছেন, ‘এবার আর বেহেশতে যেতে ঠাকায়
কে!- তাদের জন্য এই লেখাটি কিছুটা আশায় গুড়ে বালি।
জান্নাতের মালিক হচ্ছেন আল্লাহ।
তিনি তার মনোনীত রাসুলের মাধ্যমে কোরআন পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন কারা জান্নাতে প্রবেশাধিকার
পাবে। তো আল্লাহর কথা বিশ্বাস করবেন, নাকি এই দোয়া পড়লে বেহেশতের ৮টি দরজা খুলে দেয়া
হবে, ওই দোয়া পড়লে মা ফাতেমার সাথে জান্নাতে যাবেন, অমুকের ঘাড়ে কোপ দিলে পঙ্খিরাজ
ঘোড়ায় চড়ে বেহেশতে যাবেন- এসব কথা বিশ্বাস করবেন? আল্লাহ এ ‘পাসকোড’ বারবার বলে
তা আমাদের মনমগজে ঢুকিয়ে দিয়েছেন যাতে আমরা কোনোভাবে বিভ্রান্ত না হই।
কোরআনের যতগুলো আয়াতে আল্লাহ
জান্নাত, মহোত্তম পুরস্কার বা প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সব আয়াতে ‘বিশ্বাস
ও সৎকর্মে’র কথা বলেছেন। বিশ্বাস এবং সৎকর্মের পরিস্কার বিবরণও আল্লাহ কুরআনে বলে দিয়েছেন
যে, কি কি বিশ্বাস করতে হবে এবং কোন কোন কাজ সৎকর্মের অন্তর্ভুক্ত।
আমি কেবলমাত্র কোরআনের ভিত্তিতে
আলোচনা করবো। কারণ কোরআন পরিস্কার, পরিপূর্ণ ও বিস্তারিত এবং কোরআন - কোরআন বহির্ভূত
হাদিস, ফেকাহ বা কোন আল্লামা স্কলার-এর মতামতকে শরীয়ার ভিত্তি হিসেবে অনুমোদন দেয়
না। এই নিবন্ধে আলোচনা করবো জান্নাতে প্রবেশাধিকার কারা পাবে। লেখার কলেবর বৃদ্ধি না
করে আমি সংশ্লিষ্ট আয়াতসমূহের কেবল বাংলা অনুবাদ উল্লেখ করবো।
আমি প্রতিটি আয়াতের রেফারেন্স
সহ উল্লেখ করছি। আপনারা ইচ্ছে করলে আন্তর্জাতিক মানের ইংরেজি ও বাংলা অনুবাদ চেক করে
দেখতে পারেন। হাতের কাছে কোরআন শরীফ না থাকলে গুগলের সার্চ বারে সূরার নাম এবং আয়াত
নম্বর লিখলে সব অনুবাদ তাফসীর চলে আসবে- যদিও এই আয়াতগুলো বেশ স্পষ্ট। যাইহোক, কোরআনের
যেসব আয়াতে আল্লাহ জান্নাতের পাথেয় বলে দিয়েছেন সে আয়াতগুলো এক নজরে দেখে নেই।
সুরা বাকারা আয়াত-২৫
“এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে
ও সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে তাদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর যে, তাদের জন্য এমন জান্নাত
রয়েছে যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে-(২:২৫)।”
সূরা বাকারা আয়াত-৮২
“যারা বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ
করে তারাই জান্নাতের অধিবাসী এবং তারা সেখানে চিরকাল বসবাস করবে-(২:৮২)।”
সূরা নিসা আয়াত-৫৭
“আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকাজ করেছে ফলতঃ তিনি তাদেরকে পূর্ণ
প্রতিদান প্রদান করবেন এবং আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেননা-(৩:৫৭)।”
সূরা নিসা আয়াত-১২২
“কিন্তু যারা বিশ্বাস করে এবং
সৎ কাজ করে আমি তাদের জান্নাতে চিরস্থায়ী প্রশাধিকার দেব, যার নিচে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান।
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; বর্ণনাকারী হিসেবে আল্লাহর চেয়ে আর কে বেশি সত্যবাদী-(৪:১২২)।”
সুরা নিসা আয়াত-১২৪
“এবং যারাই সৎ কাজ করে বিশ্বাসী
নারী ও পুরুষ তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তারা খর্জুর দানার কণা পরিমাণও অত্যাচারিত
হবেনা-(3:124)।”
সূরা মায়্যিদা আয়াত-৯
“আল্লাহ অঙ্গীকার করছেন যে যারা
বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহোত্তম পুরস্কার বা জান্নাত-(৫:৯)।”
সূরা ইউনুস আয়াত-৯
“নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করে এবং ভাল কাজ করে, তাদের প্রভু তাদেরকে লক্ষ্য
স্থলে (জান্নাতে) পৌঁছে দিবেন তাদের ঈমানের কারণে, শান্তির উদ্যানসমূহে, তার (বাসস্থানের)
তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ বইতে থাকবে-(১০:৯)।”
সুরা হুদ আয়াত-১১
“কিন্তু যারা ধৈর্য ধারণ করে
এবং সৎ কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহোত্তম পুরস্কার-(১১:১১)।”
সূরা হুদ আয়া-২৩
“নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করে এবং
সৎ কাজ করে এবং প্রভুর অনুগত তারাই জান্নাতের চিরস্থায়ী অধিবাসী-(১১:২৩)।”
সুরা কাহাফ আয়াত-৩০
“যারা বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে নিশ্চয়ই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার
বঞ্চিত হতে দেব না-(১৮:৩০)।”
সুরা কাহাফ আয়াত-১০৭
“নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে তারা তাদের বিনোদনের জন্য
জান্নাতুল ফেরদাউস পাবে-(১৮:১০৭)।”
সুরা হাজ্জ আয়াত-১৪
“নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে আল্লাহ তাদের জান্নাতে প্রবেশাধিকার
দেবেন-(২২:১৪)।”
সুরা হাজ্জ আয়াত-২৩
“নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে আল্লাহ তাদের ঝর্ণাহারা শোভিত
জান্নাতে প্রবেশাধিকার দেবেন-(২২:২৩)।”
সুরা হাজ্জ আয়াত-৫০
“সুতরাং যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য ক্ষমা ও মহোত্তম
প্রতিদান-(২২:৫০)।”
সুরা লুকমান আয়াত-৮
“নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করে এবং
সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে সুখময় জান্নাত-(৩১:৮)।”
সুরা সাবা আয়াত-৪
“যারা বিশ্বাস করে এবং সৎ কর্মপরায়ণ
তিনি তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন। তাদেরই জন্য আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কার(৩৪:৪)।”
সুরা ফাতির আয়াত-৭
“যারা কুফরী করে তাদের জন্য আছে
কঠিন শাস্তি, কিন্তু যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার-(৩৫:৭)।”
সুরা হা’মীম সাজদা (ফুসসিলাত) আয়াত-৮
“যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে
তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার-(৪১:৮)।”
সুরা আশ-শুরা আয়াত-২২
“যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে
তারা থাকবে জান্নাতের মনোরম স্থানে। তারা যা কিছু চাবে তাদের রবের নিকট তাই পাবে। এটাইতো
মহা অনুগ্রহ–(৪২:২২)।”
সুরা জাসিয়াহ আয়াত-৩০
“যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে,
তাদের প্রভু তাদেরকে দাখিল করবেন স্বীয় রাহমাতে। এটাই মহা সাফল্য–(৪৫:৩০)”
সুরা মোহাম্মদ আয়াত-২
“যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ
করে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে বিশ্বাস করে, আর উহাই (কুরআন) তাদের
প্রতিপালকের পক্ষ হতে সত্য; তিনি তাদের মন্দ কাজগুলি ক্ষমা করবেন এবং তাদের অবস্থা
ভাল করবেন-(৪৭:২)।”
এই আয়াতে আল্লাহ অতিরিক্ত যোগ
করেছেন ‘যারা মোহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং এটিই তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে
সত্য’।
সুরা আত-তাগাবুন আয়াত-৯
“যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান
আনে এবং সৎকাজ করে, তিনি তার থেকে তার পাপ মোচন করবেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন
যার তলদেশে নদী প্রবাহিত (জান্নাত) সেখানে চিরকাল বসবাস করবে, এটাই হবে মহান সাফল্য-(৬৪:৯)।”
সুরা আত-তীন আয়াত-৬
“যারা (ইসলামী একেশ্বরবাদে) বিশ্বাস
করে এবং সৎকাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে অন্তহীন পুরস্কার (জান্নাত)-(৯৫:৬)।”
সুরা বাইয়েনাহ্ আয়াত ৭
“নিঃসন্দেহে যারা ঈমান আনে এবং
সৎকাজ করে তারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ-(৯৮:৭)।”
সুতরাং জান্নাতের অধিপতির অনুমোদিত
গাইড অনুযায়ী বেহেশতের চাবি হচ্ছে ‘বিশ্বাস এবং ভালো কাজ’। কিন্তু যারা বাজারের অন্যান্য
অননুমোদিত গাইড পড়ছেন তাদের অনেক কিছুই কমন পড়েনি। পড়ালেখা করলে পরীক্ষায় ফলাফল
ভালো হবে। কিন্তু সিলেবাসের বাইরের জিনিস পড়লে তো পরীক্ষায় কিছুই কমন পড়বে না। বিশ্বাস
ও সৎকাজ করলে ইহুদি খ্রিস্টান যে কেউ জান্নাতে যাবে, এমন অবিশ্বাস্য কথাও কোরআন বলছে।
সুরা বাকারা আয়াত-৬২
“সত্যই! যারা ঈমান এনেছে এবং যারা ইহুদী ও খ্রিস্টান এবং সাবেইয়ান,
যারা আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য তাদের পালনকর্তার কাছে
তাদের পুরস্কার রয়েছে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না-(২:৬২)”-(ইবনে
কাসির-এর অনুবাদের বঙ্গানুবাদ)।
এই আয়াতের রেফারেন্স দিলে অনেকেই
বেশ আশ্চর্য হন যে, এই আয়াত কি হুজুররা পড়েনি! কখনোতো এমন অদ্ভুত কথা শুনিনি। কিন্তু
এই আয়াত তো কারো বানানো না। এটা জলজ্যান্ত কুরআনের আয়াত। অন্য একটি নিবন্ধে ভিন্ন
ধর্মাবলম্বীদের সম্পর্কে কুরআনের ভাষ্য নিয়ে আরো বিস্তারিত লিখেছি।
এবার চলুন দেখে নেই বিশ্বাস এবং
ভালো কাজের তালিকা। যেসবে বিশ্বাস এবং যে সকল ভালো কাজের বিনিময়ে আল্লাহ জান্নাতের
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সুরা বাকারা আয়াত-১৭৭
“তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল পূর্ব
বা পশ্চিম দিকে প্রত্যাবর্তিত করলেই তাতে পুণ্য নেই, বরং পুণ্য তার যে ব্যক্তি আল্লাহ,
আখিরাত, মালাইকা/ফেরেশতা, কিতাব ও নাবীগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁরই প্রেমে
ধন-সম্পদের প্রতি আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও সে তা আত্মীয়-স্বজন,
পিতৃহীন, দরিদ্র, পথিক ও ভিক্ষুকদেরকে এবং দাসত্ব মোচনের জন্য ব্যয় করে, আর সালাত প্রতিষ্ঠিত
করে ও যাকাত প্রদান করে এবং অঙ্গীকার করলে তা পূরণ করে এবং যারা অভাবে ও ক্লেশে
এবং যুদ্ধকালে ধৈর্যশীল তারাই সত্য পরায়ণ এবং তারাই ধর্মভীরু-(২:১৭৭)।”
আয়াতের শুরুতেই আল্লাহর বলে দিচ্ছেন
যে, পূর্ব-পশ্চিমে মুখ ফেরানো সৎকর্ম নয়। পূর্ব-পশ্চিমে মুখ ফেরানো মানে কেবলার দিকে
মুখ ফেরানো। বাংলাদেশ এবং ক্বাবার পূবদিকে যেসব দেশ আছে সেসব দেশের মুসলিমদের কেবলা
পশ্চিমে। অন্যদিকে ক্বাবার পশ্চিমে যেসব দেশ, সেসব দেশের মুসলিমরা পূর্ব দিকে ফিরে
নামাজ পড়ে। এর আরেকটি ব্যাখ্যা আছে। ‘মসজিদে আকসা থেকে ক্বাবার দিকে কেবলা পরিবর্তনের
পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়েছে যে, ‘ক্বাবার দিকে মুখ ফেরানো বা আল আকসার দিকে মুখ ফেরানো
সৎকর্ম নয়’। উভয় ক্ষেত্রে এর অর্থ দাঁড়ায় ‘নামাজ’!
নামাজ অনেক কারণেই বৈশিষ্টমন্ডিত
অতি উত্তম ইবাদত বা প্রার্থনা। কিন্তু নামাজকে আল্লাহ সৎকর্ম বা বেহেশতের চাবি বলছেন
না! “বরং পুণ্য তার যে ব্যক্তি আল্লাহ, আখিরাত, মালাইকা/ফেরেশতা, কিতাব ও নাবীগণের
প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে-(২:১৭৭)”। এখানে আল্লাহ তালিকা দিয়ে দিয়েছেন যে, কি কি বিশ্বাস
করতে হবে, যা আমাদের বিশ্বাস করা বাধ্যতামূলক।
দুঃখজনক যে, অনেকে ধর্মকে বৈজ্ঞানিকভাবে
প্রমাণ করতে চান। আল্লাহ এই কয়টা জিনিস সম্পর্কে ইমান বা বিশ্বাস করতে বলেছেন, প্রমাণ
করতে নয়। আল্লাহ, আখেরাত, ফেরেশতা, নবীগন সম্পর্কে আমাদের যতোটুকু জানিয়েছেন এর বাইরে
আমরা কিছুই জানিনা। এসবকে বৈজ্ঞানিক মানদন্ডে প্রমাণও করতে পারবো না। আল্লাহ আমাদের
জানতে বা প্রমাণ করতে বলেনওনি। আল্লাহ আমাদের এসব সবিস্তারে জানাননি বা জানানোর প্রয়োজন
বা উচিৎ মনে করেননি। আল্লাহ আমাদের বিশ্বাস করতে বলেছেন। অতএব, আমাদের কাজ বিশ্বাস
করা; আল্লাহর অস্তিত্ব, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব প্রমান করে বেড়ানো নয়। যারা নাসার বরাত
দিয়ে কোরআনের বিভিন্ন সত্যতার প্রমাণ দিচ্ছেন, তারা প্রকারান্তরে কোরআনকে নয়, নাসাকেই
সত্যতার মানদন্ড হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাদের কাছে নাসার বিবৃতি এই বিশ্ব-ব্রহ্মান্ডের
শ্রষ্টার বাণীর সত্যায়ন(নাউজুবিল্লাহ!)! তারা বিশ্বাস আর বিজ্ঞানের পার্থক্যই বোঝেনা।
যেটা জানি সেটা হচ্ছে জ্ঞান।
যেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিশেষভাবে বা নিশ্চিতভাবে জানি তা হচ্ছে
বিজ্ঞান। বিশ্বাস হচ্ছে যেটা জানিনা, তবে সত্য বলে মেনে নিয়েছি। তবে জ্ঞানীর বিশ্বাস
আর মুর্খের বিশ্বাসে তফাৎ আছে।
অতএব, আমরা জানলাম কি কি সৎকর্ম
নয় এবং কি কি বিশ্বাস করা বাধ্যতামূলক। এবার সৎকর্মের তালিকা দেখুনঃ
“যারা তাদের সম্পদ থেকে দান করে”
কখন? শুধু কোটিপতি হলে? না, ধন-সম্পদের
প্রতি আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও। কোন কোন মসজিদে বা দরগায় দান করবেন তা আল্লাহ বলে দিয়েছেন।
দান করতে হবে- আত্মীয়স্বজন, এতিম, দরিদ্র বা অভাবগ্রস্থদেরকে। আত্মীয়স্বজন হচ্ছে সবচেয়ে
বড় মসজিদ। এতিম হচ্ছে সবচেয়ে বড় পীর। অভাবী মানুষদের হাতেই আপনার বেহেশতের চাবি। আর
কোথায় দান করবেন?:
“পথিক বা মুসাফির যারা সাহায্য
চায় এবং দাসত্ব মোচনের জন্য”
যখন কারেন্সি বা ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা
ছিলো না, তখন যতোবড় জমিদারই হোক- শূণ্য হাতেই সফরে বের হতে হতো। কারণ শতমণ ধান-চাউল
নিয়ে তো আর সফরে যাওয়া যেতো না। এই কপর্দকহীন মুসাফিরদের একমাত্র সহায় ছিলো স্থানীয়
মানুষের সাহায্য বা আশ্রয়। তাই মুসাফিরকে আল্লাহ বিশেষভাবে বৈশিষ্টমন্ডিত করেছেন। মুসাফির
কেউ আপনার শহরে বা গ্রামে এসে বিপদে পড়লে তাকে সাহয্য করুন, যারা সাহায্য চায়।
আমাদের এই দেশেই মাত্র ৫০-৬০
বছর আগেও এর প্রচলন ছিলো। কিন্তু অনেকে এর সুযোগ নিয়ে যে বাড়িতে আশ্রয় নিতো সুযোগ বুঝে
রাতে সে বাড়িতে চুরি করতো। এ ব্যাপারে একটি গ্রাম্য প্রবাদও চালু ছিলো; “অতিথির ক্যান
পা*র কামড় চোর তাড়ানো”। এসব কারণে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় এর
প্রচলন এখন একদম নেই বললেই চলে।
অপর এক আয়াতে আল্লাহ নবীজিকে
বলেছেন, “আপনি সাহায্যপ্রার্থীকে ধমক দেবেন না-(৯৩:১০)”। দাসমুক্তিঃ দাসপ্রথা
তো এখন নাই। তবে পড়াশুনার জন্য কাউকে বৃত্তি দেয়াও দাসত্ব থেকে মুক্তি দেয়ার সামিল।
আর “যারা সালাত প্রতিষ্ঠিত করে ও যাকাত প্রদান করে”(২:১৭৭)। যাকাতও এই আয়াতে উল্লেখিত
লোকদেরই প্রাপ্য।
এই আয়াতের শুরুতেই আল্লাহ বলেছেন
তোমরা “পূর্ব পশ্চিমে মুখ ফেরানোই সৎকর্ম নয়”- আবার সৎকর্মের তালিকায় একটি সৎকর্ম হলো
“সালাত প্রতিষ্ঠা করা”। কেমন স্ববিরোধী মনেহয়, তাই না?
কোরআনে সালাত বা নামাজ দ্বারা
সবক্ষেত্রে প্রার্থনা বোঝায়নি। আরবী ‘সালাহ’ শব্দের ভাষাতাত্বিক অর্থ হচ্ছে ‘ঘনিষ্ঠভাবে
অনুসরণ’ এবং আল-মুসল্লি মানে ছায়ার মতো ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ। অতএব, সালাত প্রতিষ্ঠা করা
মানে সর্বাবস্থায় কোরআনের বিধিনিষেধ ছায়ার মতো অনুসরণ করা।
দেখুন আপনার আমার নামাজ পড়ায়
কারো গাছের বেলও পাকবে না, কারো ভাতও সিদ্ধ হবেন। আর যেসব চাহিদা যথযথভাবে পুরণ না
করলে কোনো প্রার্থনা বা নামাজ আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্যই হবে না, সে নামাজ পড়ায় আল্লাহর
কি যায় আসে! এই আয়াতের অন্যান্য সৎকর্মগুলোর সামাজিক প্রভাব তুলনা করে দেখুন, নিজেই
উপলব্ধি করতে পারবেন।
নামাজ আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে
ক্ষমা প্রার্থণা করার একটা প্রিভিলেজ বা বিশেষ সুযোগ। নামাজের অনেক চমৎকার দিক আছে।
কিন্তু আল্লাহর দৃষ্টিতে তা সৎকর্ম নয়, যতোক্ষণ না আল্লাহর চাহিদা পূরণ হবে। আমি আমার
জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করলে সমাজের কার কি উপকার হবে? কিন্তু মুসলমানরা সবাই
আল্লাহর বিধান ছায়ার মতো অনুসরণ করলে এই দুনিয়াই তো জান্নাত! নামাজী হওয়া যতোটা সহজ,
মুসল্লি হওয়া ততোটাই কঠিন। এই আয়াতে সিয়াম বা রোজার উল্লেখ নেই। সামর্থ্যবানদের যাকাত
দিতে বলেছে, কিন্তু হজ্জ্বের কথা সৎকর্মের তালিকায় নেই।
“এবং যারা প্রতিশ্রুতি দিলে তা
রক্ষা করে-(২:১৭৭)”
আল্লাহর বিধান ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ
করা মানে কোনোরূপ নড়চড় হতে পারবে না। মুসলমান মানেই যদি হয় যে, তার মুখের কথাই হাজার
টাকার স্ট্যাম্প। তহলে মুসলমান শুনলেই তো তার চাকরি, ব্যবসার পূঁজি ও খরিদ্দারের অভাব
হবে না। কিন্ত মুসলমানরাই মুসলমানদের বিশ্বাস করে না। সূত্রমতে বাংলাদেশের জনপ্রিয়
ওয়ায়েজিন বা আমেরিকায় অবস্থানরত বিভিন্ন মসজিদের ইমামরা যখন আমেরিকার গ্রীন কার্ড বানাতে
চান, তারাও তখন ইহুদী আইনজীবী খোঁজেন। জটিল অপারেশনের জন্য নিউইয়র্কের মসজিদের ইমামও
ইহুদী হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেবেন। কারণ ইহুদীরা সেখানে বিশ্বস্ত পেশাদার হিসেবে
পরিচিত।
“এবং দারিদ্রে, সংগ্রামে, সংকটে
যারা ধৈর্য হারায় না-(২:১৭৭)”
অর্থাৎ জীবনের কঠিন অবস্থায়
মানুষ ধৈর্য হারিয়ে চুরি, প্রতারণা, মিথ্যাবলা, আমানতের খেয়ানত- এসব অন্যায় কাজে
ঝুঁকে পড়ে। তাই কঠিন পরিস্থিতিতেও যিনি ধৈর্যধারণ করতে
তিনিই প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ
এবং এমন অনন্য মানুষদের জন্যই আল্লাহ জান্নাতের
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
“তারাই হচ্ছে সৎকর্মশীল এবং তারাই
ধর্মভীরু-(২:১৭৭)”
সৎকর্মের তালিকা দিয়ে পরিশেষে
আল্লাহ বলে দিচ্ছেন, “তারাই হচ্ছে সৎকর্মশীল”। কিন্তু যারা এই দোয়া-সেই দোয়া পড়ে ইতোমধ্যেই
বেহেশতের টিকেট কনফার্ম করে ফেলেছেন বা টাখনুর উপর প্যান্ট পড়ে জাহান্নামের আগুন নিভিয়ে
ফেলেছেন, তাদের যদি আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন যে, কোরআনের কোন আয়াতে আমি এসব প্রতিশ্রুতি
দিয়েছি? যে ইমামের কিতাব বা আল্লামার ওয়াজে এসব শর্টকাট ফর্মুলা শুনেছেন, কুরআনের
কোন কোন আয়াতের মাধ্যমে আমি সেসব ইমাম বা ওলামাদের অনুমোদন দিয়েছি? তাদের উত্তরটা
প্রস্তুত আছে তো?
আল্লাহ সৎকর্ম বা ভালোকাজের বিবরণ
দিয়েছেন এমন আরো কিছু আয়াত দেখে নেইঃ
সুরা বাকারা আয়াত-১৯৫
“এবং তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং স্বীয় হস্ত ধ্বংসের দিকে প্রসারিত
করনা এবং কল্যাণ সাধন করতে থাকো, নিশ্চয়ই আল্লাহ কল্যাণ সাধনকারীদের ভালবাসেন-(২:১৯৫)।”
এখন আল্লাহর রাস্তায় দানের ওয়াজ
করে কেউ দানবাক্স বের করলেই তাতে মুক্তহস্তে দান করলেন, তাতেই আল্লাহর চাহিদা পূরণ
হয়ে গেলো না। আল্লাহ কয়েকটা একাউন্ট নাম্বার দিয়ে দিয়েছেন। তা ব্যতীত ‘অন্য একাউন্টে
ডিপোজিট করলে কোনো কাজ হবে না’!
সূরা বাকারা আয়াত-২১৫
“তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, তারা কিরূপে ব্যয় করবে? তুমি বলঃ তোমরা
ধন সম্পত্তি হতে যা ব্যয় করবে তা মাতা-পিতার, আত্মীয়-স্বজনের, পিতৃহীনদের, দরিদ্রদের
ও পথিকবৃন্দের জন্য কর; এবং তোমরা যে সব সৎকাজ কর নিশ্চয়ই আল্লাহ তা সম্যক রূপে অবগত-(২:২১৫)।”
আমাদের সবচেয়ে বড় পীর হচ্ছে
আমাদের বাবা-মা। অতঃপর আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্থ, মুসাফির। এরাই আমাদের বেহেশতের
সিঁড়ি। সদকায়ে জারিয়া হিসেবে যেসব দানবাক্সে দান করছেন, তা পরীক্ষায় কমন পড়া তো দূরের
কথা, সিলেবাসেই নেই।
সুরা আত-তাওবা আয়াত-১৮
“আল্লাহর মাসজিদগুলি রক্ষনাবেক্ষণ
করা তাদেরই কাজ, যারা আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামাত দিবসের প্রতি ঈমান আনে এবং সালাত কায়েম
করে ও যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কেহকেও ভয় করেনা। আশা করা যায় যে, এরাই সঠিক
পথ প্রাপ্ত-(৯:১৮)।”
যে আয়াতের রেফারেন্সে আমরা ‘সদাকায়ে
জারিয়া’র বয়ান দিয়ে থাকি সে আয়াতেও আল্লাহ “বিশ্বাস ও সৎকর্মের” কথাই বলেছেন। অর্থাৎ
মসজিদ রক্ষনাবেক্ষণ তাদেরই কাজ যারা আল্লাহর শর্ত যথাযথভাবে পূরণ করে। আল্লাহর শর্ত
পূরণ না করে শুধু সদকায়ে জারিয়া হিসেবে দানবাক্সে মুক্তহস্তে দান করলেই বেহেশতের টিকেট
কনফার্ম হয়ে যাবে না।
আল্লাহ নবীজীকে যা বলতে বলেছেন
নবীজি তাই বলেছেন এবং তা কুরআনে বিশদভাবে বর্ণিত। এর বাইরে নবীজির আর কোনো এজেন্ট,
প্রতিনিধি বা শাখা নাই। কোরআনের বাংলা অনুবাদ পড়লে নিজেই তা পরিস্কার বুঝতে পারবেন।
সূরা বাকারা আয়াত-২৬২
“যারা আল্লাহর পথে নিজেদের ধন সম্পদ ব্যয় করে এবং ব্যয় করার পর অনুগ্রহের
কথা প্রকাশ করেনা (বা খোঁটা দেয়না), তাদের জন্য তাদের রবের নিকট রয়েছে পুরস্কার; বস্তুতঃ
তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্তও হবেনা-(২:২৬২)।”
সুতরাং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন,
এতীম, অভাবগ্রস্থ, মুসাফিরকে দান করতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কাউকে দান করে
খোঁটা দেয়ার চেয়ে দান না করাই উত্তম!
সুরা বাকারা আয়াত-২৭৪
“যারা রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের
রবের নিকট তাদের পুরস্কার রয়েছে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা-(২:২৭৪)।”
সুরা আল ইমরান আয়াত-১৩৪
“যারা স্বচ্ছলতা ও অভাবের মধ্যে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানবদেরকে
ক্ষমা করে; এবং আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন-(৩:১৩৪)।“
সুতরাং আল্লাহর দৃষ্টিতে ভালো
কাজ বা সৎকর্ম হচ্ছে সচ্ছল অসচ্ছল অবস্থায় দান করা। তাদেরকে, যাদের আল্লাহ দান করতে
বলেছেন। এক টাকা আছে ৫ পয়সা দেন। যাদের উপর রাগ ঝাড়তে পারবেন এবং রাগ করার খুব যৌক্তিক
কারণ আছে, আল্লাহর ওয়াস্তে রাগ গিলে ফেলেন। কিন্তু যেখানে রাগ দেখালে চাকরি হারাবেন
বা গুলি খাবেন সেখানে রাগ সংবরণ করার কোনো ফজিলত নাই। ইচ্ছে করলেই যাদের শায়েস্তা
করতে পারবেন বা শায়েস্তা করা উচিৎ তাদের আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করে দেয়াই সৎকর্ম।
পাঁচ ওয়াক্ত শুধু নয়, রাত জেগে
তাহাজ্জুতের নামাজ পড়াও সহজ। কিন্তু অসচ্ছল অবস্থায় দান করা, সে দানের প্রচার বা
খোঁটা না দেয়া, সর্বাবস্থায় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা, বিশেষ পরিস্থিতিতে রাগ দমন করা,
সব মানুষকে নিঃশর্ত ক্ষমা করা, সংকটে সংগ্রামে ধৈর্য ধারণ করা- এভারেস্ট জয় করার চেয়েও
কঠিন। আর এই অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই জান্নাতের সুসংবাদ পাওয়ার অধিকারী।
পাঁচবার অজুর পর শাহাদা পাঠ করলেই
জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে বা ‘নামাজ বেহেস্তের চাবি’- এমন সস্তা প্রতিশ্রুতি
কোরআনে আল্লাহ দেননি এবং নবীজিকে এ জাতীয় কোনো কথা বলতেও বলেননি। বরং আল্লাহ নবীজিকে
বলতে বলেছেনঃ
সুরা আনআম আয়াত-১৯
“হে নবী আপনি বলুন: নিশ্চয়ই তিনিই একমাত্র ইলাহ
আর তোমরা যা কিছু তার সাথে যুক্ত করো প্রকৃতপক্ষে তা থেকে আমি মুক্ত-(৬:১৯)।”
আমরা আল্লাহর কাছে যা চাই তা
হচ্ছে প্রার্থনা, আর আল্লাহ আমাদের কাছে যা চান তাই হচ্ছে সৎকর্ম এবং যারা আল্লাহর
নির্দেশ নিবিড়ভাবে অনুসরণ করবে, ভালো কাজ করবে, আল্লাহর নিষেধ অমান্য না করবে - আল্লাহ
তাদেরই বেহেশতে প্রবেশাধিকার দিবেন। আর যারা আল্লাহর কথা না শুনে ব্ল্যাক মার্কেট থেকে
বেহেশতের টিকিট কিনবেন, ভুল অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট করবেন- তাদের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী
থাকিবে না।
কোরআন তথা ধর্ম হচ্ছে জীবন বিধান।
কিন্তু কোরআনকে পাশ কাটিয়ে জীবনের সাথে সম্পর্কহীন, সমাজসংসারে গুরুত্বহীন কিছু পোশাক-আশাক,
দোয়া-তাবিজ, রীতি-রেওয়াজকে আমরা ধর্ম হিসাবে চর্চা করি। কোরআনে আল্লাহ যে সব বর্জনীয়
বলে দিয়েছেন সেসব ছায়ার মতো অনুসরণ করলে শুধু আখেরাত নয়, দুনিয়ার জীবনও হবে প্রাপ্তিতে,
প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ।
মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হউন।