রাজবাড়ী জেলার কীর্তিমানদের কথা (পর্ব-১৯)
যতীন্দ্রমোহন রায়
যতীন্দ্রমোহন রায় (১৮৮৩-১৯৫১) ১৮৮৩ সালে রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হরিমোহন রায়।
শিক্ষা ও
রাজনীতি
যতীন্দ্র মোহন রায় রাজনৈতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ
করার জন্য রাজশাহী কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন। পরে ঐ কলেজ থেকে ১৯০৭ সালে বিএ পাস
করেন। বগুড়ায় শিক্ষকতা করার সময় 'গণমঙ্গল সমিতি' নামে সংগঠনের মাধ্যমে
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শিক্ষার সম্প্রসারণে আত্মনিয়োগ করেন। বগুড়ায় দুটি
হাই স্কুলও স্থাপন করেছিলেন তিনি।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন
যতীন্দ্রমোহন রায় ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব।
তিনি বাঘা যতীনের সংস্পর্শে
এসে বৈপ্লবিক কর্মতৎপরতায় যোগ দেন। বালেশ্বর যুদ্ধের পর তিনি কারাবরণ করেন। অসহযোগ আন্দোলন ও লবণ
সত্যাগ্রহের জন্য দেড় বছর এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের জন্য দু’বছর কারাদণ্ড ভোগ করেন। পরে দরিদ্র অনুন্নতদের জন্য হিতকার্যে
ব্রতী হন। বঙ্গীয় যুব সম্মেলন ও বিষ্ণুপুর বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন।
ফরিদপুর প্রাদেশিক কংগ্রেসেও তার
গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ ছিলো। তিনি
আদি অনুশীলন সমিতির সদস্য
ছিলেন। পরে তার দল উত্তরবঙ্গে যতীনদার দল নামে পরিচিত হয়। যতীন্দ্রমোহন
রায় ১০ বছর ব্রিটিশদের কারাগারে
ছিলেন।
গণমঙ্গল
সমিতির সদস্যবৃন্দ
গণমঙ্গল সমিতির কর্মীদের মধ্যে
ধীরেন্দ্রমোহন ঘটক, সত্যপ্রিয় ব্যানার্জি, অবিনাশ রায়, শশধর কর, উমানাথ
চক্রবর্তী, ক্ষিতীশ সরকার, যতীন হুই, পাবনার প্রভাস লাহিড়ী, মানসগোবিন্দ সেন,
গোবিন্দ ব্যানার্জি, সুরেন রায়, অক্ষয় গুহ, মহেন্দ্র সেন, শরদিন্দু চক্রবর্তী, আশুতোষ
লাহিড়ী, গপেন্দ্রলাল রায়, কালিপদ বাগচী, মোহিনী সিংহ, যোগেন দে সরকার, খগেন
দাসগুপ্ত প্রধান ছিলেন। এদের সকলেই বহু বৎসর কারাগারে ও অন্তরীণে আবদ্ধ ছিলেন। এদের
মধ্যে খগেন দাসগুপ্ত ১৪ বছর জেলে ছিলেন।
মৃত্যু
যতীন্দ্রমোহন রায় ১৮ জানুয়ারী ১৯৫১
কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।