রাজবাড়ী জেলার কীর্তিমানদের কথা (পর্ব-৪)
মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী
মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী |
মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী বাংলাভাষার একজন লেখক এবং সাংবাদিক। তিনি শিক্ষা সংস্কারের মাধ্যমে পশ্চাৎপদ মুসলমানদের অগ্রগামী করেন।
মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী ১৮৮৮ সালে রাজবাড়ী
জেলার পাংশার মাগুরাডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। পিতা এনায়েতুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন
পুলিশ অফিসার। পাংশা হাইস্কুল থেকে এমই এবং রাজবাড়ী রাজা সূর্যকুমার
ইনস্টিটিউশন (RSK Institution) থেকে
এন্ট্রান্স পাস করেন। কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হলেও বিএ ক্লাসে পড়ার সময়
দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে পড়ায় পড়ালেখা ছাড়তে বাধ্য হন।
তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির
প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন। এ সমিতির সম্পাদক হিসেবেও কয়েক বছর দায়িত্ব পালন
করেছেন। সমিতির মাসিক পত্র সাহিত্যিক-এর
যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। এয়াকুব আলী চৌধুরী ও কবি গোলাম মোস্তফার যুগ্ম সম্পাদনায়
এটি এক বছর যাবৎ প্রকাশিত হয়েছিল।
রওশন আলী চৌধুরী ও আওলাদ আলী চৌধুরীর অকাল মৃত্যুতে তাদের পরিবারের দায়িত্ব নেন এয়াকুব আলী। শোক-দুঃখ-দারিদ্র্যে নিপতিত হয়ে মাত্র ৪৭-৪৮ বছর বয়সে ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হন। শেষ জীবনের চার-পাঁচ বছর জীবনমৃত অবস্থায় গ্রামের বাড়িতে বাস করেন। মৃত্যুর দুই বছর আগে বঙ্গীয় সরকার মাসিক ২৫ টাকা হিসেবে সাহিত্যিক বৃত্তি মঞ্জুর করেন তার জন্য।
পাংশায় এয়াকুব আলী চৌধুরীর নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুল |
এয়াকুব আলী চ্চৌধুরী বাংলা গদ্যের
একজন শক্তিশালী শিল্পী ছিলেন। ইসলামি দর্শন ও সংস্কৃতি তার রচনার মূল উপজীব্য। বক্তব্যের
বলিষ্ঠতায়, ভাষার মাধুর্যে ও ভাবের গাম্ভীর্যে তার রচনাবলি বিশেষ মর্যাদার দাবিদার।
হিন্দু-মুসলমানের সমপ্রীতিতে বিশ্বাসী ছিলে তিনি। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলিমের
মাতৃভাষা বাংলা না উর্দু- এ বিতর্কে তিনি বাংলা ভাষার পক্ষাবলম্বন করেন। সুবক্তা হিসেবেও
খ্যাত ছিলেন তিনি।
তার
প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩টি। নূরনবী গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের প্রশংসাবাণী সংযোজিত
হয়েছে।
· ধর্মের
কাহিনী
· নূরনবী
· শান্তিধারা
· মানব
মুকুট
এছাড়া বাংলা
একাডেমি প্রকাশ করেছে এয়াকুব আলী চৌধুরী
অপ্রকাশিত রচনা নামীয় একটি গ্রন্থ। এর সম্পাদক আমীনুর রহমান।
১৫
ডিসেম্বর ১৯৪০ সালে গ্রামের বাড়িতে অবস্থানকালে তার মৃত্যু হয়।
ছবিটি বাতিল করুন, এটা এয়াকুব আলী চৌধুরীর ছবি নয়।
এটা কার ছবি?