জীবনযোদ্ধার রোজনামচা(০৬ জানুয়ারী ২০২৪)
আতাউর রহমান খান |
ঘটনা-১:
রিকশা হটাও!!
বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পাওয়া বাংলাদেশের রিকশা |
কেন যে মানুষ রিক্সায়
চলে! সকালে তিন কিলোমিটার দূরে এক জায়গায় যাওয়ার কথা। হাঁটারও দরকার, তাই হেঁটে
গেলাম। কাজ সেরে হেঁটেই এলাম। মনে হচ্ছে শরীরে শক্তি বেড়ে গেছে। মনটাও ফুরফুরে
লাগছে।
সময় লেগেছে ৪০+৪০
মিনিট। রিকশায় গেলেও জ্যামের কারণে এরচেয়ে কম লাগে না।
ঘটনা-২:
শখ করে ভোট কেন্দ্র
নারায়ণগঞ্জ থেকে ট্রান্সফার করে আমার নিজস্ব আসনে নিয়ে গিয়েছিলাম এই ভেবে যে,
আমার আসনের জনপ্রতিনিধিকে বঞ্চিত করে অন্য জায়গায় ভোটার থেকে লাভ কি?
শরীরের একটু জটিলতার
কারণে প্রতিদিন হাসপাতালে দৌড়াচ্ছি। আজও গিয়েছিলাম। অপারেশনের জন্য BSMMU- তে
কেবিন বরাদ্ধ পেয়েও ভোট দেয়ার জন্য ভর্তি হইনি।
হাসপাতাল থেকে এসে রেডি
হয়ে রওনাও দিয়েছি। বাসের সিট বুক করার জন্য গাবতলী রাবেয়া পরিবহনের কাউন্টারে
ফোন করে জানতে পারলাম, সব বাস বন্ধ।
ট্রেনের খোঁজ নিয়ে জানলাম, গতকাল বেনাপোল এক্সপ্রেস পুড়িয়ে দেয়ায় আমার লাইনের সব ট্রেনও বন্ধ।
দুর্ভাগ্যই বটে!!
ঘটনা-৩:
ভোট প্রয়োগ পদ্ধতির আধুনিকায়ন প্রয়োজন
টাকা যদি অনলাইনে
লেনদেন করা যায়, ভোট কেন দেয়া যাবে না?
এই যে ঢাকা শহর ফাঁকা
দেখছেন, সবাই কি ভোট দিতে গেছে? আমার ধারণা ঢাকায় বসবাসকারীদের অধিকাংশই ঢাকার
ভোটার। ছুটি পেয়ে যার যেখানে ইচ্ছে চলে গেছে।
তাছাড়া ভোটার
ধানমন্ডির, বাসা পাল্টিয়ে চলে গেছে উত্তরা। কিংবা ভোটার নারায়ণগঞ্জের এখন থাকে
ঢাকায়। সে কি সহজে ভোট দিতে যাবে?
দূর দূরান্তে অবস্থানকারীদের জন্য অনলাইনে ভোট দেয়ার সুযোগ থাকলে ভোট প্রদানের হারও বেড়ে যেতো। কেউ জাল ভোটও দিতে পারতো না।
ভেবে দেখুন।
ঘটনা-৪:
দেশে
শক্তিশালী দেশপ্রেমিক বিরোধীদল দেখতে চাই
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই দেশীয় স্বার্থান্বেষী ক্ষমতা
লিপসুদের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি ক্ষমতায় জেঁকে বসে। অনেক চড়াই উৎরাই
পেরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি যখন ক্ষমতায় আসে, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি
হয়ে দাঁড়ায় প্রধান বিরোধী দল। তাদের আবার ধরেবেঁধে ক্ষমতায় বসিয়ে না দিলে সাধারণ
নির্বাচনে জিতে আসার ক্ষমতা নাই। তাই তারা চক্রান্তের পথ বেছে নেয়। পেছন থেকে কলকাঠি
নাড়ে স্বাধীনতা বিরোধী বিদেশী শক্তি।
দেশে আজ পর্যন্ত স্বাধীনতার স্বপক্ষের কোন শক্তিশালী বিরোধী দল তৈরি
হয়নি। যে কয়টি দল আছে তাদেরকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে না দিলে দিতে পারে না। তাহলে কিভাবে
শক্তিশালী দেশপ্রেমিক বিরোধী দল তৈরি হবে? যার সারমর্ম দাঁড়ায়; “আওয়ামীলীগের চেয়ে জনপ্রিয়
দল আর নেই”।
দেশে ক্ষমতাসীন দলের পাশাপাশি বিরোধীদল থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বিশ্বের
বিভিন্ন দেশে প্রধান দুই দলই পালা বদল করে দেশ চালায়। কিন্তু তাইবলে তারা দেশ বিরোধী
কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় না
দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকা বাঞ্ছনীয়। না হলে যে দলই ক্ষমতায় থাকুক
আত্মশ্লাঘায় ভুগতে পারে – যার পরিনাম ভালো হয় না। জনগণও খারাপটা না দেখলে ভালোটার বিচার
করতে পারে না। তবে বিরোধী দলকেও দেশপ্রেমিক হতে হবে। বিএনপি'র মত স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী
বিদেশীদের তাবেদার দেশ বিরোধী দল বিরোধীদলে বা সরকারে আর দেখতে চাই না।
দেশে শক্তিশালী দেশপ্রেমিক বিরোধীদল দেখতে চাই।
ঘটনা-৫:
নির্বাচন বিরোধীরা মরণ
কামড় দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। জনগণের সমর্থন না পেয়ে তারা নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে। ভোটাররা
যাতে ভোটকেন্দ্রে না আসে তারা সেই চেষ্টা করছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা
নিতে হবে।
এবং
মনে রাখতে হবে, পরাজিতরা
থেমে থাকে না। প্রতিশোধ নিতে আজীবন প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। তাই এদের আর বিশ্বাস
করারও সুযোগ নাই। ভবিষ্যতে এদের গতিবিধি নজরদারীতে রাখতে হবে।
০৫ জানুয়ারী' ২০২৪ বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা |
ঘটনা-৬:
নাশকতা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হতে
পারে না। নাশকতাকারীরা দেশের শত্রু। তাদেরকে দলীয় পরিচয়ে নয়, নাশকতাকারী হিসেবে
চিহ্নিত করা হোক এবং তাৎক্ষণিক বিচার করে রায় কার্যকর করা হোক।
ঘটনা-৭:
দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে আসার
সময় দেখলাম দেখলাম জনাবিশেক মানুষের একটি মিছিল নির্বাচন বিরোধী মিছিল দিচ্ছে।