জীবনযোদ্ধার রোজনামচা (২৪ জানুয়ারি ২০২৪)
ট্র্যান্সজেন্ডার প্রসঙ্গ
আসিফ মাহতাবের ছবি |
সপ্তম শ্রেণির পাঠ্য বইএ শরীফ থেকে শরীফার গল্পকে কেন্দ্র আরো
যে একটি জেন্ডারের কথা সামনে এসেছে বা যাকে কেন্দ্র করে এই আলোচনা-সমালোচনার
অনেকটা সেটি হলো ট্রান্সজেন্ডার। হিজড়াদের জেন্ডার হিসেবে মেনে নিলেও
ট্রান্সজেন্ডারদের স্বীকৃতি দিতে নারাজ আমাদের সমাজের অনেকেই। তাঁদের ধারণা
ট্রান্সজেন্ডার মানুষ বিবেকবর্জিত হয়ে শুধু ইচ্ছাকৃতভাবেই রূপান্তরিত হয়। ব্র্যাক বিশ্ববিয়ালয়ের খণ্ডকালিন শিক্ষক আসিফ মাহতাব প্রসঙ্গটি সামনে আনেন
সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে। তিনি প্রকাশ্যে সরকারি বইয়ের পাতা ছিঁড়ে রীতিমত
রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ করেছেন।
আমার জেলা রাজবাড়ীতে
অলৌকিকভাবে দুইজনের লিঙ্গ পরিবর্তন হয়ে মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছে। তারমধ্যে
একজনের আবার মেয়ে থাকা অবস্থায় বিয়েও হয়েছিলো এবং একটি সন্তানও জন্ম দিয়েছে। তাদের
ভিডিও ইউটিউব সহ অন্যান্য সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আছে। প্রতিষ্ঠিত টিভি চ্যানেল “সময়
টিভি”তেও এ ব্যাপারে রিপোর্ট প্রচার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আসিফ
মাহতাবরা কি বলবেন? যদিও সপ্তম শ্রেণীর বইএ ‘ট্র্যান্সজেন্ডার’ বিষয়ে বলা হয়নি,
বলা হয়েছে তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজরাদের কথা এবং যদি ধর্মীয় দৃষ্টিকোন দিয়ে বিবেচনা করা
হয়, তাতেও মানুষের কোনো হাত নেই।
বিকৃত মানসিকতা নিয়ে
আবার দাবি করে, "আমি একজন দার্শনিক"! বিশ্বে যতো দার্শনিক আছে তাদের চেহারা
কি ওই রকম? উল্লেখ্য ইতোমধ্যে তার কয়েকটি কুরুচিপূর্ণ নারীসঙ্গের ছবি ইন্টারনেটে
ঘুরে বেড়াচ্ছে। “বলা যায়, করা যায় না”!
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বানান ভুল! |
তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা
নেয়া এবং সমাজ সচেতনতামূলক প্রচারণায় বিবেকবানদের সোচ্চার হওয়া নৈতিক দায়িত্ব।
কারণ, এরূপ “মাহতাব” চরিত্রে্র লোকের সংখ্যা সমাজে বেড়েই চলেছে।
সরকারি অফিসের জবাবদীহিতা
একটা প্রবণতা
লক্ষ্য করা যায় যে, সরকারি অফিসে একজন বদলি হয়ে গেলে ওই পদে দায়িত্ব গ্রহণকারী পরের
জন পূর্বের কৃতকর্মের কোনো জবাবদিহিতা তো দূরের কথা, মুখে খিল মেরে দেয়, যা খুবই দুঃখজনক!
প্রায় সবাই একই জবাব দেয়, “আমি নতুন জয়েন করেছি, তখন কি হয়েছে তা আমি বলতে পারব না”।
এটা মোটেই কাম্য হতে পারে না।
একটা সুশৃংখল
জবাবদিহিতামূলক সরকারি অফিসে কয়েক বছর চাকরি করার সুবাদে জানি যে, কোনো অফিসের কোনো
কর্মকর্তা বা কর্মচারী পরিবর্তন হলে একজন আরেকজনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার একটা আনুষ্ঠানিকতা
আছে। যিনি নতুন যোগদান করেন তিনি পূর্বের জনের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন এবং এ ব্যাপারে
একটি হস্তান্তর-গ্রহণ পত্র স্বাক্ষরিত হয়। পরের জন ওই অফিসের কোনো কাজের জবাব দিতে
পারবে না, এমন নিয়ম ছিলো না। অন্যান্য সরকারি অফিসে সেই রীতি অনুসরণ হয় কিনা আমার জানা
নেই।
পূর্বের জন
কোনো অপকর্ম বা দুর্নীতি করে থাকলে তার দায় পরের জনের উপর বর্তাবে না এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু তদন্তকারি বা সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাওয়া মোটেই কাঙ্খিত নয়। আমি
মনে করি এটা সম্পূর্ণ রীতি বহির্ভূত এবং দায় এড়িয়ে যাওয়ার অর্থ ঘটনা ধামাচাপা দেয়া।
কথায়ই আছে, “সব রসুনের কোয়া এক বৃন্তে যুক্ত”!
ধর্মীয় ব্যাখ্যার সত্যাসত্য নিরূপণ বোর্ড গঠন
আজকাল প্রায়
প্রত্যেকটা ওয়াজ মাহফিলে ধর্ম বিষয়ে আলোচনার পরিবর্তে বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে
হাসি তামাশা করা, ভিন্ন মতাবলম্বীদের প্রতি ব্যাঙ্গ, বিদ্রূপাত্মক কথাবার্তা
ছুঁড়ে দেয়া, একে অন্যের নামে গীবত, সমালোচনা, গালিগালাজ করা, এমনকি হুমকি-ধামকি
দেয়া হয়। ভিন্ন লিঙ্গ, ভিন্ন ধর্মের প্রতি বিদ্রূপাত্মক উক্তি, ইঙ্গিত করা হয়।
প্রতিক্রিয়ায় সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ায়, মানুষ ভুল শিক্ষা পায়, বিশৃংখলা সৃষ্টি
হয়।
ভবিষ্যতে কেউ যাতে
ওয়াজ মাহফিলে বা কোনো সেমিনার সিম্পোজিয়ামে বক্তৃতা করার সময় ধর্মের ভুল
ব্যাখ্যা দিতে না পারে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি বোর্ড গঠন করা হোক।
বোর্ড প্রতিটা ধর্ম
নিয়ে গবেষণা করবে এবং কেউ কোনো ভুল ব্যাখ্যা দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে
সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।
ভবিষ্যতে কেউ যাতে
ওয়াজ মাহফিলে বা কোনো সেমিনার সিম্পোজিয়ামে বক্তৃতা করার সময় ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা
দিতে না পারে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি বোর্ড গঠন করা হোক। বোর্ড প্রতিটা ধর্ম
নিয়ে গবেষণা করবে এবং কেউ কোনো ভুল ব্যাখ্যা দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে
সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।
মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের বর্জন
মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কোন দল ও তাদের সহযোগী এবং যুদ্ধাপরাধী
ও জাতির জনকের হত্যকারীদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা কোন দল ভবিষ্যতে আর যাতে ক্ষমতায় না
আসতে পারে এমনকি জাতীয় সংসদেও না আসতে পারে সে বিষয়ে যথাযথ কর্মপন্থা নির্ধারণ করা
হোক।