নিজেকে নিয়ে হতাশ হবেন না

  

তবে হতে হবে উদ্যমী। থাকতে হবে প্রবল ইচ্ছাশক্তি। আলো আসবেই।

আশার আলো

(১)   একজন কয়েদীর কথা বলবো।

কয়েদী নাম্বার ৪৬৬৬৪।

২৭ বছর জেলে থাকার পরেও তিনি নোবেল শান্তি পুরষ্কার জিতেছেন।

- তিনি "নেলসন মেন্ডেলা"

 

(২)   আরেক পিতৃপরিচয়হীন যুবকের কথা।

থাকার কোনো রুম ছিল না তার। বন্ধুদের রুমের ফ্লোরে ঘুমাতেন। ব্যবহৃত কোকের বোতল ফেরত দিয়ে পাঁচ সেন্ট করে কামাই করতেন - যেটা দিয়ে খাবার কিনতেন। প্রতি রোববার রাতে তিনি সাত মাইল হেঁটে হরেকৃষ্ণ মন্দিরে যেতেন শুধু একবেলা ভালো খাবার খাওয়ার জন্য।

- তিনি অ্যাপল এবং পিক্সার অ্যানিমেশন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও- "স্টিভ জবস"

 

(৩)   আরেক যুবকের নাম জানিঃ

মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম। তাঁকে বলা হয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সফল ড্রপ আউট। স্যাট পরীক্ষায় ১৬০০ নম্বরে ১৫৯০ পান তিনি।

কিন্তু কম্পিউটার সফটওয়্যার তৈরির নেশায় তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাম কাটান। ড্রপ আউট হওয়ার ৩২ বছর পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন তিনি।

- তিনি "বিল গেটস"

(৪)   আরেক এতিমের কথা জানি।

১১ বছর বয়সে এতিম হন। ১২ বছর বয়সে ঘর থেকে পালিয়ে যান। হতাশ হয়ে ১৯ বছর বয়সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অনেক বিখ্যাত বইয়ের লেখক তিনি। তার মধ্যে “আমার বিশ্ববিদ্যালয়” একটি,- যদিও তিনি কোনোদিন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সুযোগ পাননি।

- তিনি বিখ্যাত লেখক, নাট্যকার এবং রাজনীতিবিদ "মাক্সিম গোর্কি"।

 

(৫)   আরেকজনের ঘটনাঃ

বাবার সাথে মুদি দোকান করতেন। পরিবারে এতোই অভাব ছিলো যে- স্কুল নাগাদ পড়েই তাকে থেমে যেতে হয়েছিলো। সেই ব্যক্তিই একসময় হয়ে উঠেন বিরাট বিপ্লবী নেতা।

- তিনি চীনের প্রতিষ্ঠাতা "মাও সে তুং"।

 

(৬)   অভাবের তাড়নায় কুলিগিরি করতেন। একদিন বাসের কন্ডাক্টরের কাজের

জন্য গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। যে যুবকটি অংকে পারদর্শী নয় 

বলে বাসের কন্ডাক্টর হতে পারেননি,- পরবর্তীতে তিনিই হন ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ও 

প্রধানমন্ত্রী।

--- যার নাম "জন মেজর"

 

(৭)   আরেক ছেলের বাবা-মা এতই গরীব ছিলেন যে, তার জন্মের পর নাম

রেজিস্ট্রি করতেই দু’দিন দেরি হয়। কে জানেন?

তিনিই আজকের ফুটবল কিংবদন্তী!

- নাম "রোনাল্ডো"।

 

(৮)   বাবা ছিলেন জেলে। ছেলেকে সাথে করে বাবা মাছ ধরতেন – কারণ, অন্য

স্বাভাবিক আর ১০ জন থেকে তিনি পানির নিচে মাছকে খুব ভাল ভাবে দেখতে

পেতেন।

- সেই জেলের ছেলে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট সুপারস্টার "জয়সুরিয়া"।

 

(৯)   পড়ালেখায় মারাত্মক দুর্বল ছিলেন তিনি। কোনোকিছু মনে থাকতো না। ক্লাস

এর শেষ বেঞ্চে বসে থাকতেন। ফেল করেছেন বারবার। ক্লার্ক এর চাকরিও

করেছেন তিনি। পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছেন তিনি তার থিউরি অফ রিলিটিভিটি

দিয়ে। নোবেল পুরষ্কারও পেয়েছেন তিনি।

- তার নাম "আলবার্ট আইনস্টাইন"।

 

(১০) ক্লাস এর সবচেয়ে দুর্বল ছাত্র ছিলেন তিনি। স্কুল থেকে বহিস্কারও করা

হয়েছে তাকে। পৃথিবী তিনি আলোকিত করেছেন তার আবিষ্কার দিয়ে।

- তার নাম "টমাস আলভা এডিসন"

 

(১১) শব্দগুলোকে উল্টো করে লিখতেন তিনি। পড়ালেখায় একদম শূন্য।

উড়োজাহাজ আবিস্কারের ৪০০ বছর আগে তিনি উড়োজাহাজের মডেল এঁকে

গেছেন।

- তিনি "লিওনার্ড দ্য ভিঞ্চি"

 

(১২) পরীক্ষায় তিনি সব সময় ফেল। ২২ টা একাডেমিক পুরষ্কার জিতেছেন

জীবদ্দশায়। তিনি মিকি মাউস। ডোনাল্ড ডাক এর জন্মদাতা। মিকি মউসের গলার

স্বর তার নিজের দেওয়া।

- তিনি "ওয়াল্ট ডিজনি"

 

(১৩) শব্দের খেলা তিনি বুঝতেন না। ৭ নাম্বার-কে তিনি বলতেন উল্টা নাক! এই

স্প্যানিশ ভদ্রলোক একজন কবি, লেখক, পেইন্টার, কেমিস্ট, স্টেজ ডিজাইনার,

ভাস্কর।

- তিনি "পাবলো পিকাসো"।

 

উপসংহারঃ

পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষই ইউনিক। তার ভাবনাগুলি তার মতোই। সবাই যা পারে আমাকেও তা-ই পারতে হবে, এমন কিছুতো নয়।

শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে কেনো? আমাদের সমস্যাটা ওখানেই। আমাদের প্রত্যেক ঘরে ঘরে Toppers আর Rankers চাই!

সবাইকেই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টার, ম্যাজিস্ট্রেট হতেই হবে!

আঙ্গুলকে টেনে লম্বা করতেই হবে, যে ভাবেই হোক......!

দরকার হলে আঙ্গুল ভেঙ্গে যাক!

 

একটা কথা মনে রাখতে হবে

"পৃথিবীতে সবাই জিনিয়াস, কিন্তু আপনি যদি একটি মাছকে তাল গাছ বেয়ে ওঠার ক্ষমতা দিয়ে বিচার করেন, তবে সে সারাজীবন নিজেকে অপদার্থই ভেবে যাবে''

- আলবার্ট আইনস্টাইন

 

(সংগৃহীত ও পরিমার্জিত)

 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url