মৌলানা ভাসানীর দ্বিচারিতা



 "আই অ্যাম এক্সট্রিমলি স্যরি হুজুর!

আজ আপনার ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে অনেক চেষ্টা করেও মন থেকে আপনাকে শ্রদ্ধা জানাতে পারছি না। ষাটের দশকের আগে আপনিই ছিলেন সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। সে সময়কার আপনার আলোকোজ্জ্বল ভূমিকা অস্বীকার করবো না। কিন্তু পরবর্তীতে মুজিব যখন তাঁর শ্রম, মেধা ও যোগ্যতায় জনপ্রিয়তার দিক থেকে আপনাকে ডিঙিয়ে বাঙালির হৃদয়ে স্থান দখল করে নেন, তখনই আপনি ঈর্ষান্বিত বোধ করেছিলেন। আর তাই হয়তো চরম ঈর্ষাপ্রসূত বিদ্বেষ থেকে বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফার বিরোধিতা করেছিলেন আপনি। বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা দেখে নিজের রাগ ও ক্ষোভ সংযত করতে না পেরে ১৯৭০ সালে আপনি বলেছিলেন, আপনার লাশের ওপর দিয়েই মুজিবকে ক্ষমতায় আসতে হবে।



বঙ্গবন্ধু মুজিব ঠিকই ক্ষমতায় এসেছিলেন, কিন্তু আপনাকে লাশ হতে দেন নি। আপনাকে পিতার মতো শ্রদ্ধা করতেন বঙ্গবন্ধু, পা ছুঁয়ে সালাম করতেন। আপনার জন্য মাসে মাসে টাকা পাঠাতেন। তাঁর পাঠানো পাঞ্জাবি-পায়জামা পরেই আপনি ঈদের নামাজ পড়তেন। তারপরও প্রতিহিংসার বলয় থেকে আপনি বেরিয়ে আসতে পারেন নি। বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় তাঁর বাকশাল কর্মসূচীকে সমর্থন করে তাঁকে দোয়া করেছিলেন আপনি, কিন্তু তাঁর শাহাদাতের পর পুরোপুরি উল্টে গেলেন।


বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাথে আপনি জড়িত ছিলেন না বটে। কিন্তু জাতি কোনদিনও ভুলবে না যে, আপনার স্বভাবগত হীনমন্যতা ও সুবিধাবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উৎখাতের জন্য নিমকহারাম মোশতাক ও খুনী বিপথগামী আর্মি অফিসারদের সাহসের প্রশংসা করে তারবার্তা পাঠিয়ে আপনি অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।


দুঃখিত হুজুর!

আপনি আজো প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর কাছে অনুকরণীয় নন। কারন, আপনাকে ধারণ করেছে স্বাধীনতাবিরোধী সুবিধাবাদী সাম্প্রদায়িকগোষ্ঠী ও পঁচাত্তরের খুনিচক্রের সমর্থকেরা। জাতির জনকের পাশে আপনাকে স্থান দিতে পারলে জাতি সত্যিই খুশি হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য জাতির!"

উল্লেখ্য: তার ছেলে আবু নাসের খান ভাসানী জিয়ার মন্ত্রী হয়েছিলো।


লেখাটি ২০১৯ সালের ১৮ oktovirfesbuje পোষ্ট দিয়েছিলেন: Biplob Kumar Dey

কৃতজ্ঞতা তার প্রতি 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url