বিশ্বের মুসলিম নারী নেতৃবৃন্দ (পর্ব-১৮)-বাংলাদেশ

 

তারানা হালিম

এডভোকেট তারানা হালিম



এডভোকেট তারানা হালিম (জন্ম ১৬ আগস্ট ১৯৬৬): একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, সাবেক আইনজীবী, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং নাট্যকার। তিনি বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

 

তারানা হালিম ১৬ আগস্ট ১৯৬৬ টাঙ্গাইলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা এম এ হালিম ছিলেন আয়কর কমিশনার ও পরবর্তীকালে বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। মা আখতার হালিম বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে তারানা কনিষ্ঠ। পৈত্রিক বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার ধুবরিয়া গ্রামে।

 

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির পর অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত তিনি উদয়ন বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। ১৯৮২ সালে আজিমপুর অগ্রণী বালিকা বিদ্যালয় থেকে তিনি প্রথম বিভাগে মাধ্যমি্ক এবং ১৯৮৪ সালে হলিক্রস কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক দুইটি পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে তার অবস্থান ছিল নবম। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে এলএলবি  এলএলএম সম্পন্ন করেন।

 

অভিনয় জীবন

তারানা হালিম ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় শিশুদের রিয়েলিটি শো “নতুন কুঁড়ি”তে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবার নজরে আসেন। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে পাঁচ বছর বয়সে “ঘুঘু ও শিকারী” শিরোনামের একটি নাটকে "পিঁপড়া" চরিত্রে অভিনয়েয় মধ্য দিয়ে অভিনয়ে হাতেখড়ি ঘটে তারানার।

পরবর্তীতে কলেজে অধ্যয়নের শুরুতে অভিনয় করেন “ঢাকায় থাকি” টেলিভিশন নাটকে। চলচ্চিত্র অভিনেতা ফারুকের সঙ্গে তার ছোট বোনের চরিত্রে “সাহেব” শিরোনামের বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর অলোচনায় আসেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ধারাবাহিক “অয়োময়” টেলিভিশন নাটকে "মদিনা" চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের আকৃষ্ট করেন। 

তিনি আমজাদ হোসেন পরিচালিত “গোলাপী এখন ট্রেনে” (১৯৭৮) চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। সাংস্কৃতিক সংগঠন “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটে”র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

এছাড়াও তিনি টেলিভিশন চ্যানেল “চ্যানেল আই”-এ “জীবন যেখানে যেমন” শিরোনামের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করছেন।

 

 

রাজনৈতিক জীবন

কৈশোর বয়স থেকেই রাজনিতীর প্রতি তার ঝোঁক ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নকালে যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং একই সংগঠনের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথম নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।


 
২০১৬ সালে জেনেভায় একটি সম্মেলনে তারানা

তারানা জানুয়ারি ২০১৮ সালে তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। তার আগে ১৪ জুলাই ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

 

ব্যক্তিগত জীবন

তারানা হালিমের প্রথম স্বামীর ঘরে বড় ছেলে প্রীতম। আরো এক ছেলে আছে ঐ স্বামী হতে। বিবাহ বিচ্ছেদের পর তারানা হালিম বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা আহমেদ রুবেলকে

 


অভিনীত টেলিভিন নাটক

·        ঘুঘু ও শিকারী

·        ঢাকায় থাকি

·        অয়োময়

·        আমাদের আনন্দবাড়ী (ধারাবাহিক)

·        হিমু (১৯৯৪)

 

অভিনীত চলচ্চিত্রঃ

  • সাহেব
  • নয়নমনি
  • গোলাপী এখন ট্রেনে
  • এখনি সময়


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url