বিশ্বের মুসলিম নারী নেতৃবৃন্দ (পর্ব-১৫)-বাংলাদেশ

 

ডাঃ দীপু মনি

ডাঃ দীপু মনি

ডাঃ দীপু মনি (জন্ম ৮ ডিসেম্বর ১৯৬৫): একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে পরিচিতি পান। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। ২০০৮ সাল থেকে তিনি টানা তিনবার চাঁদপুর-৩ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

 

দীপু মনি ১৯৬৫ সালের ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কামরাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একুশে পদক বিজয়ী ভাষা আন্দোলন কর্মী ও রাজনীতিবিদ এম.এ ওয়াদুদ। মাতা রহিমা ওয়াদুদ ছিলেন শিক্ষিকা। তারা ২ ভাইবোন। তার একমাত্র ভাই জে আর ওয়াদুদ টিপু একজন চিকিৎসক।

 

দীপু মনি হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএলবি পড়েন। এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জনের পর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথ’ থেকে এমপিএইচ ডিগ্রী অর্জন করেন। এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। এছাড়া তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমঝোতা ও দ্বন্দ্ব নিরসন এর ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন।

 

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট তৌফিক নাওয়াজ দীপু মনি'র স্বামী। এডভোকেট নাওয়াজ আন্তর্জাতিক একটি ল’ফার্মের প্রধান। তিনি ‘আলাপ’ এর একজন শিল্পী। তাদের দু’সন্তান রয়েছে। পুত্র তওকীর রাশাদ নাওয়াজ ও কন্যা তানি দীপাবলী নাওয়াজ।

 

ডাঃ দীপু মনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী

 

দীপু মনি ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে যথাক্রমে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে তিনি দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। এছাড়া তিনি বর্তমানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দীপু মনি তার ঘন ঘন বিদেশ সফরের কারণে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হন। কিছু সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে তিনি সাড়ে চার বছরে ১৮৭ বার বিদেশ সফর এবং ৬০০ দিন বিদেশে অবস্থান করেছেন। অভিযোগের জবাবে তিনি বলেছিলেন, তিনি প্রতিবারই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে বিদেশে গিয়েছেন, যিনি প্রতিটি সফরের ভালো-মন্দ বিবেচনা করে তাকে অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে ৩৬টি সহ ১১৪টি বিদেশী সফর করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, তার দ্বিপাক্ষিক সফরের সংখ্যা ১৭টি নয়, ৬২টি ছিলো।


হিলারী ক্লিন্টনের সাথে দীপু মনি

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে দীপু মনির পরিবারের সদস্যদের প্রস্তাবিত জমির দাম কয়েকগুণ বেশি দেখিয়ে ৩৫৯ কোটি টাকা বাড়তি আদায়ে ‘কারসাজির’ অভিযোগে তিনি সংবাদ মাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হন। দীপু এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

 

দীপু মনি মাদার তেরেসা আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন।

 





Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url