আরবী ভাষাকে ইসলামিকীকরণ
আরবী ভাষা কি আল্লাহর ভাষা? আরবী ভাষায় কোরআন নাজিল হয়েছে। তারমানে কি কোরআন বোঝার জন্য আরবী ভাষায় পাণ্ডিত্য অর্জন করা বাধ্যতামূলক? আরবী উচ্চারণভঙ্গির কারণে নামাজ ভঙ্গ হয়? পৃথিবীর সব মানুষের আরবী উচ্চারণ কি একরকম হওয়া সম্ভব? আরবী ভাষা নিয়ে আমাদের দেশের একশ্রেণির আলেম এতো বাড়াবাড়ি করে কেনো?
আজকের
লেখায় এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবো। আরবী ভাষা নিয়ে আমাদের দেশের কিছু তথাকথিত
আলেমের জালিয়াতির চিত্র তুলে ধরবো। আশাকরি
লেখাটি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়বেন।
***আরবী
ভাষা কি আল্লাহর ভাষা?
কোন
‘জ্ঞানী’ ব্যাক্তি যে প্রথম এ কথাটি বলেছিলো জানিনা। তবে বাঙালি মুসলমানদের অনেকেই
বিশ্বাস করে, আল্লাহর ভাষা হলো আরবী! এর চেয়ে মুর্খতাসুলভ কথা আর কিছু হতে পারে না।
পৃথিবীর
সব ভাষাই আল্লাহর ভাষা। ভাষার উৎপত্তি ধ্বনি থেকে। আরবী সহ পৃথিবীর সব ভাষাই ধ্বনির
সমষ্টি। আর ধ্বনি সৃষ্টি করেন আল্লাহ। পৃথিবীতে এতোকাল যতো ভাষা ছিলো, আছে ও থাকবে,
এ সবই আল্লাহর ভাষা। যারা বলে কবরের ভাষা আরবী, হাশরের ভাষা আরবী, আল্লাহর ভাষা আরবী
তারা মনে করে, যেহেতু আল্লাহ কোরআন নাজিল করেছন আরবী ভাষায়,- আল্লাহ বুঝি কেবল আরবী
ভাষাই জানেন, আরবী ভাষাতেই কথা বলেন! নাউজুবিল্লাহ! –আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেনঃ
“আমি
অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় কোরআন যাতে তোমরা বুঝতে পারো’-(১২:২)।
ভাষার
বৈচিত্রতা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেনঃ
“এবং
তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের
বৈচিত্র্য”-(৩০:২২)।
অতএব,
তাদেরকে কে বোঝাবে যে; আল্লাহ নবী পাঠিয়েছেন আরবে, সেজন্যে কোরআন পাঠিয়েছেন আরবী ভাষায়।
নবীজী(সাঃ) যদি বাংলাদেশে আসতেন তাহলে বাংলা হতো তাঁর মাতৃভাষা এবং আল্লাহও হয়তো বাংলা
ভাষায়ই কোরআন পাঠাতেন। বাংলাভাষী রাসুলের কাছে আরবী ভাষায় কোরআন পাঠিয়ে আল্লাহ নিশ্চয়ই
বলতেন না “যাতে তোমরা বুঝতে পারো”। অতএব, এখানে
ভাষার আলাদা কোনো মাহাত্ম্য নেই। কোরআনে বর্ণিত আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ-নিষেধ মানুষের
বোধগম্য হওয়া এবং তা মেনে চলাই আসল।
***কোরআন
তো আল্লাহ আরবী ভাষায় নাজিল করেছেন, সেজন্যে কোরআন বোঝার জন্য কি আরবী ভাষার পান্ডিত্য
অর্জন বাধ্যতামূলক?
আমাদের
দেশীয় ‘আলেমদের’ অনেকে গর্ব করে বলেন, ‘কোরআন বোঝা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব না।
কোরআন বোঝার জন্য আরবী ভাষায় ‘গভীর জ্ঞান’ লাগে’।
মনে
করেন জনাব ‘আবুল হাশিম’ অনেক বছর মাদ্রাসায়
পড়াশোনা করে আরবী ভাষার গভীর জ্ঞান অর্জন করে কোরআনের বাংলা অনুবাদ করলেন। আমি সেই
অনুবাদ পড়লাম। এরপর যখন আমি সেই অনুবাদ পড়ে ইসলাম নিয়ে কথা বলবো, হুজুররা তখনও বলবে, ‘আরবী জানো মিয়া? আরবীর গভীর
জ্ঞান ছাড়া কোরআন বোঝা যাবে না’।
আমাদের
কথা হলো, যে ব্যাক্তি কোরআন অনুবাদ করেছে, আরবী ভাষায় তার গভীর জ্ঞান আছে বলেই অনুবাদ
করতে পেরেছে। সেই অনুবাদ থেকে কথা বললে কি আমারও আরবী ভাষার পণ্ডিত হতে হবে? সেই অনুবাদও
যদি গ্রহনযোগ্য না হয়, আমি আপনি আরবী ভাষায় ‘গভীর’ জ্ঞান অর্জন করে কোরআনের বাংলা অর্থ
বুঝতে গেলে বা বোঝাতে গেলে, আমার আপনার তো তারচেয়ে বেশি ভুল হতে পারে? তাহলে আমার আপনার
কথা লোকে বিশ্বাস করবে কিভাবে?
মোদ্দা
কথা হলো, কোরআন বোঝার জন্য আসলে আরবী ভাষার পণ্ডিত হওয়ার কোনো দরকার নাই। কোরআন বোঝা
মানে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ বোঝা। কোরআনের প্রতিটা আদেশ-নিষেধ একদম স্বচ্ছ পানির মতো পরিস্কার।
যেমন; কোরআনের একটা আয়াত হলোঃ
“আল্লাহ
ব্যাবসাকে হালাল করেছেন এবং সূদকে হারাম করেছেন”-(২:২৭৫)।
এই
আয়াতটি বোঝার জন্য আপনার কি আরবীর মহা পণ্ডিত হতে হবে? কে বুঝবেনা এ কথা? কিন্তু আমাদের
দেশের ‘আলেমদের’ কথা হলো, ‘কোরআন বোঝার জন্য অনুবাদ যথেষ্ট না, আরবীই জানা লাগবে। আর
শুধু আরবী জানলেই হবে না, আরবী ভাষার গভীর জ্ঞান লাগবে’। অথচ এই হুজুরদেরকেই একটা বাংলা বই আরবীতে অনুবাদ করতে বলেন
বা একটা আরবী বই বাংলায় অনুবাদ করে দিতে বলেন। কয়জন পারে দেখেন!
***পৃথিবীর
সব মানুষের আরবী উচ্চারণ কি এক হওয়া সম্ভব?
উচ্চারণের
নামেও বেশি বাড়াবাড়ি চলছে। অঞ্চল্ভেদে মানুষের উচ্চারণে তারতম্য থাকে, এটা কে না জানে।
নোয়াখালির মানুষ ‘প’ উচ্চারণ করে ‘হ’ এর মতো। রংপুরের মানুষ ‘র’ এর জায়গায় ‘অ’ আবার
‘অ’ এর জায়গায় ‘র’ উচ্চারণ করে। সিলেটের মানুষের ‘ক’ উচ্চারণ করে ‘খ’-এর মতো। পৃথিবীর
ভাষার বৈচিত্র যেমন স্বাভাবিক, তেমনি উচ্চারণের বৈচিত্রও স্বাভাবিক। আমরা অনেকেই ইংরেজিতে
কথা বলতে পারি। কিন্তু আমাদের বলাটা হুবহু ইংরেজদের মতো হয় না। বাংলাদেশীদের উচ্চারণ,
ভারতের উচ্চারণ আলাদা। আমেরিকার উচ্চারণ আলাদা। ইংরেজি যাদের মাতৃভাষা খোদ বৃটিশ ও আমেরিকানদের উচ্চারণ
এমনকি দুই দেশের বানানরীতিও আলাদা।
আরবী
ভাষাতেও এমন অনেক উচ্চারণ আছে যা পৃথিবীর সব মানুষ হুবহু একইভাবে উচ্চারণ করতে পারে
না। ভিন্নতা থাকবেই। কিন্তু আমাদের দেশের কিছুসংখ্যক তথাকথিত ‘আলেমের’ জ্ঞানের দৌড়
এতোই সীমিত যে, তারা এই ভিন্নতাকে মনে করে ভুল। তাদের কথা হলো, আমরা হুজুররা মাদ্রাসাভিত্তিক
কোরআন তেলাওয়াতের(আবৃতি) যে প্যাটার্ন দাঁড় করিয়ে রেখেছি,- সবাইকে সেইভাবে, সেই সুরে,
সেই ভঙ্গিতেই আরবী পড়তে হবে। কেউ নিজের সুবিধা মোতাবেক পড়তে পারবে না। কিন্তু আপনারা
তো এই সাধারণ মানুষেরই দান-অনুদানের বদৌলতে সারা দিনরাত মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে ২০ বছর
ধরে এই উচ্চারণের রেওয়াজ করেছেন। আমরা সাধারণ মানুষরাতো সে সুযোগ পাইনি। তাহলে আমাদের
কাছ থেকে ওই উচ্চারণ আশা করেন কিভাবে?
‘কণ্ঠশিল্পীরা
প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা কন্ঠ রেওয়াজ করেন, তাই তাদের কণ্ঠের সুর এতো সুন্দর। তাদের
উচ্চারণ এতো তীক্ষ্ণ। কেউ যদি আবদার করে, ‘ সবাইকে কণ্ঠশিল্পীদের মতো শতভাগ তীক্ষ্ণ
বাংলা বলতে হবে। সাধারণ মানুষের পক্ষে কি তা সম্ভব হবে? আপনাদের মনে রাখতে হবে; ইসলাম
শুধু কিছু মৌলবী সাহেবের জন্য আসেনি, কেবল মাদ্রসার জন্য আসেনি। ইসলাম এসেছে সব মানুষের
জন্য। কোরআনও এসেছে সব মানুষের জন্য। কাজেই কোরআনের উচ্চারণ নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ির সুযোগ
নাই’।
নবীজী(সাঃ)
যখনই কারো কোরআনের উচ্চারণ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে দেখেছেন, তখনই বলেছেন; পবিত্র কোরআন
৭ রকমের উচ্চারণে নাজিল হয়েছে। কাজেই যেটা তোমাদের জন্য সুবিধাজনক সেভাবেই তেলাওয়াত
করো। এ প্রসঙ্গে হাদীসটি নিম্নরূপঃ
কুরআন সাত হরফে অবতীর্ণ হওয়ার বিবরণ ও এর যথার্থতা
সহীহ মুসলিম হাদিস একাডেমি হাদীস নাম্বারঃ ১৭৮৪, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ
৮১৮
“১৭৮৪-(২৭০/৮১৮)
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ..... ’আবদুর রহমান ইবনু আবদুল কারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাযিঃ) কে বলতে শুনেছি, আমি যেভাবে সূরাহ আল
ফুরকান তিলাওয়াত করি হিশাম ইবনু হাকীম ইবনু হিযাম (রাযিঃ)-কে অন্যভাবে তিলাওয়াত করতে
শুনলাম অথচ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সূরাটি আমাকে এভাবে পড়িয়েছিলেন।
তৎক্ষণাৎ আমি তাকে বাঁধা দিতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পরক্ষণেই আবার তাকে পড়ে শেষ করার
অবকাশ দিলাম। তারপর তাকে গলায় চাদর জড়িয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর কাছে নিয়ে গিয়ে বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাকে যেভাবে সূরাহ আল ফুরকান পড়তে
শিখিয়েছিলেন এ লোকটিকে তার থেকে ভিন্ন রকম করে সূরাটি পড়তে শুনেছি”।
“এ কথা শুনে
তিনি বললেনঃ তাকে ছেড়ে দাও। তারপর তাকে লক্ষ্য করে বললেন- তুমি পড়। তখন সে আবার সেভাবে
পড়ল যেভাবে আমি তাকে পড়তে শুনেছিলাম। তারপর পড়ার পর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটি এভাবেই অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন,
তুমি পড়। সুতরাং আমি পড়লেও তিনি বললেনঃ এভাবেই এটি অবতীর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে যতটুকু
যেভাবে তোমাদের কাছে সহজ সেভাবেই পড়। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৭৬৯, ইসলামীক সেন্টার ১৭৭৬)
“।
***আরবী সুরা
কেরাত শুদ্ধ না হলে কি নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে?
আমাদের দেশের
কিছু তথাকথিত আলেমের আরেকটা হটকারিতা হলো এটা। তারা ব্যাপকভাবে চালু করেছে যে, নামাজের
সুরা, কেরাত কাঁটায় কাঁটায় শুদ্ধ না হলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। কোথায় পেয়েছে তারা এ
বিধান? যারাই এ কথাটা বলেন তারা কি বলতে পারবেন; কেরাত শুদ্ধ হওয়ার কারণে নামাজ ভঙ্গ
হয়ে যাবে এমন কথা আল্লাহ কোথায় বলেছেন, আর নবীজী(সাঃ)ই বা কোথায় বলেছেন?
***তাহলে আরবী
ভাষা ও আরবী উচ্চারণ নিয়ে আমাদের হুজুররা এতো বাড়াবাড়ি করে কেনো? এর কারণ কি?
এটাই হলো আসল
রহস্য! যে বিষয় নিয়ে আল্লাহর কোনো কড়াকড়ি নাই, নবীজী(সাঃ)’র কোনো কড়াকড়ি নাই, সাহাবীদের
জীবনীতেও কোনো কড়াকড়ি নাই, বাড়াবাড়ি নাই;- সেটা নিয়ে আমাদের দেশের ‘আলেমদের’ এতো কড়াকড়ির
কারণটা আসলে কি?
কারণ হলো,
‘বল’টা তারা নিজেদের পায়ে রাখতে চায়। তাদের পুঁজিই হলো মাদ্রাসা থেকে শেখা বিশেষ
ধরণের আরবী তেলাওয়াত(আবৃতি)। এর বাইরে তাদের আর কোনো দক্ষতা বা যোগ্যতা নাই। আপনি যদি
তাদের উপর নির্ভরশীল না হন, তাদের মুখাপেক্ষী না হন, তাহলে তাদেরকে কি এমনি এমনি হাদীয়াহ
দেবেন?
মুরগীর ব্যাবসায়ীরা
যেমন চাইবে যে, লোকদের বাজারের তালিকায় এক নম্বরে থাকুক মুরগীর মাংস। আমাদের দেশের
আলেমরাও ঠিক একইভাবে চাইবে ইসলামের এক নম্বরে থাকুক আরবী ভাষা শিক্ষা, আরবী উচ্চারণ,
আরবী তেলাওয়াত ইত্যাদি। তাই আল্লাহ ও তার রাসুল না বললেও তারা জোর করে ফতোয়া ডেলিভারি
দেন, ‘সুরা, কেরাত সহীহ না হলে নামাজ হবে না’। অথচ ইবাদতের গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে তারা
আলোচনাই করতে চায় না।
সাধারণ মানুষ
যদি নিজেদের নামাজে নিজেরাই ইমামতী করা শুরু করে দেয়, তাহলে আমাদের দেশের
একশ্রেণীর আলেমের রুটিরুজি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আরবী ভাষা, আরবী ভাষার উপর পাণ্ডিত্য
নিয়ে তাদের এতো বাড়াবাড়ি। যাতে আপনি ভয় পেয়ে বলেন; ওরে বাবা, ইমামতী করা অনেক কঠিন!
কোরআন বোঝা অনেক কঠিন! হুজুর ছাড়া তো সম্ভবই না! কাজেই যতো হাদীয়াই লাগুক, হুজুর লাগবেই।
লেখার কলেবর
আর বাড়াতে চাই না। আশাকরি আরবী ভাষা নিয়ে হুজুরদের বাড়তি আগ্রহের কারণটা সবার কাছেই
পরিস্কার হয়ে গেছে। আসলে ইসলামের যে বিষয় নিয়ে আমাদের দেশের হুজুরদের বেশি বাড়াবাড়ি
করতে দেখবেন, বেশি দরদ দেখাতে দেখবেন, খেয়াল করলে দেখতে পাবেন তারসংগে হয়তো অর্থনৈতিক
স্বার্থ জড়িত, নয়তো রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত। টাকা আর ক্ষমতার লোভ ছাড়া আমাদের দেশের
তথাকথিত ইসলামের সেবকদের ‘জজবা’ ওঠেনা। ইসলামের জন্য দরদও ওঠেনা। যেখানে হাদীয়াহ, যেখানে
ক্ষমতার চেয়ার, সেখানেই তাদের ইমানী ‘জজবা’ উপচে পড়ে।
‘জজবা’ শব্দটা
আমাদের আলেম সমাজ অহরহ উচ্চারণ করেন। কিন্তু এটা যে হিন্দী শব্দ তা তারা জানেন কিনা
এটা নিয়েও সন্দেহ আছে। ‘জজবা’ অর্থ- আবেগ।
আরবী ভাষা
ও উচ্চারণের সংগে যেহেতু আমাদের প্রায় সব হুজুরদেরই জীবিকার সম্পর্ক, তাই তারা সব সময়ই
চায় আপনি আরবী ভাষাকে ভয় পান, কোরআন শিক্ষাকে ভয় পান। সাধারণ কেউ কোরআন নিয়ে গবেষনা
করুক তা তারা সহ্য করবে না। তারা চাইবে চিরকাল তাদের মুখাপেক্ষী হয়েই থাকেন। কিন্তু
আল্লাহ ও তার রাসুলের চাওয়া কিন্তু সেটা না। আল্লাহ পবিত্র কোরআন নাজিল শুরুই করেছেন
যে শব্দটা দিয়ে সেটা হলো ‘ইকরা’ অর্থাৎ পড়ো। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আরো বলেছেনঃ
“তারা কেনো
কোরআন সম্বন্ধে গবেষনা করে না”?-(৪: ৮২)
“তাহলে কি
তারা কোরআন সম্বন্ধে অভিনিবেশ সহকারে চিন্তা-গবেষনা করেনা”?-(৪৭: ২৪)
আমি যদি
অর্থই না বুঝি, গবেষনা করবো কিভাবে?