বিশ্বের মুসলিম নারী নেতৃবৃন্দ (পর্ব-১০)-বাংলাদেশ

 মতিয়া চৌধুরী 

মতিয়া চৌধুরী



মতিয়া চৌধুরীঃ (জন্ম ৩০ জুন ১৯৪২) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পূর্ববর্তী দুই মেয়া্দে শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে তিনি আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি শেরপুর জেলার নকলা নালিতাবাড়ী আসনের বর্তমান এমপি এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা।

 

মতিয়া চৌধুরী ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী।

 

মতিয়া চৌধুরী ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন।

ব্যক্তিজীবনে মতিয়া চৌধুরী ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বজলুর রহমান দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। বজলুর রহমান ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মারা যান।

 

মতিয়া চৌধুরী বাংলাদেশের বিশিষ্ট নারী রাজনীতিবিদ। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তিনি আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতি দিয়ে। তিনি ১৯৬৩ সালে ঢাকা ইডেন গার্লস কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি হন। ১৯৬৪- ১৯৬৫ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন।

 

মতিয়া চৌধুরী ১৯৬৭ সালে “পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে” যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। জ্বালাময়ী বক্তৃতার জন্য ওই সময় তিনি "অগ্নিকন্যা" নামে ব্যাপক পরিচি্তি লাভ করেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি বারবার আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করে প্রায় ২ বছর কারাগারে আটক ছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৭০ ও ১৯৭১ সময়কালে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রচারণা, তদবির এবং আহতদের শুশ্রুষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।

 

মতিয়া চৌধুরী পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও মরহুম রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়ে তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হন। চারদলীয় ঐক্যজোট সরকারের সময় তিনি আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন এবং পুলিশ দ্বারা নির্মমভাবে নির্যাতনের স্বীকার হন।

 

মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬-২০০১ ও ২০০৯-২০১৯ মেয়াদকালে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। ১২ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে তিনি জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বয়ঃজৈষ্ঠ নেতাদের একজন।

 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।


 (সূত্রঃ ইন্টারনেট)

 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url