দুঃখের প্যাচাল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল। আগে নাম ছিলো পিজি অর্থাৎ পোষ্ট গ্রাজুয়েট হাসপাতাল। তখন জানতাম এখানে সম্ভ্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা পায়। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর এর পরিসর বেড়েছে।
যে জন্যে এই লেখা:
হাসপাতালের কোনো ফ্লোরে সাধারণের ব্যবহারের জন্য কোনো টয়লেট এমনকি হাত ধোয়ার জন্য একটা বেসিনও নাই। থাকলেও সেটা নাকি স্টাফরা তালা দিয়ে রাখে।
একটা পাবলিক টয়লেট আছে। রোগীর এটেন্ডেন্ট কিংবা দর্শনার্থীদের অনেক পথ পাড়ি দিয়ে সেখানে যেতে হয়। যদিও দেশের সর্বোচ্চ এবং অত্যাধুনিক সরকারি হাসপাতালের অভ্যন্তরে পাবলিক টয়লেট গ্লানিকর বলে মনে করি। সেটাও আবার রাতে তালা মারা।
বসে আছি "নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (NICU) সামনে। আমার পরিবারের মুমূর্ষ নবজাতক এখানে চিকিৎসাধীন।
ব্লাড ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ির কারণে দিনের বেলা সেখানে একটা টয়লেট পেয়ে "দূষিত জল নিষ্কাশন" করেছিলাম। রাতে গিয়ে দেখলাম ব্লাড ব্যাংকের ফ্লোরেও তালা মারা। কারো ইমার্জেন্সী ব্লাড দরকার হলে কোথায় পায় কে জানে!
সেখানে যাওয়ার সময় এক বয়স্ক দুর্বল মহিলাকে দেখলাম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সিড়ি দিয়ে নামছে। ফেরার সময় দেখি সিড়িতে দাঁড়িয়েই পরনের কাপড়চোপড় ভরে প্রস্রাব করছে। মনেহয় আমার ফেরার আওয়াজ পেয়েই উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছিলো। বেচারি!
বেরিয়ে এক সিকিউরিটির কাছে জিজ্ঞেস করলাম। সে কিছুই বলতে পারলো না বা বললো না।
সি ব্লকের কাছে একটা মসজিদ আছে শুনেছিলাম। ঘুরে এসে সি ব্লকের গেটের সিকিউরিটিকে জিজ্ঞেস করলাম মসজিদ কোনটা, সেখানে প্রস্রাব করা যাবে কিনা?
বললো, মসজিদ তালা মারা। এশার নামাজের পর তালা লাগায়, ফজরের নামাজের সময় খোলে।
সে বললো, ইমার্জেন্সিত যান। ওখানে টয়লেট আছে। সেখানেও গিয়ে দেখি পাশাপাশি মাত্র দুটি টয়লেট তারও একটিতে তালা মারা।
অমানবিক!
সরকারি হাসপাতালে যদিও স্বল্প খরচে চিকিৎসা পাওয়া যায়। কিন্তু সেজন্যে কি এতো দুর্ভোগ পোহাতে হবে?