আমরা হাসি কেন? মানুষ হাসে কেন?

 

আমরা হাসি কেন? মানুষ হাসে কেন? 


ধরুন এই বর্ষায় হঠাৎ একজন পা পিছলে পড়ে গিয়ে কাদায় মাখামাখি হয়ে গেল... তা দেখে হয়ত অনেকেই হেসে উঠবেন। কিন্তু পড়ে গিয়ে যদি তার মাথায় মারাত্মক চোট লেগে অজ্ঞান হয়ে যায়, তবে কিন্তু কেউ হাসবে না। 


পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণী যে হাসেনা, সেটা প্রথম জানতে পারি সত্যজিৎ রায়ের অসমঞ্জবাবুর কুকুর পড়ে। তারও পরে জানতে পারি আইজ্যাক আসিমভের লেখা জোকস্টার নামক সায়েন্স ফিকশানে এই নিয়ে জটিল কিছু চিন্তাভাবনা আছে। 


সে যাই হোক। এতদিনে যা বুঝেছি তা হল, কোন বিষয় একজনের কাছে হাসির হলেও তা আরেকজনের কাছে হাসির উদ্রেক নাও করতে পারে। যেমন, রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের বক্তব্য বা টিভিতে রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা আমাকে হাসতে বাধ্য করলেও অনেকের কাছেই সেগুলো খুব সিরিয়াস বিষয়। 


আমার এক শিক্ষিকা বন্ধুকে সেদিন দেখলাম কোন এক চ্যানেলকে তার মনের কথা বলছিল। তাতে সে আক্ষেপের স্বরে জানালো যে তার সাত বছরের বাচ্চাটা অব্দি জেনে গেছে যে তার মাকে লেখাপড়া শিখে তার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েও আন্দোলন করতে হচ্ছে দাবী আদায়ের জন্যে... এর থেকে তার বাচ্চাটা কী শিখবে? সে লেখাপড়ার প্রতি কতটা যত্নশীল হবে?


খুবই ন্যায্য প্রশ্ন। এর দায় কার, সেসব বিচারাধীন বিষয়... সেসব নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা বা ইচ্ছে কোনটাই আমার নেই। 


কিন্তু যখন অপরদিকে অভিযোগ ওঠে যে কিছু মানুষ টাকা দিয়ে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কিনেছেন এবং ভর্তি হচ্ছেন, তখনই অসমঞ্জবাবুর কুকুরটার কথা মনে পড়ে, যে কিনা টাকা দিয়ে সব কেনা যায় শুনে হেসে ফেলেছিল। 


আজ অসমঞ্জবাবুর কুকুর সেইসব ছাত্রছাত্রী কিংবা ডাক্তারদের দেখলে কী করত সেটাই ভাবছি।


লিখেছেন: বিপ্লব কুমার দে 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url