হাদীসকে হিকমা নাম দিয়ে কোরআনের শরীক বানানো কতোটা কোরআন সম্মত?
আমাদের শায়খুল হাদীসরা
প্রায়ই দাবি করেন যে, নবীকে আল্লাহ দুটি জিনিস দিয়েছেন, কোরআন এবং হিকমা। আর এই
হিকমাই হচ্ছে হাদীস। তাই আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুসরণের নামে, আল্লাহ ও তার
রাসুলের অনুমোদনহীন ইরান, উজবেকিস্তানের ইমামদের সংগ্রীহিত ও সংকলিত কথিত হিকমার কিতাবকেই
কোরআনের মতোই ধর্মীয় বিধান হিসাবে মানতে বলা হচ্ছে।
ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর,
যিনি “হাদীসের নামে জালিয়াতি” বই লিখে প্রচলিত ওয়ায়েজীনদের সমালোচনার মুখে
পড়েছিলেন, তিনিও একই কথা বলেছেন। কেনো বলেছেন, কি অবস্থায় বলেছেন তা তিনিই ভালো
জানেন।
ড: আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির
রহিমাহুল্লাহ আমার অত্যন্ত পছন্দের মানুষ। আমি তার আলোচনা শুনি। তার ব্যক্তিত্ব ও
বর্ণনার মাধুর্য্যের কারণে তাকে ভালোবাসি। তিনি যদি কমিউনিষ্ট বা অমুসলিমও হতেন,
তবু আমি তাকে পছন্দ করতাম, কারণ তার ব্যক্তিত্ব। তবে হিকমা বিষয়ে তার
সাথে দ্বিমত করবো।
হিকমা শব্দের অর্থ
প্রজ্ঞা বা ‘উইসডোম’। নবীজীর আদেশ, উপদেশ ও জীবনাচরণ প্রজ্ঞার উৎস। কিন্তু আমাদের
শায়খদের দাবী সে প্রজ্ঞার বিবরণ কোরআনে নাই। হিকমা আছে বুখারী, মুসলিমে।
আল্লাহ নিজেকে হাকীম
বলেছেন। আল্লাহর হিকমা হচ্ছে অনন্ত অসীম। আর আল্লাহর কিতাবে হিকমা নাই! অসমর্থিত ও
অননুমোদিত সূত্রে বর্ণিত হাদীস থেকে নবীদের প্রজ্ঞা ও জীবনাদর্শের নিরভরযোগ্য
বিবরণের পাশাপাশি অবৈজ্ঞানিক, অবাস্তব, অযৌক্তিক এবং হাস্যকর কিছু বর্ণনা পাওয়া
যায়, যা পৃথিবীর কোনো সমাজ সভ্যতায় প্রজ্ঞা বা উইসডোম বলে গ্রহণযোগ্য নয়। নবীজীর
নামে যুগে যুগে বিভিন্ন মতলববাজদের বানানো এসব ভিত্তিহীন উদ্ভট ধর্মাচার শেষ
পর্যন্ত হুমকি ধামকি দিয়ে গেলাতে হয়। -এই লেখায় কথা বলবো প্রকৃত হিকমার আদ্যপান্ত
নিয়ে।
নবীজী(সাঃ)কে আল্লাহ
হিকমা দিয়েছেন। ইবারহীম(আঃ) সহ সকল নবীদের আল্লাহ হিকমা দিয়েছেন। কোরআনে আল্লাহ
নবীদের হিকমার বর্ণনাও দিয়েছেন। সুরা ইব্রাহীম, সুরা মোহাম্মদ, সুরা ইউসুফ, সুরা
নূহ, সুরা ইউনুছ, কোরআন জুড়ে নবীদের জীবন ও কর্মেরই বর্ণনা। হিকমা আল্লাহ
আমাদেরকেও দিয়েছেন। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন;
“উদ’উ ইলা-ছাবীলি
রাব্বিকা বিলহিকমাতি ওয়াল মাও’ইজাতিল হাছানা"
অর্থ
“তুমি মানুষকে তোমার রবের
পথে আহবান কর হিকমাত ও সদুপদেশ দ্বারা”-(১৬:১২৫)।
তো আল্লাহ যদি আমাদের
হিকমা নাইই দেয়, তবে আমরা হিকমা দিয়ে মানুষকে আল্লাহর পথে কিভাবে ডাকবো? আর
প্রজ্ঞা বুঝতে হলেও একজন মানুষের প্রজ্ঞা থাকতে হবে। অবুঝ শিশু বা অবোধ প্রাণীর
কাছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের কথা অর্থহীন। তবে কিছু মানুষকে আল্লাহ অন্যদের তুলনায় বেশি
প্রজ্ঞা দিয়েছেন। এই প্রজ্ঞা বা হিকমার আলোচনায় সবার আগে আসবে হযরত লোকমান (আঃ)-এর
নাম।
লোকমান (আঃ) নবী ছিলেন
না। কিন্তু আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন;
“ওয়া
লাকাদ আ-তাইনা-লুকমা-নাল হিকমা”
অর্থ
“নিশ্চয়ই
আমি লোকমানকে হিকমা দিয়েছি”(৩১:১২)।
লোকমান(আঃ)-কে আল্লাহ এমন
হিকমা দিয়েছেন যে, তার নামই হয়ে গেলো লোকমান হাকীম। এই হাকীম মানে কবিরাজ নয়।
প্রজ্ঞাবান লোকমান। “Lokman the wise man”.
এখন নবীর হিকমা নাহয়
বুখারী শরীফ থেকে জানবো। কিন্তু লোকমান(আঃ)-এর হিকমা আমরা কোন শরীফ থেকে জানবো?
সহীহ “লোকমান শরীফ” কোন প্রকাশনী প্রকাশ করে?
হ্যাঁ। কোরআনে সুরা
লোকমান নামে একটা আস্ত সুরা আছে। সুরা লোকমান হচ্ছে কোরআনের ট্রেলার, কোরআনের
বিজ্ঞাপন। মাত্র ৩৪ টি আয়াত আছে এই সুরায়। নিজের বাড়ির কোরআন খুলে মিলিয়ে নেবেন।
নইলে মনে হবে এ কথা বুঝি আমেরিকার কোরআনে আছে বা ইহুদীদের কোরআনে আছে!
আমাদের শায়খুল হাদীসদের
দাবি কোরআনে হিকমা নাই। হিকমা হচ্ছে হাদীস। কিন্তু লোকমান(আঃ)-এর হিকমার বর্ণনা
দিতে গিয়ে আল্লাহ কোরআনের বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। সুরা লোকমানের প্রথম আয়াত;-
“আলিফ
লাম মীম, তিলকা আইয়া তুল কিতা-বিল হাকীম”
অর্থ
“এগুলো
হচ্ছে জ্ঞানগর্ভ বা প্রজ্ঞাময় কিতাবের আয়াত”(৩১:১-২)।
কোনো শায়খুল হাদীসকে
জিজ্ঞেস করবেন যে, সুরা লোকমানের শুরুতে আল্লাহ যে কিতাবের কথা বললেন, এই
হিকমাপূর্ণ কিতাব কোনটা? ‘কোরআন শরীফ’ না ‘আবু দাউদ শরীফ’?
সুরা ইয়াসিনের শুরুতে
আল্লাহ আরো স্পষ্ট করে আল্লাহ নাম ধরে বলেছেন;-
“ইয়া
সীন, ওয়াল কোরআ-নিল হাকীম”
অর্থ
“হিকমাপূর্ণ
বা জ্ঞানগর্ভ কোরানের শপথ”(৩৬:১-২)।
আল্লাহ কোরআনকে বলছেন
হিকমাপূর্ণ কিতাব। কিন্তু আমরা হিকমা খুজতে যাচ্ছি উজবেকিস্তানে।
সুরা লোকমানের পরের আয়াতে
আল্লাহ হিকমাপূর্ণ কিতাব সম্পর্কে আরো বলেছেন;-
“হুদাওঁ
ওয়া রাহমাতাল লিলমুহসিনীন”
অর্থ
“পথ
নির্দেশ ও দয়া স্বরূপ, সৎকর্মপরায়নদের জন্য”-(৩১:৩)।
হুদা শব্দের অর্থ
পথনির্দেশ, ম্যাপ বা জিপিএস। সৎকর্মপরায়নদেরকেই আল্লাহ জান্নাতের প্রতিশ্রুতি
দিয়েছেন এবং আল্লাহ বলেছেন, সৎকর্মশীলদের গাইড হচ্ছে প্রজ্ঞাপূর্ণ কিতাব
“আল-কোরআন”।
আপনি নতুন কোথায়ও গেলে
এবং গন্তব্যের পথ না জানলে একজন টুরিষ্ট গাইড, ম্যাপ বা জিপিএস আপনাকে পথ দেখাবে।
আপনি জান্নাতে যেতে চাইলে আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুমোদিত নির্ভুল গাইড হচ্ছে
আল্লাহর কিতাব। এ প্রজ্ঞাময় কিতাবই হচ্ছে আল্লাহর পথ। সৎকর্মশীলদের পথ।
আল্লাহ দাবি করেছেন, এই
কিতাব হচ্ছে “হুদাল্লিল মুত্তাকিন”- মুত্তাকিদের পথ। আল্লাহ কোরআনকে বলেছেন,
“হুদাল্লিন নাছ”- মানুষের জন্য আল্লাহর দেখানো পথ। অর্থাৎ, মুসলিম, অমুসলিম যে
কোনো মানুষ কোরআন পড়ে পরিস্কার বুঝবে। যে কোরআন পড়ে বুঝবে না, সে মানুষ না
পায়জামা!
কিন্তু আমাদের শায়খরা
বলছেন, বুখারী, মুসলিমের কিতাব ছাড়া কোরআন বোঝা যাবে না।
এই কিতাবই হচ্ছে “ছাবি
লিল্লাহ”- বা আল্লাহর পথ। এপথ থেকে বিচ্যুত হলে সে গোমরাহ হয়ে দলে দলে বিভক্ত হবে।
কিভাবে মানুষকে আল্লাহর
পথ থেকে বিচ্যুত করা হয়? কোরান বহির্ভুত হাদীস দিয়ে। একথা আমার নয়, সুরা লোকমানের
৬ নং আয়াতে পরিস্কার বলা আছে;-
"ওয়া মিনান্না-ছি
মাইঁ ইয়াশতারী লাহওয়াল হাদীছিলিইউদিল্লা ‘আন ছাবীলিল্লা-হি বিগাইরি ‘ইলমিওঁ ওয়া
ইয়াত্তাখিযাহা-হুঝুওয়ান উলাইকা লাহুম ‘আযা-বুম মুহীন"
অর্থ
“মানুষের মধ্যে কেহ কেহ
অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করার জন্য অসার বাক্য ক্রয় করে এবং আল্লাহর
প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাদেরই জন্য রয়েছে অবমাননাকর
শাস্তি”(৩১:৬)।
এ আয়াতে লাহুয়াল হাদীস
বলতে যে কোরআন বহির্ভূত বানোয়াট হাদীসকে বোঝানো হয়েছে তা পরের আয়াত থেকে আরো
পরিস্কার।
“ওয়া ইযা-তুতলা-‘আলাইহি
আ-য়া-তুনা-ওয়াল্লা-মুছতাকবিরান কাআল্লাম ইয়াছমা’হাকাআন্না ফী উযু নাইহি ওয়াকরান
ফাবাশশিরহু বি’আযা-বিন আলীম”
অর্থ
“যখন তার নিকট আমার আয়াত
আবৃত্তি করা হয় তখন সে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে এটা শুনতে পায়নি, যেন তার
কর্ণ দুটি বধির; অতএব তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও”-(৩১:৭)।
আল্লাহর প্রদর্শিত পথ
হুদা বা গাইডেন্স হচ্ছে কোরআন। আর এ পথ থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে কিছু মানুষ
কোরআনের সাথে সম্পর্কহীন রীতি-রেওয়াজ, পোশাক-আশাক, দিবস-রজনীর ফজিলত, ফাজায়েলের
বিভিন্ন কিচ্ছা কাহিনী সংগ্রহ করে, যে সবের সত্যতা তারা জানে না।
আবু জাহেল, আবু লাহাবরা
ইব্রাহীম(আঃ) এবং পূর্ববর্তী নবী-রাসুলদের নামে বিভিন্ন হাদীস সংগ্রহ করতো এবং
আল্লাহর কিতাবের বিপরীতে সেসবকে তারা ধর্মের বিধি-বিধান হিসাবে মানতো। নবীজী(সাঃ)
যখন আল্লাহর প্রদর্শিত পথ তথা আল্লাহর কিতাব অনুসরণের কথা বলতো, তখন তারা আল্লাহর
কিতাব নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করতো। “শুধু আল্লাহর কিতাবের অনুসরণ করলে হবে না। নবী
রাসুলদের কথাও মানতে হবে”। আর নবী রাসুলদের হাদীসের নামে তারা নানা বিধি-বিধান
মানতো, যেসব হাদীসের সত্যতা তারা জানতো না।
আল্লাহ তার কিতাবে যা
স্পষ্ট করে বলেছেন তার বাইরে বিভিন্ন নবীদের নামে, সাহাবীদের নামে, আমরা যা শুনছি
সেসবের সত্যতা আমরা জানি না। যাদের কাচ্ছ থেকে শুনছি তারাও জানে না। জানে না যে,
এটাও জানে না। কিন্তু আল্লাহর কিতাব অনুসরণকে ‘আহলে কোরান’ ‘মুতাজিলা’ ইহুদীর
দালাল – ইত্যাদি নানা অশ্লীল আক্রমণ, ঠাট্টা, বিদ্রুপ করে।
এই মুহুর্তে সুরা
লোকমানের তাফসির লিখে ইউটিউবে সার্চ করলে বড় বড় মুফাসসিরে কোরআনদের ওয়াজের ভিডিও
পাবেন, যার সাথে সুরা লোকমানের সামান্যতম কোনো সম্পর্ক নাই। হুজুরকে যদি জিজ্ঞেস
করেন, ‘লোকমান(আঃ)-এর এসব আজগুবি কিচ্ছা কোথায় পেলেন?
ইহুদীদের বিভিন্ন
লোকগাঁথা থেকে ধার করে লোকমান(আঃ), সোলায়মান(আঃ) নাম দিয়ে চালিয়ে দিয়েছে
তাফসিরকারকরা। এসব আজগুবি কিচ্ছা জনপ্রিয়তা পায়, কারণ আল্লাহর বর্ণনা আমাদের পছন্দ
নয়। আমাদের আরব্য রজনীর গল্প পছন্দ। আমরা সুরা লোকমানের ৩৪ টা আয়্যাত উল্টিয়েও
দেখি না।
দেখবেন, আল্লাহর কিতাবের
কথা বললেই একদল লোক বলে, আল্লাহর কিতাবে তো নামাজের নিয়ম নাই, কবর দেয়ার নিয়ম নাই,
তারাবীর নামাজের কথা নাই, দাড়ি-টুপির কথা নাই, হিজাব-নিকাবের মাপজোখ নাই, কেবল
আল্লাহর কিতাব অনুসরণের আয়াত, এমনকি কেবল আল্লাহর কিতাবের আয়াত বা হাদীস কানেও
তোলে না। আল্লাহ এ আয়াতের শেষে একথাই বলছেন;-
“যেন সে এটি শুনতে পায়নি,
যেন তার কর্ণ দুটি বধির। অতএব, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ দাও”।
এরপর আল্লাহ বলছেন;-
“ওয়া লাকাদ
আ-তাইনা-লুকমা-নাল হিকমাতা আনিশকুর লিল্লা-হি ওয়া মাইঁ ইয়াশকুর ফাইন্নামা-ইয়াশকুরু
লিনাফছিহী ওয়ামান কাফারা ফাইন্নাল্লা-হা গানিইয়ুন হামীদ”
অর্থ
“আর আমি তো লুকমানকে
হিকমাত দিয়েছিলাম (এবং বলেছিলাম) যে, ‘আল্লাহর শুকরিয়া আদায় কর। আর যে শুকরিয়া
আদায় করে সে তো নিজের জন্যই শুকরিয়া আদায় করে এবং যে অকৃতজ্ঞ হয় (তার জেনে রাখা
উচিত) আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, প্রশংসিত”-(৩১:১২)।
আল্লাহ হযরত
লোকমান(আঃ)-কে হিকমা দিয়ে বললেন, লোকমান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করো। প্রজ্ঞা হচ্ছে
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কৃতজ্ঞ থাকায়, সন্তুষ্ট থাকায় আমরা নিজেরাই লাভবান হই।
আমাদের শুকরিয়াবনত থাকায় বা কৃতজ্ঞ থাকায় বা না থাকায় আল্লাহর কিছুই যায় আসে না।
কোরআনে আল্লাহ অকৃতজ্ঞ মানুষকে কাফের বলে সম্বোধন করেছেন। অকৃতজ্ঞতার সমার্থক
হিসাবে কুফরী শব্দ ব্যবহার করেছেন। প্রজ্ঞাবান লোকমান(আঃ)-এর সবচেয়ে বড় হিকমা
হচ্ছে কৃতজ্ঞতা।
দুনিয়ার সব সফল আর
প্রজ্ঞাবান মানুষরা আপনাকে কৃতজ্ঞ থাকার পরামর্শ দেবে। যাকিছু আছে তাই নিয়ে চেষ্টা
চালিয়ে যাওয়ার উপদেশ দেবে। যারা ধর্মে বিশ্বাস করে না তারাও নিশ্বাস করে সন্তুষ্ট
আর নিঃশংকচিত্তের চেয়ে বড় কোনো সম্পদ নাই। কৃতজ্ঞতা হচ্ছে আমাদের যা আছে তার হিসেব
করা। আর অকৃতজ্ঞতা হচ্ছে কি কি নাই তার অভিযোগ করা।
কি নাই তার হিসেব করলে
আপনি কোনো উদ্যোগ নিতে পারবেন না। কৃতজ্ঞতা হচ্ছে সন্তুষ্ট থাকা, নির্ভার থাকা।
একই সাথে অহংকারের আবর্জনামুক্ত থাকা।
আমাদের নবীজী(সাঃ) জীবনের
সব রঙ রূপ দেখেছেন। ঘৃণা, ভালোবাসা, সম্মান, অভাব, দারিদ্র, প্রাচুর্য, -
সর্বাবস্থায় তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল, কৃতজ্ঞ, সন্তুষ্ট, নিঃশংক। তিনি বিজয়ে আত্মহারা
হননি, বিপদে বিচলিত হননি।
হযরত লোকমান(আঃ)-কে
আল্লাহ প্রজ্ঞা দিয়েছেন। তো এই প্রজ্ঞাবান মানুষ কি করলেন? তিনি তার ছেলেকে কিছু
উপদেশ দিয়েছেন। সেসব উপদেশ আল্লাহ আমাদের বলছেন সুরা লোকমানে। যদিও আমরা এখন
ইউটিউব সার্চ করলে সুরা লোকমানের তাফসিরের নামে আজগুবি কিচ্ছা কাহিনী শুনবো। চলুন
আমরা আল্লাহর তাফসির শুনিঃ
“ওয়া ইযকা-লা
লুকমা-নুলিবনিহী ওয়া হুওয়া ইয়া’ইজুহূইয়া-বুনাইইয়া লা-তুশরিক বিল্লা-হি ইন্নাশশিরকা
লাজুলমুন ‘আজীম”।
অর্থ
“স্মরণ কর, যখন লুকমান
উপদেশাচ্ছলে তার পুত্রকে বলেছিলঃ হে বৎস! আল্লাহর সাথে কোন শরীক করনা। নিশ্চয়ই
শিরক হচ্ছে চরম যুলম” (৩১:১৩)।
এ আয়াতে আল্লাহর সাথে
শরীক করা মানে আল্লাহর কিতাবের সাথে শরীক করা। আল্লাহর বিধানের সাথে শরীক করা।
বিধান একমাত্র আল্লাহর। সুরা লোকমান জুড়ে আল্লাহর কিতাবের বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে।
কেবল আল্লাহর কিতাব অনুসরণের কথাই বলা হচ্ছে বারবার। সুতরাং, আল্লাহর সাথে শরীক
করা মানে আল্লাহর কিতাবের সাথে আর কোনো কিতাবকে শরীক করা।
আর কি ওয়াজ করলেন,
প্রজ্ঞাবান লোকমান? ভালো করে খেয়াল করুন। এগুলোই হওয়া উচিৎ ছিলো আমাদের ওয়াজের
টপিক।
“ইয়া-বুনাইইয়া
আকিমিসসালা-তা ওয়া’মুর বিলমা’রূফি ওয়ানহা ‘আনিল মুনকারি ওয়াসবির ‘আলা-মাআসা-বাকা
ইন্না যা-লিকা মিন ‘আঝমিল উমূর”।
অর্থ
“হে বৎস! সালাত কায়েম
করবে, ভাল কাজের আদেশ করবে ও মন্দ কাজ হতে নিষেধ করবে এবং আপদে-বিপদে ধৈর্য ধারণ
করবে, এটাইতো দৃঢ় সংকল্পের কাজ”-(৩১:১৭)।
আর কি উপদেশ দিলেন?
“ওয়া ওয়াসসাইনাল ইনছা-না
বিওয়া-লিদাইহি হামালাতহু উম্মুহূওয়াহনান ‘আলাওয়াহনিওঁ ওয়া ফিসা-লুহূফী ‘আ-মাইনি
আনিশকুর লী ওয়ালি ওয়া-লিদাইকা ইলাইইয়াল মাসীর”।
অর্থ
“আমিতো মানুষকে তার
মাতাপিতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। মা সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে
গর্ভে ধারণ করে এবং তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার
মাতাপিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। প্রত্যাবর্তনতো আমারই নিকট” (৩১:১৪)।
আর কি উপদেশ দিচ্ছেন,
প্রজ্ঞাবান লোকমান? ভালো করে খেয়াল করুনঃ
“ওয়ালা-তুসা’ইর খাদ্দাকা
লিন্না-ছি ওয়ালা-তামশি ফিল আরদিমারাহান ইন্নাল্লা-হা লাইউহিব্বুকুল্লা মুখতা-লিন
ফাখূর”।
অর্থ
“অহংকার বশে তুমি মানুষকে
অবজ্ঞা করনা এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ করনা। কারণ আল্লাহ কোন উদ্ধত, অহংকারীকে
পছন্দ করেননা”-(৩১:১৮)
একাজগুলো আল্লাহ পচ্ছন্দ
করেন না। আর যারা আল্লাহর অপছন্দের কাজ করেন তারাই তো পাপী। যারা আল্লাহর পছন্দের
কাজগুলো করেন, তারাই তো পূণ্যবান, তাইনা?
আল্লাহ কি পছন্দ করেন,
লোকমান(আঃ)-এর উপদেশে তাই আছেঃ
“ওয়াকসিদ ফী মাশইকা
ওয়াগদুদমিন সাওতিকা ইন্না আনকারাল আসওয়া-তি লাসাওতুল হামীর”।
অর্থ
“পদচারণায় মধ্য পন্থা
অবলম্বন করবে এবং তোমার কন্ঠস্বর করবে নীচু; স্বরের মধ্যে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা
অপ্রীতিকর”।
সক্রেটিস, এরিস্টটল থেকে
শুরু করে পৃথিবীতে যতো প্রজ্ঞাবান মানুষ এসেছে তারা মানুষকে এই উপদেশগুলোই দিয়েছে।
পৃথিবীর সকল সমাজ সভ্যতায় এই উপদেশগুলো চিরন্তন, শ্বাশ্বত। এমন বৈশিষ্টের মানুষদের
আমরা ভালো মানুষ বলি, কিন্তু আমরা তাদের ভালো মুসলমান বলি না। কারণ আমাদের ইসলামে
এগুলো প্রয়োজনীয় স্তম্ভ নয়।
সালাত কায়েম করা মানে
কোরআন কায়েম করা। সালাতে কোরআন পড়ে শোনানো হয়, যাতে মানুষ কোরআন অনুযায়ী চলে।
সালাতে হাদীস, তাফসির, আজব দুনিয়া, গজব কাহিনী পড়ে শোনানো হয় না। নবীজী(সাঃ)-এর
সাথে যারা সালাত পড়তেন তাদের তিনি কোরআন পড়ে শোনাতেন, যাতে তারা কেবলমাত্র কোরআন
মেনে চলে।
নবীজী(সাঃ) তার সাহাবীদের
সুরা লোকমানের এই আয়াতগুলো পড়ে শোনাতেন, যাতে তারা আল্লাহর বিধানের সাথে শরীক না
করে। সন্তুষ্ট ও কৃতজ্ঞ থাকে। বিপদে-আপদে ধৈর্যধারণ করে। অহংকারবশে মানুষকে অবজ্ঞা
না করে। পৃথিবীতে উদ্ধ্বতভাবে বিচরণ না করে। যাতে চলার ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা
অবলম্বন করে। তাদের কন্ঠস্বর নিচু করে। কিন্তু আমরা ‘কলা কলা রাসুলুল্লাহ’ বলে
ধর্মের নামে বানোয়াট কিচ্ছা শোনাই, যার সাথে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নাই।
প্রজ্ঞাবান লোকমান(আঃ)
তার ছেলেকে উপদেশ দিয়েছেন, ভালো কাজের আদেশ করতে, আর খারাপ কাজ হতে নিষেধ করতে। এই
ভালো কাজ, খারাপ কাজই আমাদের দুনিয়া, আখেরাতের সাফল্য, ব্যর্থতা নির্ধারণ করে।
ধর্ম মানে কর্ম।
পোশাক-আশাক, দাড়ি-মৌছ, এসবকে পৃথিবীর কোনো সমাজে কর্ম বলে বিবেচনা করা হয় না।
দুনিয়া, আখেরাতে আমরা আমাদের কর্মফল ভোগ করবো। টাখনুর নিচে, হাঁটুর উপরে, নাভির
নিচে, বুকের উপরে, ধর্মের নামে প্রচলিত বিতর্ক কোরআনে নাই। কোরআনে আছে, বিপদে
ধৈর্যধারণ করবে।
বিপদে ধৈর্য হারিয়ে মানুষ
চুরি, প্রতারণা – এমন অন্যায়ে ঝুঁকে পড়ে। আবার প্রাচুর্যে মানূষ অহংকারবশতঃ অন্যকে
অবজ্ঞা করে। আল্লাহ পরিস্কার করে বলে দিয়েছেন, আল্লাহ উদ্ধ্বত অহংকারীকে ভালোবাসেন
না। উদ্ধ্বত অহংকারীকে কেউই পছন্দ করে না। এই উদ্ধ্বত অহংকারই হচ্ছে অধর্ম। মধ্যম
পন্থা অবলম্বন করা, নিচু স্বরে কথা বলা বা বিনয়াবনত থাকার নামই হচ্ছে ধর্ম। এর
নামই হচ্ছে প্রজ্ঞা। কিন্তু আমরা প্রজ্ঞার নামে হাদীস, তাফসির, পীর, ফকির, ওঝা,
টিয়াপাখি, কোরআন বহির্ভুত আজগুবি এবাদত নিয়ে মহা ব্যস্ত।
আরবের কাফেররা আল্লাহকে
মানতো। নামাজ পড়তো, রোজা রাখতো, হজ্জ্ব করতো। কিন্তু নবী, রাসুল, ওলি, আওলিয়াদের
নামে কিছু বিধিবিধান বানিয়ে সেগুলোই মানতো। নবীজী(সাঃ) বললেন যে, তোমরা শুধু
আল্লাহর কিতাব মানো। নবী-রাসুল, ওলি-আওলিয়া সবাই আল্লাহর কিতাবই মানতো। এইতো
ঝামেলা বাধলো! “শুধু আল্লাহর কিতাব মানলে হবে নাকি! নবী-রাসুলদেরকেও মানতে হবে,
ওলি-আঊলিয়াদেরকেও মানতে হবে। কতোবড় সাহস! ইব্রাহীম নবীকে মানে না”। - এই কথাগুলো
আপনার কাছে নতুন মনে হতে পারে। কিন্তু একথাগুলোই বলা আছে সুরা লোকমানে।
“ওয়া লাইন ছাআলতাহুম মান
খালাকাছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা লাইয়াকূলুন্নাল্লা-হু কুল্লি হামদুলিল্লা-হি; বাল
আকছারুহুম লা-ইয়া’লামূন”।
অর্থ
“তুমি যদি তাদেরকে
জিজ্ঞেস করঃ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন? তাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবেঃ
আল্লাহ! বলঃ প্রশংসা আল্লাহর। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানেনা”-(৩১:২৫)।
অর্থাৎ তারা আল্লাহকে
মানতো। সমস্যা হচ্ছে শুধু আল্লাহ যা নাজিল করেছে তা মানতে নারাজ।
“ওয়া ইযা-কীলা লাহুমুত
তাবি’উ মাআনঝালাল্লা-হু কা-লূবাল নাত্তাবি’উ মা-ওয়াজাদনা’আলাইহি আ-বাআনা- আওয়া লাও
কা-নাশশাইতা-নুইয়াদ’উহুম ইলা-‘আযাবিছছা’ঈর”।
অর্থ
“তাদেরকে যখন বলা হয় -
আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর তখন তারা বলেঃ বরং আমরা আমাদের
পিতৃপুরুষদেরকে যাতে পেয়েছি তারই অনুসরণ করব। শয়তান যদি তাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির
শাস্তির দিকে আহবান করে তবুও কি?”- (৩১:২১)
আল্লাহ যা নাজিল করেছেন
তার বিপরীতে পিতৃপুরুষদের অনুসরণ যে শয়তানের অনুসরণ তা এ আয়াত থেকে বেশ পরিস্কার।
কোরআনের কথা বললে আমরা হাদীসের পক্ষ নেই, হাদীসের কথা বললে মাযহাবের পক্ষ নেই,
মাযহাবের কথা বললে ওলি-আউলিয়াদের কথাও মানতে হবে! আসলে কোরান, হাদীস, ওলি-আউলিয়া
কিছুই আমরা মানি না। আমরা বাপ-দাদাদের যা করতে দেখেছি, তাই করি। মদীনা, দেওবন্দ
ঘুরে এসে শেষ পর্যন্ত আব্বা যে হাদীস সহীহ বলেছেন, সে হাদীসই সহীহ!
কথিত, বর্ণিত হাদীসকে
হিকমা নাম দিয়ে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে সরিয়ে নিচ্ছি। আল্লাহ ও তার রাসুলের নামে
বাপ-দাদাদের ধর্ম মানি। আমার আব্বা বলেছেন, এ হাদীস সহীহ। তো এ হাদীস অস্বীকার
করলে কাফের। আবার আরেকজনের আব্বা বলেছেন, এ হাদীস জাল। সুতরাং এ হাদীস মানা বেদাত।
এভাবে শিয়া, সুন্নী, আহলে হাদীস, হানাফী, সালাফী, বংশ পরম্পরায় বাপ-দাদার কথাই চলছে।
নিজেদের আলেম, ওস্তাদ বা বাপ-দাদার রীতি রেওয়াজের বাইরে যাওয়া বেশ কঠিন। কিন্তু
আল্লাহ বলেছেনঃ
“ওয়া ইন জা-হাদা-কা
‘আলাআন তুশরিকা বী মা-লাইছা লাকা বিহী ‘ইলমুন
ফালাতুতি’হুমা-ওয়াসা-হিবহুমা-ফিদদুনইয়া-মা’রূফাওঁ ওয়াত্তাবি’ছাবীলা মান আনা-বা
ইলাইইয়া ছুম্মা ইলাইইয়া…”
অর্থ
“তোমার মাতা-পিতা যদি
তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সাথে শরীক করতে যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই তাহলে তুমি
তাদের কথা মানবেনা। তবে পৃথিবীতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে এবং যে বিশুদ্ধ
চিত্তে আমার অভিমুখি হয়েছে তার পথ অবলম্বন কর,…”(৩১:১৫)।
যে কথা আল্লাহর কিতাবে
নাই, সে সম্পর্কে আমাদের কোনো জ্ঞান নাই। অর্থাৎ সেসব কথা নবীজী বলেছেন, এমনটা
আমরা জানিনা। সেসব কোরআন বহির্ভুত বিধিবিধান মানতে পীড়াপীড়ি করলে পিতা-মাতার কথাও
মানতে নিষেধ করেছে। যে বিশুদ্ধ্বচিত্তে আল্লাহর পথে বা কোরান অভিমুখী হয়েছে তার
অনুসরণ করাই প্রজ্ঞা।
হাদীসগ্রন্থে নবীজীর কথা,
কাজ, অনুমোদনের বিবরণ আছে। তাতে নবীজী(সাঃ)-এর প্রজ্ঞাময় উপদেশ আছে। কিন্তু হিকমার
নামে হাদীসকে কোরআনের সমকক্ষ ধর্মীয় বিধান বানানো শিরক। ‘কোরআনে থাকা আর হাদীসে
থাকা একই কথা’ বা ‘হাদীসও কোরআনের মতোই ওহি’, এমন কথা কোনো হাদীসের কিতাবেও নাই।
প্রসিদ্ধ হাদীসগ্রন্থেও কেবল কোরআনেরই বিজ্ঞাপন। নবীজী(সাঃ) কেবল কোরআন অনুসরণ
করতে বলেছেন।
হাদীস অনুযায়ীও হাদীসকে
কোরআনের মানদন্ডে যাচ্চাই করে চর্চা করতে হবে। অর্থাৎ কোরআনে না থাকলে হাদীসের
ভিত্তিতে কোনো শর্ত আরোপ করা যাবে না। কারণ নবীজীর বক্তব্যকে সত্যায়নের হাদীস
শাস্ত্রীয় পদ্ধতি অবৈজ্ঞানিক, অবাস্তব, অসম্পূর্ণ এবং অনৈসলামিক। কেনো অবৈজ্ঞানিক,
কেনো অবাস্তব, কেনো অসম্পূর্ণ এবং কেনো অনৈসলামিক?- (বিস্তারিত পাবেন সজল রোশন
রচিত “রিলিজিয়াস মাইন্ডসেট – নবীর প্রজ্ঞা” বইয়ে)।
আমরা বিভিন্ন ওয়াজে নবী,
রাসুল, সাহাবী, তাবেঈ, ওলি-আউলিয়াদের যেসব মুখরোচক গল্প শুনি, এগুলো বেশিরভাগই
হাদীস তো দূরের কথা, তাফসির, সীরাত ও নির্ভরযোগ্য ইতিহাসের বইয়েও নাই। বিভিন্ন
পুঁথি, গ্রাম্য লোকগাঁথা, বানোয়াট কিচ্ছা-কাহিনী, ইশপের গল্পে বিখ্যাত নবী-রাসুল,
সাহাবী, তাবেঈ, ওলি-আউলিয়াদের নাম লাগিয়ে সেসবকে ধর্মের মোড়কে বাজারজাত করা হচ্ছে।
ইশপের গল্পে কোনো সমস্যা
নাই, যতোক্ষণ সেটা একটা গল্প এবং তাতে একটা ভালো উপদেশ থাকে। কিন্তু সেটাকে ধর্ম
বানিয়ে যখন মানূষের জীবন দুর্বিসহ করে তোলা হয়, তখন সে ধর্ম আর জীবন বিধান থাকে
না, মরণব্যাধি হয়ে দাঁড়ায়। তাই সবকিছুর আগে মূল ধর্মগ্রন্থ কোরান বুঝে পড়ুন। তারপর
প্রসিদ্ধ হাদীস, সীরাত, ইসলামের ইতিহাস সবই পড়ুন।
যিনি কোরান বুঝে পড়েছেন,
তিনি রবীন্দ্রনাথ পড়েও সমৃদ্ধ হবেন। যিনি কোরান পড়েননি, সে বেলায় বেলায় গোমরাহ
হবে। কারণ সে গলায় কলসী আটকে যাওয়া চিতাবাঘের মতো দিকভ্রান্ত, আতংকিত এবং অসহায়।
সে কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না। কথায় কথায় তার ইমান নষ্ট হয়। কেউ তাকে সাহায্য
করতে আসলেও সে সন্দেহ করে,- আক্রমণ করে। আর যারা আল্লাহর অনুমোদিত অফিসিয়াল জিপিএস
‘কিতাবিল হাকীম’ বা প্রজ্ঞাময় কিতাব অনুসরণ করে তারাই অনুগ্রহপ্রাপ্ত ও
প্রজ্ঞাবান। আল্লাহর কিতাব পড়ুন, বুঝে পড়ুন। ধন্যবাদ।
(ইউটিউব থেকে সজল রোশণের
ভিডিও অবলম্বনে)
(এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে
সজল রোশন রচিত বই “রিলিজিয়াস মাইন্ডসেট - নবীর প্রজ্ঞা” বই পড়ুন)