মাদ্রাসায় শিশু ধর্ষণ/বলাৎকার - আলেম সমাজ নিশ্চুপ


মাদ্রাসায় শিশু ধর্ষণ/বলাৎকার - আলেম সমাজ নিশ্চুপ!

 

মাদ্রাসায় শিশু ধর্ষণ/বলাৎকার একটি মহামারী রোগের নাম! অথচ এব্যাপারে আমাদের দেশের আলেম সমাজ টু শব্দটি করে না। তবুও মানুষ নিজে বেহেশ্তে যাওয়ার লোভে শিশুপুত্রকে মাদ্রাসায় পাঠায়। নিজে শত গোনাহর কাজ করবে, একটা ছেড়ে আরো ৩টা বিয়ে করবে। অথচ “একজন হাফেজ ১০ জনকে সুপারিশ করে বেহেশ্তে নিতে পারবে” মাদ্রাসা পরিচালকদের এমন একটি বানোয়াট হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী শিশুপূত্রের নিরাপত্তার দিকে না তাকিয়ে কঠিন এক জীবনের দিকে ঠেকে দেবে। বাড়িতে অভিভাবকের চাপ, মাদ্রাসায় পশু প্রবৃত্তির শিক্ষকদের নির্যাতন ইত্যাদি সইতে না পেরে কতো শিশু যে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পালিয়ে ছিন্নমূল জীবন বরণ করেছে, সে হিসেব রাখে কয়জন? অবশেষে তারাই একটা অপরাধ ছক্র গড়ে তোলে!

 

সরকারের নিয়ন্ত্রণহীন কি পরিমান ভূইফোর মাদ্রাসা যে আনাচে কানাচে গড়ে উঠেছে তার হিসেব নাই। এতিমখানার নাম করে আবাসিক ছাত্র ভর্তি করে তাদের পাঠায় লিল্লাহ আদায় করে আনতে। অথচ তাদের কেউই এতিম না। কেনো বাবা? তোমাকে এই পন্থা অবলম্বন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানো লাগবে কেনো? শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলে ছাত্র বেতন ও সরকারি অনুদানে। তুমি সেই পথে না গিয়ে ছেলেদের দিয়ে লিল্লাহ আদায় করে প্রতিষ্ঠান চালাও। বাকিটা দিয়ে নিজের পকেট ভারী করো।

 

একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানোর মতো যোগ্যতা আছে কিনা সেসব বিষয়ে কোনো নিয়ম নীতি না থাকায় ধর্মের দোহাই দিয়ে যাচ্ছেতাই করে বেড়াচ্ছে সমাজের এসব অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত লোকেরা।

 

কোরআন মুখস্থ করা ভালো কাজ। কোরআন নাজিল হওয়ার পর থেকেই এ প্রথা চালু আছে। তা না হলে হয়তো হদীসের মতো কোরআনের আয়াতও রদ-বদল করে ফেলতো উমাইয়া, আব্বাসীয়রা। কিন্তু কোরআন কি? কোরআন আমরা কেনো পড়ছি বা মুখস্থ করছি, কোরআনে কি আছে তার অর্থ জেনে এবং মেনে না চললে কি লাভ?

 

কয়েকদিন আগে কক্সবাজারে এক হেফজ বিভাগের ছাত্র সেই মাদ্রাসারই ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ধরা পরার ভয়ে তাকে মেরেই ফেলে। ঐ মাদ্রাসারই শিক্ষক ধর্ষকের বাবা আবার ফতোয়া দেয়, ‘সে মেয়ের জান্নাতি মরণ হয়েছে’! ধর্ষণ করে মেরে ফেলে জান্নাতের সার্টিফিকেট দিচ্ছে! কতোবড় মুনাফেক!

 

ধর্ষণ/বলাৎকারের শিকার পটুয়াখালীর আরেক মাদ্রাসা ছাত্রের অমানবিকভাবে জীবন দিতে হলো। মাদ্রাসা শিক্ষকের লালসার শিকার হয়ে আল রাফি (১২) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রের মত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার ২৫ আগস্ট রাতে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।

এমন ঘটনা অহরহই ঘটছে। কোনোটা প্রকাশ্যে আসছে, কোনোটা আসছে না।

 

খবরে প্রকাশ,

পটুয়াখলীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাতঁরকাঠী ইউনিয়নের বড় ডালিমা “মদিনাতুল উলুম কাওমিয়া হাফজিয়া ও নুরানী কিন্ডার গার্টেন মাদ্রাসা ও এতিমখানায়” হেফজ পড়তো রাফি (মাদ্রাসার নামের বাহার দেখে মনে হয় একের মধ্যেই সবকিছু!)। উপজলার নাজিরপুর বড়ডালিমা গ্রামের খালিফা বাড়ির রেজাউল আকনের ছেলে সে। মাদ্রাসায় থেকেই লেখাপড়া করতো।

 

মাদ্রাসারটির পরিচালক ও শিক্ষক সেলিম গাজী ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ বিভিন্ন কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে শিশু রাফিকে বলাৎকার, অর্থাৎ পায়ূপথ ব্যবহার করে ধর্ষণ করে আসছিলো। কিছুদিন আগে শিশুটি পেটের ব্যথাসহ নানান শারীরিক সমস্যার কথা জানায় তার বাবা-মাকে। এরপর তারা শিশুটিক বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা জানান, শিশু রাফির মলদ্বারে ক্যান্সার হয়েছে এবং তা তার রক্তে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

এরপর তাকে ভর্তি করা হয় জাতীয় ক্যান্সার গবেষনা ইনস্টিটিউট হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় শুক্রবার রা্তে মারা যায় শিশুটি।

 

শিশু রাফির বাবা রেজাউল আকন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার সন্তানটিকে দিলাম হাফেজ হতে আর সে হয়ে গেলো লাশ। আমি এই হত্যার বিচাই চাই।

 

আমাদের দেশের এক বয়োবৃদ্ধ ‘বুজুর্গানে’ আলেম ফতোয়া দিয়েছিলেন, “গার্মেন্টস কারখানা হলো জেনাহর কারখানা”! আরেক ‘পীর ছাহেব’ সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্য করলেন। অথচ গীবত জিনা ব্যাভিচারের চেয়েও বড় গোনাহর কাজ।

কিন্তু মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতন, ধর্ষণের ব্যাপারে তারা মুখে কলুপ এটে থাকে।

 

আল্লাহ আমাদের হেদায়েত করুন। আমীন।

 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url