গরীবের দিনলিপি (১৪-০৩-২০২৩)




দৈনন্দিন স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম কানুন মেনে চলতে বড়ছেলে একটি ঘড়ি কিনে দিয়েছে। কিন্তু সমস্যা হল, বাসায় থাকলে ঘড়ি হাতে থাকে না। বাইরে গেলেও অনেক সময় হাতে দিতে মনে থাকে না। তাই ঘড়িতে শতভাগ রেকর্ড থাকে না। অপরদিকে মোবাইল অবশ্যই হাতে কিংবা পকেটে থাকে। তাই ছোট ছেলে একটা অ্যাপ ইন্সটল করে দিয়েছে, নাম 'ফিট'। প্রতিদিন কয় স্টেপ বা কতো কিলোমিটার হাঁটলাম, কতটুকু ক্যালরি ক্ষয় হলো সব রেকর্ড থাকে। 

তো সময় সুযোগ বুঝে কিংবা মন মর্জি অনুযায়ী মাঝেমধ্যে হাঁটতে বেরোই। শীত আসার পরে তা গ্যাপ পড়েছিল। গত কিছুদিন যাবত শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দেয়ায় আবার টুকটাক হাঁটাহাঁটি শুরু করলাম। গতকাল হেঁটে এসে এ্যাপের দিকে লক্ষ্য করে দেখলাম, সাপ্তাহিক যে টার্গেট দেয়া থাকে তার নিচে লেখা আছে, "যদি বেশিদিন বাঁচতে চাও, ভালো ঘুমাতে চাও এবং মন প্রফুল্ল রাখতে চাও তাহলে এই সাপ্তাহিক টার্গেট তোমাকে পূরণ করতে হবে"। 


বাঁচার ইচ্ছে কার না আছে, তাই ভাবলাম হাঁটাহাঁটি ভালোভাবে চালু রাখি। এ্যাপের টার্গেট পূরণ করার চেষ্টা করি। দৈনিক মালিবাগ রেলগেটের দিকে যাই। ভাঙ্গাচোরা রাস্তা, হাটার জায়গা নাই। তার উপর রিক্সার ধাক্কাধাক্কি। এই কথা চিন্তা করে ভাবলাম, আজ যাবো অন্য পথে; বাসা টু রমনা পার্ক এন্ড ব্যাক। 

বাসা আবুজর গিফারী কলেজের কাছে। শুরু করলাম হাঁটা। মৌচাক মোড়ে বাস রিকশার ভিড়ে রাস্তা ক্রস করাই মুশকিল। কোনমতে পা বাঁচিয়ে ক্রস করে সিদ্ধেশ্বরী রোডে ঢুকলাম। ঢুকেই দেখি রিক্সা এবং গাড়ির লম্বা লাইন(ছবি সংযুক্ত)।   



গতকাল তেজগাঁ বস্তিতে আগুন লেগে পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস-এর গাড়ি ঢোকার সুযোগ না থাকায় আগুন নেভাতে ব্যাঘাত ঘটে। সে তো গেল বস্তি এলাকা। এই অভিজাত এলাকায় যদি এরকম হয়, রিক্সা এবং গাড়ির ভিড়ে পথচারীও যেখানে চলতে পারছে না, সেখানে বিপদসংকুল কোনো এম্বুলেন্স কিংবা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যে প্রবেশই করতে পারবে না তা সংযুক্ত ভিডিও দেখলেই বোঝা যাবে। 

হাঁটতে হাঁটতে সিদ্ধেশ্বরী পার হয়ে ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের সামনে গিয়ে একটু যানবাহন কম দেখলাম। তবে স্কুলের গেটে ভাসমান চটপটির দোকান এবং চটপটি প্রেমীদের রমরমা কারবার দেখতে পেলাম। বেইলি রোডে উঠে একটু হাঁটার সুযোগ পেলাম। ভালো ফুটপাত আছে। হাঁটার পরিবেশও ভালো। 


চৌরাস্তা পার হয়ে অফিসার্স ক্লাব এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স এর মাঝে দেখতে পেলাম একটি নতুন ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। ছাদ ঢালাইয়ের জন্য উপরে রড ঝালাই চলছে। তার ফুলকি ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিচে পড়ছে। নিচে ধারে কাছে কোনো দাহ্য প্রদার্থ না থাকায় হয়তো যথাযথ সুরক্ষামুলক ব্যবস্থা নেয়নি। 


২৩-২৪ বছর পর রমনা পার্কে ঢুকলাম। পার্কের পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে বলে মনে হলো। ফিরে আসার সময় সোজা বেইলি রোড ধরলাম। বেইলি রোডে আশেপাশের দোকানের ক্রেতা এবং পথচারীর ভিড় থাকলেও হাঁটতে অসুবিধা হয়নি। পরিবেশ ভালো লাগলো। ভালো ফুটপাত থাকায় হেঁটে সাচ্ছন্দ পাওয়া যায়।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url